হজের প্রথম রুকন ইহরাম ও করণীয়


প্রকাশিত: ০৭:২৫ এএম, ২৭ আগস্ট ২০১৫

ইহরাম কি? হজে কেন ইহরাম বাধতে হয়? ইহরাম কেন হজের প্রথম রুকন? এর সহজ ও সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছে নামাজের জন্য যেমন তাকবিরে তাহরিমার মাধ্যমে নিয়্যাত বাধতে হয়, ঠিক হজের জন্য ইহরাম বাধতে হয়। এটি হজের আনুষ্ঠানিক নিয়্যাতও বটে। যার মাধ্যমে অবৈধ সব কর্মকাণ্ড তো বটেই, সাধারণ সময়ের বৈধ কাজও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ইহরাম সম্পর্কিত বিষয়গুলো জাগো নিউজের পাঠকদের জ্ঞাতার্থে তুলে ধরা হলো-

ইহরাম পূর্বে করণীয়
>>
ইহরাম বাধার পূর্বেই গোঁফ, বগল ও নাভীর নিচের ক্ষৌর কার্যাদি সম্পন্ন করা, নখ কাটা, গোসল করে পাক সাফ হয়ে যাওয়া আবশ্যক। এমনকি ঋতুবর্তী মহিলাদেরও এ সময় গোসল করা মুস্তাহাব। সুগন্ধি ব্যবহার করাও মুস্তাহাব। হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি নিজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইহরাম বাধার পূর্বে তাঁকে সুগন্ধি মাখিয়ে দিতাম। (বুখারী, মসুলিম, হিদায়া)

>> গোসল সম্ভব না হলে ওযু করতে হবে। চুল কাটার দরকার না হলে চিরুনি দিয়ে চুলগুলো পরিপাটি করে নিবে।

>> ইহরামের নিয়তে দু’রাকাআত নামাজ আদায় করতে হয়। যার প্রথম রাকাআতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে সূরা কাফিরুন ও দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা ইখলাস মিলানো মুস্তাহাব।

ইহরামের কাপড় যেভাবে পড়বে

>> সেলাইবিহীন দুটি নতুন কাপড় পড়বে। একটি লুঙ্গির মতো অন্যটি চাদরের মতো।

>> চাদরটি পড়ার সময় বাম কাধের ওপর থেকে পিছন দিকে ঘুরিয়ে ডান বগলের নিচে সামনে এনে বুকের দিয়ে আবার বাম কাধের ওপর দিয়ে পিছনে ফেলবে।

>> মহিলারা শালিন পোশাক পড়বে।

>> কাপড় পড়ার সময় ক্বিবলামুখী হয়ে বসতে হয়।

ইহরাম বাধা : ইহরামের নিয়্যাত করবে। হজ ও ওমরা পালন যেন সহজ হয়, সে দোয়া করবে।

ওমরার নিয়্যাত

উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইন্নি ঊরিদুল ওমরাতা ফাইয়াসসিরহু লি ও তাক্বাব্বালহু মিন্নি।

হজের নিয়্যাত

উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইন্নি ঊরিদুল হাজ্জা ফাইয়াসসিরহু লি ও তাক্বাব্বালহু মিন্নি।

হজ ও ওমরার নিয়্যাত

উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইন্নি ঊরিদুল হাজ্জা ওয়াল ওমরাতা ফাইয়াসসিরহুমা লি ও তাক্বাব্বালহুমা মিন্নি। মুখে নিয়্যতের কথাগুলো বলা উত্তম তবে জরুরি নয়।

ইহরাম পরবর্তী করণীয় : ইহরাম বাধার সঙ্গে সঙ্গেই উচ্চস্বরে চার ভাগে তিনবার তালবিয়া পাঠ করবেন-

তালবিয়া এই-
i. لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ
ii. لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ
iii. اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ
iv. لاَ شَرِيْكَ لَكَ

তালবিয়ার উচ্চারণ-
১. লাব্বাঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক,
২. লাব্বাঈক, লা-শারীকা-লাকা লাব্বাঈক,
৩. ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি`মাতা লাকা ওয়াল-মুলক,
৪. লা শারীকালাক।"

ইহরাম বাধার পর দোয়া : তালবিয়া পাঠ করে ইহরাম বাধার হজ ও ওমরাকারীগণ এই দোয়াটি পড়বে।

উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রাদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আঊজুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান্নারি

অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসুন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।

পরিশেষ...

হে আল্লাহ হজে গমনকারী সবাইকে হজ ও ওমরায় ইহরামের কার্যাবলী সুন্দরভাবে পালন করার তাওফিক দিন। সমগ্র মুসলিম উম্মাহর প্রতি হজের মাসের বকরত নাজিল করুন। সবাইকে হজ ও ওমরা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

অবলম্বনে : কুরআন, বুখারি, মুসলিম, হিদায়া; বিস্তারিত জানতে পড়ুন- দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম, ইফা

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। ওমরা ও হজের ধারাবাহিক আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।