জ্বালাও-পোড়াওকারীদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে : প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত: ১০:৫৬ এএম, ০৮ জুলাই ২০১৫

বাংলাদেশ নিম্নআয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ-এ উন্নীত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বুধবার সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। তার আগে প্রস্তাবের ওপর সংসদে সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতসহ সংসদ সদস্যরা অংশ নেন।

কার্য প্রণালী বিধি ১৪৭ (১)-এর আওতায় প্রস্তাব সাধারণ উত্থাপন করেন টাঙ্গাইল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সংসদের অভিমত এই যে, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও গতিশীল নেতৃত্ব এবং তার সরকারের দেশ ও জাতির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা সুশাসনের মাধ্যমে বাস্তবায়নের ফলশ্রুতি হিসেবে বাংলাদেশ নিম্নআয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ-এ উন্নীত হওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হোক।’

সর্বশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা জ্বালাও পোড়াও করে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করেছে জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, জ্বালাও পোড়াও না হলে আমরা জিডিপি ৭ ভাগে উন্নীত করতে পারতাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশাল জনংখ্যার দেশ। দেশের উন্নয়ন করতে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। আমরা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থাকতে চাইনা। উচ্চ অর্থনীতিতে যেতে চাই। উন্নত দেশে পরিণত হতে চাই। ধীরে ধীরে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মধ্যম আয়ের দেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন করেছি, আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলতে চাইনা। সেজন্য দেশবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।

দেশ নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার এই কৃত্বিত্ব সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই কৃতিত্ব জনগণের। তারা সহযোগিতা না করলে এটা সম্ভব হতোনা।

প্রস্তাব উত্থাপনকারী মো. আব্দুর রাজ্জাক আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বছর থেকে বাংলাদেশ নিম্নআয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ এ উন্নীত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের পদ্ধতি অনুযায়ী, মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৪৬ মার্কিন ডলার থেকে শুরু করে ৪ হাজার ১২৫ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হলে তা নিম্নমধ্যম আয়ের এবং ৪ হাজার ১২৬ ডলার থেকে শুরু করে ১২ হাজার ৭৩৬ ডলার হলে ওই আয়ের দেশগুলো মধ্যম আয়ের দেশ বলা হয়।

বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় গত তিন বছর ধরে বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ১ হাজার ৪৫ ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত রিপোর্টে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ৩ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ জাতিসংঘের মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হবে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমাদের অগ্রযাত্রা এখানেই থেমে থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর কোনো অপতৎপরতাই এ অগ্রযাত্রা থামাতে পারবে না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে চলেছে। সাম্প্রতিক এ অর্জন তারই স্বীকৃতিস্বরূপ। এই ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে চলে আসবে বলেও জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা নির্মাণে যে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছিলো তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে চলেছে। সাম্প্রতিক অর্জন তারই স্বীকৃতি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া কোনোদিনই অর্থনীতির এমন অভাবনীয় সাফল্য অর্জন সম্ভব হতো না। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

আলোচনায় আরো অংশ নেন সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক আলী আশরাফ, আব্দুল মতিন খসরু, আব্দুস শহীদ, ড. হাছান মাহমৃুদ, মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা. দীপুমনি, আব্দুল মান্নান প্রমুখ। পরে ধন্যবাদ প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এইচএস/এসএইচএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।