শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় আমজাদ খান চৌধুরী সমাহিত
শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন আমজাদ খান চৌধুরী। বুধবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে সমাহিত করা হল দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প পরিবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠা ও প্রধান নির্বাহী মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরীকে।
এর আগে বেলা সোয়া দুইটায় বিজয় সরণির সামরিক জাদুঘরে শেষ জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বৃষ্টিতে ভিজে জানাযায় অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, সাবেক সেনা প্রধান ইকবাল করীম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নাহ শাহ, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের কর্মীসহ অন্যান্যরা।
এ সময় বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান আমজাদ খান চৌধুরীর দুই ছেলে আযহার চৌধুরী ও আহসান খান চৌধুরী।
সকাল থেকে শুরু হওয়া মুষল ধারের বৃষ্টি উপক্ষো করে আমজাদ খান চৌধুরীর শুভাকাঙ্ক্ষীরা সামরিক জাদুঘরে সমবেত হন। জানাযা শেষে আমজাদ খান চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি বনানীর সামরিক করবস্থানের দিকে রওনা হয়। করবস্থানে নেয়ার পর সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা মরদেহটি গ্রহণ করেন এবং সমাহিত করার আগে সামরিক কায়দা সম্পন্ন করেন।
পড়ে শোনানো হয় আমজাদ খান চৌধুরীর কর্মময় জীবন বৃত্তান্ত। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার এবং সশস্ত্র সালাম। এরপর এক মিনিটের নীরবতা পালন করেন সবাই।
সমাহিত কালে সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারাও ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন সাবেক সেনা প্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমানসহ আমজাদ খান চৌধুরীর পরিবার ও প্রাণ আরএফএল গ্রুপের কর্মীরা।
শেষ শ্রদ্ধা
জানাযার আগে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহটি দুপুর ১২টার কিছু পরে সামরিক জাদুঘরে নিয়ে রাখা হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, সাবেক সেনা প্রধান ইকবাল করীম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নাহ শাহসহ প্রাণ আরএফএল গ্রুপের কর্মীরা অংশ নেন।
এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, আমজাদ খান চৌধুরী দেশের বেসরকারি খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নাম। তিনি প্রাণ-আরএফএল প্রতিষ্ঠান করে অর্থনীতিতে অবদান রেখেছেন। তবে তাঁর মৃত্যুর পরও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ টিকে থাকবে। সেই ব্যবস্থাপনা তিনি রেখে গেছেন।
মুহিত আরো বলেন, কৃষিজাত পণ্যের ব্যবসায় তিনি যে অবদান রেখে গেছেন সেটি মনে রাখতে হবে। তবে আমজাদ খান চৌধুরী শুধু ব্যবসা করতেন না, আমাদের অনেক সময় পরামর্শও দিয়েছেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আমজাদ খান চৌধুরী সেনা সদস্য ছিলেন। সেখান থেকে অবসর নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে সেখানেও সফলতা দেখিয়ে গেছেন। অর্থনীতিতে তাঁর অবদান জাতি ভুলবে না।
হান্নান শাহ বলেন, যুদ্ধ পরিবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সুসংহত করতে আমজাদ খান চৌধুরীর অবদান রয়েছে। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করেছেন তিনি।
গার্ড অব অনার
জানাযা শেষে মরদেহটি সামরিক জাদুঘরে আনা হয়। তখনও চলছিল থেমে থেমে বৃষ্টি। এর মধ্যে প্রিয় মানুষের মুখটি শেষ বারের মতো দেখতে সামরিক কবরস্থানে যান আমজাদ খান চৌধুরীর স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। তারা শেষ বারের মতো কফিনে শুয়ে থাকা মুখটি দেখেন।
এরপর মরদেহটি সমাহিত করতে কবরের কাছে নিয়ে যান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দেন গার্ড অব ওনার। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। বাবার মরদেহটি কবরে নামান দুই ছেলে আযহার চৌধুরী এবং আহসান খান চৌধুরী। আর এভাবেই চির নিদ্রায় সমাহিত হলেন আমজাদ খান চৌধুরী।
আমজাদ খান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ জুলাই মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
# আমজাদ খান চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত
# প্রাণ-আরএফএল সেন্টারে আমজাদ খান চৌধুরীর মরদেহ
# ঘোড়াশালে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত প্রাণ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা
# আমজাদ খান চৌধুরীর জানাজা সামরিক জাদুঘর মাঠে
# ‘বাবার স্বপ্ন অনুযায়ী সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়’
# সেনাবাহিনীকে সুদৃঢ় করেছেন আমজাদ খান চৌধুরী : হান্নান শাহ্
এসএ/এমএম/এসআই/এআর/আরএস/এসএইচএস/এআরএস/আরআই