বিএনপি নেত্রী ইফতার পার্টিতে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি নেত্রী ইফতার পার্টিতে বসে কতগুলো মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন, মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন। তিনি পুলিশ বাহিনীর ওপর দোষারোপ করে বলছেন যে, সব পেট্রলবোমা পুলিশ মেরেছে, অগ্নিসংযোগ পুলিশ করেছে। রমজান মাসে বিএনপির নেত্রীর এই মিথ্যাচার শুনে তাজ্জব হয়ে গেছি।
জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, এটা বাংলাদেশের সকল মানুষ জানে বিএনপি জামায়াত মিলে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে। তার ফলে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। মানুষকে খুন করা হয়েছে। নিজের দোষটা ঢাকছেন। এভাবে মিথ্যা কথা বলা তাদের অভ্যাস। নিজের অপরাধ অন্যের ওপর চাপাতে চাচ্ছেন তিনি। এখন রমজান মাসে বসে মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা আল্লাহই বিচার করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে, এখন তা ২২ দশমিক ৪ ভাগে। হত দরিদ্রের হারও ৭ দশমিক ৯ ভাগে নেমে এসেছে। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নতি হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অথনৈতিকভাবে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ পুরস্কার পাচ্ছে সেই সময় আমরা দেখেছি কিছু মিথ্যাচার শুরু হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক যে আমরা যখন অর্থনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি সেই সময় আমরা দেখেছি কিভাবে এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার জুলুম করা হয়েছিল। সেই ২০১৩ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা কত প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। কত মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এরপর আবার ২০১৫ সালে জানুয়ারি থেকে শুরু হলো প্রায় ৯৬ দিন এদেশের মানুষ সেই অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমরা দেখলাম যে বিএনপি নেত্রী দীর্ঘদিন ইফতার পার্টি করে সেই ইফতার পার্টিতে বসে কতগুলো মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে, মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে। সবথেকে দুঃখজনক তিনি অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে করেনতো করেন, যে পুলিশ বাহিনী দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছে এই রোজার সময়। তারা দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দোকান পার্ট ব্যবসা বানিজ্য সুষ্ঠুভাবে চলে তার ব্যবস্থা করা এবং সারাদিন যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে তাদের ওপরে দোষারোপ করা শুরু করেছে।
দোষারোপটা কী? এটা বাংলাদেশের সকল মানুষ জানে বিএনপি-জামায়াত শিবির মিলে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে। তার ফলে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। মানুষকে খুন করা হয়েছে। অথচ তিনি বলে দিলেন যে, সব পেট্রলবোমা পুলিশ মেরেছে, অগ্নি সংযোগ পুলিশ করেছে। মিথ্যাচার এই রমজান মাসে বিএনপির নেত্রী উনার যে মিথ্যাচার এটা শুনে তাজ্জব হয়ে গেছি।
সংযমের মাসে পবিত্র মাসে এভাবে মিথ্যা কথা। প্রধানমন্ত্রী কিছু ছবি প্রদর্শন করে বলেন, এরা কারা এরা বিএনপির কর্মী, জামায়াত শিবিরের কর্মী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে মিথ্যাচার বিএনপি নেত্রী রমজান মাসে বসে করছে। কিভাবে তিনি এভাবে মিথ্যাচার করতে পারেন। পুলিশকে দুষছেন। অর্থাৎ নিজের দোষটা ঢাকছে। আমার মনে পড়ছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর এই খালেদা জিয়া বলেছিল এবং তার দলের লোকেরা আমি নাকি নিজেই ভ্যানেটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে নিজেই মেরেছি মনে আমি যেন সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম। এই কথা পার্লামেন্টে বসেও তারা বলেছে। এভাবে মিথ্যা কথা বলা তাদের অভ্যাস। নিজের অপরাধ অন্যের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। এতকিছু তাণ্ডবের পরেও আমরা জনগনের জানমালের নিরাপত্তায় আমাদের পুলিশ -বিজিবি-র্যাব আনসার বিডিপিসহ প্রত্যেকে গোয়েন্দা সংস্থা সবসময় সক্রিয় ছিল এবং দেশের সাধারণ জনগন তাদের মোকাবেলা করেছে। একথা তিনি ভুলে গেছেন। ৯৩ দিন তিনি বসে থাকেন অফিসে। আওয়ামী লীগ সরকর না হটিয়ে তিনি নাকি ঘরেই ফিরবেন না। কিন্তু উনাকে ঘরেই ফিরতে হয়েছে কোটে হাজিরা দিতে হয়েছে। এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে। সেই বিচারে কোর্টে তিনি যাবেনইনা। কারণ জানেই যে মামলা হলেই উনি ধরা খেয়ে যাবেন। কিভাবে দুর্নীতি লুটপাট করেছেন। লাঠিসোটা নিয়ে তিনি কোর্টে হাজির হতে চান। ৯৩ দিন পরে যখন দেখলেন যে কিছুই হলোনা তখন বাধ্য হয়ে কোটে গিয়ে আত্মসমর্পন করেছেন। নিজের বাড়িতেও ফিরে গেছেন। এখন রমজান মাসে বসে মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা আল্লাহই বিচার করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আরেকটা কথা বলছেন গ্রামে নাকি খাবার নাই। একটা দিন মজুর যে কামাই করে তা দিয়ে ১০ থেকে ১২ কেজি চাল কিনতে পারে। হতদরিদ্রদের মাঝে আমরা বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করি। খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করেছি। খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। কাজেই মানুষ গ্রামে খাবার পায়না এই ধরণের মিথ্যাচার । গ্রামে নাকি কাজ নাই। কাজ যদি না থাকে দিন মজুরের মূল্য এতো বাড়লো কেন। এরকম বহু কথা তিনি বলেছেন। বাংলাদেশে এখন আমরা দারিদ্রের হার হ্রাস করেছি। ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে। কর্মসংস্থানের আমরা ব্যাপক ব্যবস্থা করেছি। আমরা কিন্তু বসে নেই। আমরা বসে থাকলে এদেশের এতো উন্নতি হতো না।
তিনি বলেন, কেউ যদি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলে যায়। তাও আবার মানব পাচারকারী। মালয়েশিয়ায় অবৈধ শ্রমিক ছিল। আমরা আলোচনা করে বৈধ করেছি। সৌদি আরবে সাড়ে আট লাখ মানুষ অবৈধ ছিল। আমি কূটনৈতিক সাফল্যের মাধ্যমে তাদেরকে বৈধতা দিতে পেরেছি। আমরা দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আর সেই সুফল মানুষ ভোগ করে যাচ্ছে। দারিদ্র বিমোচন কঠিন কাজ আমরা করে যাচ্ছি। সফলতা অর্জন করে যাচ্ছি। দারিদ্র হার কমেছে, মূল্যস্ফীতি কমেছে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি।
তিনি বলেন, যে বাজেট আমরা দিয়েছি চারগুণ বেশি দিয়েছি। এখন দেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। আগামী তিন বছরের মধ্যে হবে মধ্যম আয়ের দেশ হবে।
# জ্বালাও-পোড়াওকারীদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে : প্রধানমন্ত্রী
এইচএস/এসএইচএস/আরআই