প্রস্তাবিত নতুন বেতন কাঠামোকে ‘বৈষম্যমূলক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। অবিলম্বে এ বেতন কাঠামো বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এর শিক্ষক সমিতি।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী মনে করেন, ‘ড. ফরাসউদ্দিন বেতন কমিশন এবং সচিব কমিটি সমতার নীতি ও সুবিধাবঞ্চিতদের ব্যাপারগুলোকে গুরুত্ব দেননি। নিজেদের অপরিহার্য এবং বাকিদের পরিত্যাজ্য নীতি অনুসরণ করে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সুবিধাজনক একটি কাঠামো সরকারকে দিয়ে পাস করিয়ে নিতে চাচ্ছেন। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দেয়ার সুপারিশ করে ড. ফরাসউদ্দিন বেতন কমিশন এবং সচিব কমিটি সুবিধাবঞ্চিতদের উপর চরম অবিচার করেছেন।’শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক কবির হোসেন বলেন, প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সার্কভুক্ত অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেতন কম। পর্যাপ্ত বেতন ও সুযোগ-সুবিধা না দিলে মেধাবীরা এ পেশায় আসবে না, যা দেশের মানবসম্পদ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটাবে।তিনি মনে করেন, নতুন বেতন কাঠামো হলে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ার কথা সেখানে প্রস্তাবিত কাঠামোয় বেতন আরও কমিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অসম্মান করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, `ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ন করার মতো প্রস্তাব রেখেছে। অন্যদিকে সচিব কমিটি নিজেদের সুবিধাদি নিশ্চিতের মাধ্যমে বৈষম্যের ব্যবস্থা করেছে। সপ্তম জাতীয় বেতন কাঠামো থেকে নতুন কাঠামোতে শিক্ষকদের অবস্থানকে দুই ধাপ নামিয়ে আনা হয়েছে। এটা শুধু অধিকারকেই ক্ষুণ্ন করেনি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবমাননাও করেছে। উচ্চপদস্থ একটি গোষ্ঠী নিজেদের সুবিধার জন্য শিক্ষকদের সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।`মাকসুদ কামাল আরো বলেন, `বেতন ও চাকরি কমিশন ১৬টি বেতন স্কেল প্রস্তাব করলেও সচিব কমিটি তা গ্রহণ না করে আগের মতো ২০টি গ্রেড রেখে দিয়েছে। গ্রেডের বাইরে পদায়িত সচিব ও সিনিয়র সচিবের নতুন পদ সৃষ্টি আমাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা জ্যেষ্ঠ সচিবদের মতো হওয়াই বাঞ্ছনীয়। অর্থাৎ সিলেকশন গ্রেডে অধ্যাপকদের পদমর্যাদা হবে সিনিয়র সচিবদের সমতুল্য। অনুরূপভাবে অধ্যাপকরা পদায়িত সচিবদের সমতুল্য মর্যাদা, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।`এদিকে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য নতুন পে স্কেলের ঘোষণা আসছে শিগগিরই। চূড়ান্ত হওয়া এই নতুন স্কেল অনুযায়ী আগামী জুলাই মাস থেকেই তারা বেতন পাবেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক।সময় বাড়ার সাথে সাথে নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে। এ নিয়ে শিগগিরই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতি।# টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ফেরত দেবেন প্রধানমন্ত্রী! # নতুন বেতন নির্ধারণে অভিন্ন নীতিমালার দাবি# নতুন পে স্কেলে বেতন জুলাই থেকে# অর্থমন্ত্রীর কাছে নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ# নববর্ষ ভাতা পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা# পে স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দেওয়ায় ক্ষোভ# সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়েই চূড়ান্ত পে স্কেল# দুই ধাপে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করবে সরকার# চূড়ান্ত হলো অষ্টম বেতন কাঠামো # নতুন পে স্কেলের ওপর সচিব কমিটির সুপারিশ চূড়ান্ত# প্রতিবেদনের পর পে-কমিশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত : মুহিত # বরাদ্দ বাড়ছে বেতন-ভাতা খাতে# ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ# অবশেষে চূড়ান্ত হলো সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামো# পে-স্কেল : মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছে সচিব কমিটির সুপারিশগণমাধ্যম অবলম্বনে/এসএইচএস/এএ
Advertisement