হজের তৃতীয় রুকন : তাওয়াফে জিয়ারাত


প্রকাশিত: ০৯:০২ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

হজের রুকনসমূহের মধ্যে তৃতীয় রুকন হচ্ছে তাওয়াফে জিয়ারাত। যদিও হজের কার্যাদির মধ্যে ওকুফে আরাফা বা আরাফায় অবস্থান করা প্রধানতম রুকন, কিন্তু সে তো মাত্র একদিন। হজ ও ওমরায় সবচাইতে বেশি যে কাজটি করা হয়ে থাকে, তা হচ্ছে এই তাওয়াফ। তাওয়াফের রয়েছে অনেক ফজিলত। এ বিষয়ে জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-

তাওয়াফ কি?
তাওয়াফ অর্থ চক্কর দেয়া। ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহর ঘর কা’বার চার পার্শ্বে চক্কর দেয়া। হজের তিনটি ফরজের একটি হলো তাওয়াফে জিয়ারাত। অর্থাৎ আরাফাহ, মুজদালিফা ও মিনা থেকে হজের বিভিন্ন হুকুম পালন করার পর মসজিদে হারামে এসে কা’বা তথা বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করা। এই তাওয়াফ ব্যতিত হজ হবে না।

তাওয়াফের ফজিলত
>>
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হজরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে সে একটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে। (ইবনে মাজা)

>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হজরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা বাইতুল্লাহর ওপর প্রতিদিন একশত বিশটি রহমত নাজিল করেন, তন্মধ্যে ষাটটি কেবল তাওয়াফকারীদের ওপর, চল্লিশটি সেখানে নামাজ আদায়কারীদের ওপর এবং অবশিষ্ট বিশটি ঐ সব লোকের ওপর যারা বাইতুল্লাহ দর্শনে রত থাকে।

>> অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তাওয়াফের প্রতিটি কদমে একটি গুনাহ মাফ হয়, একটি নেকি লাভ হয় এবং একটি মর্যাদা বৃদ্ধি হয়।

তাওয়াফের নিয়ম

হাজরে আসওয়াদের প্রান্ত থেকে হাজরে আসওয়াদমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নামাজের তাকবিরে তাহরিমা উচ্চারণকালীন অবস্থার মতো দু’হাত তুলে এ দুআটি পড়তে হয়।

উচ্চারণ- বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লিল্লাহিল হামদু ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসুলিল্লাহি, আল্লাহুম্মা ইমানান বিকা, ওয়া তাসদিকান বিকিতাবিকা ওয়া ওয়াফিআন বিআ’হদিকা ওয়া ইত্তিবাআন লিসুন্নাতি নাবিয়্যিকা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

তাওয়াফকালে কা’বা শরিফের সম্মুখস্থ ঘেরাও দেয়া ‘হাতিম’ নামক অংশটিও প্রদক্ষিণ করতে হয়। এর ফাঁক দিয়ে মানে ভিতরে দিয়ে গিয়ে তাওয়াফ করলে তাওয়াফ পূর্ণ হবে না, কেননা হাতিমও কা’বার অন্তর্ভূক্ত।

তাওয়াফের নিয়্যাত
আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদতুত তাওয়াফা বাইতিকাল হারাম, ফায়াচ্ছিরহু-লি, ওয়া তাক্বাব্বাল-হু-মিন্নি। অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি বাইতুল্লাহ তাওয়াফের নিয়্যাত করলাম। সুতরাং তাওয়াফকে আমাদের জন্য সহজ করে দিন এবং আমাদের তাওয়াফকে কবুল করে নিন।

তাওয়াফের ওয়াজিব সমূহ
১. শরীর পাক-সাফ রাখা, ওজু করা। মহিলাদের হায়েজ নেফাছ অবস্থায় তাওয়াফ করা জায়েজ নাই।
২. ছতর ঠিক রাখা। অর্থাৎ যেটুকু ঢাকা প্রত্যেক পুরুষ-নারীর জন্য ফরজ।
৩. ‘হাতীমে কা’বার বাইরে থেকে তাওয়াফ করা।
৪. পায়ে হেঁটে তাওয়াফ করা। অম ব্যক্তি খাটিয়ার মাধ্যমে তাওয়াফ করতে পারেন।
৫. হাজরে আস্ওয়াদ থেকে শুরু করে ডানদিকে অর্থাৎ বাইতুল্লাহর দরজার দিকে তাওয়াফ শুরু করা।
৬. এক নাগাড়ে বিরতিহীন ভাবে সাতবার চক্কর দিয়ে তাওয়াফ পূর্ণ করা।
৭. সাত চক্করে এক তাওয়াফ, এটা পূর্ণ হলেই তাওয়াফের নামাজ পড়া। উপরোক্ত বিষয়গুলোর কোনো একটি ছুটে গেলে আবার তাওয়াফ করতে হবে। অন্যথায় দম বা কুরবানি করা ওয়াজিব। (মুয়াল্লিমুল হুজ্জাজ)

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। ওমরা ও হজের ধারাবাহিক আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

# হজের প্রথম রুকন ইহরাম ও করণীয়
# হজ ও ওমরা পালনকারীদের তালবিয়া
# হজের প্রস্তুতিই ওমরা পালন
# ইহরাম বাধলে যা করা নিষেধ

এমএমএস/এমএস

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।