সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন সরকারি কর্মচারীরা। তারা মনে করছেন, বেতন কাঠামো যখন চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় যাবে, প্রধানমন্ত্রী টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করবেন। কারণ, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল না থাকলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা আর্থিক দিক থেকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এটি প্রধানমন্ত্রীর নিশ্চয়ই বিবেচনায় রয়েছে। যেকোনো সময় নতুন বেতন কাঠামো মন্ত্রিসভায় যাবে বলে সূত্র জানিয়েছে। এর আগে, গত ১৩ মে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন পে কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর সচিব কমিটির পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন গ্রহণ করে বলেছিলেন, ফরাসউদ্দিনের প্রস্তাব অনুযায়ী বাদ দেওয়া হয়েছে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড। এতে এক শ্রেণির কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তবে যারা নতুন চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন, তারা লাভবান হবেন।অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে। কারণ ক্যাডার সার্ভিস ছাড়া আর কারো চাকরিতেই নিয়মিত পদোন্নতি হয় না। আবার ক্যাডার সার্ভিসেও সবার নিয়মিত পদোন্নতি হয় না। একমাত্র প্রশাসন ক্যাডারেই পদ না থাকলেও ইনসিটো করার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।রোববার সচিবালয়ে একজন সচিব পদের আমলার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। তিনি বলেন, হয়তো ধারণা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার হিসেবে এটি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত দিবেন। এদিকে সূত্র বলছে, বিষয়টি মন্ত্রিসভা বৈঠকে আলোচনা করা হবে।এদিকে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন খোদ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এটা করা হলে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তা চিহ্নিত করেছেন।সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে জনবল সংখ্যা ২১ লাখ। তাদের মধ্যে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীই বেশি। এরপরই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর সংখ্যা। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির এসব কর্মচারীর বেশির ভাগেরই পদোন্নতির সুযোগ নেই। তারা যে পদে চাকরিতে প্রবেশ করেন সেই পদ থেকেই বিদায় নেন। প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা তৃতীয় শ্রেণির। সারা দেশে তিন লাখের বেশি সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। চাকরিজীবনে তাদের কোনো পদোন্নতি নেই। পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি না করে তাদের সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল কাটা হলে সেটা হবে অমানবিক। সারা দেশে প্রায় এক লাখ স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবারকল্যাণ সহকারী রয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণির এসব পদে কোনো পদোন্নতি নেই। তাদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড কেড়ে নেওয়ার খবরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।১৯৮১ সালে ক্যাডার সার্ভিসে টাইম স্কেল দেওয়া হলেও নন-ক্যাডারে দেওয়া হয় ১৯৮৩ সালে। ১৯৭৭ সাল থেকে সিলেকশন গ্রেড চালু হয়।পুলিশের কনস্টেবল ও হাবিলদার, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবির সৈনিক, কারারক্ষী এবং ফায়ারম্যানের পদগুলোও তৃতীয় শ্রেণিভুক্ত। তারা দীর্ঘদিন একই পদে চাকরি করেন। অনেকে হয়তো চাকরি শেষ হওয়ার কিছু আগে একটি পদোন্নতি পান। অনেকে কখনোই পদোন্নতি পান না। ফলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দেওয়া হলে তাদের মারাত্মক আর্থিক ক্ষতি হবে।# নতুন বেতন নির্ধারণে অভিন্ন নীতিমালার দাবি# নতুন পে স্কেলে বেতন জুলাই থেকে# অর্থমন্ত্রীর কাছে নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ# নববর্ষ ভাতা পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা# পে স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দেওয়ায় ক্ষোভ# সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়েই চূড়ান্ত পে স্কেল# দুই ধাপে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করবে সরকার# চূড়ান্ত হলো অষ্টম বেতন কাঠামো # নতুন পে স্কেলের ওপর সচিব কমিটির সুপারিশ চূড়ান্ত# প্রতিবেদনের পর পে-কমিশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত : মুহিত # বরাদ্দ বাড়ছে বেতন-ভাতা খাতে# ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ# অবশেষে চূড়ান্ত হলো সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামো# পে-স্কেল : মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছে সচিব কমিটির সুপারিশএসএ/বিএ/আরআইপি
Advertisement