তাওয়াফে ইযতিবা ও রমল
হজ ও ওমরায় সবচেয়ে বেশি যে ইবাদত বেশি করা হয় তাই হচ্ছে তাওয়াফ। এ জন্য তাওয়াফের ফজিলতও বেশি। আল্লাহ তাআলা তাওয়াফকারীর জন্য প্রতিদিন ষাটটি করে রহমত নির্ধারণ করেছেন। জাগো নিউজে তাওয়াফের ধারাবাহিক লিখা তুলে ধরা হচ্ছে। আজ তুলে ধরা হলো তাওয়াফে ইযতিবা ও রমল কি ও কেন।
ইযতিবা : ইহরামের গায়ের চাদরকে ডান বগলের নিচে দিয়ে চাদরের উভয় মাথাকে বাম কাঁধের ওপরে ফেলানো। এটা করা সুন্নাত। যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত।
রমল : তাওয়াফের সময় মুজাহিদের মতো বীরদর্পে দুই কাঁধ দুলিয়ে দ্রুতপায়ে চলা।
রমল করার কারণ কি?
মক্কার মুশরিকরা যখন বলাবলি করতে থাকে যে, ইয়াসরিবের (মদিনার) আবহাওয়া মুসলমানদেরকে দুর্বল ও রুগ্ন করে ফেলেছে। মুশরিকদের এই অপবাদ মিথ্যা প্রমাণিত করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই নির্দেশ দেন। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এবং পরেও এ বিধান অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।
জানা থাকা ভাল : নফল তাওয়াফ অর্থাৎ হজ ও ওমরার নিয়্যাতে নয়, বাইতুল্লায় নামাজের সময় বা আগে পরে তাওয়াফ করার সময় রমল বা ইযতিবার প্রয়োজন নেই।
তাওয়াফের শর্ত : তাওয়াফের জন্য ৬টি শর্ত রয়েছে। ৩টি শর্ত সর্বাবস্থায়-
ক. মুসলমান হওয়া
খ. নিয়্যাত করা ও
গ. তাওয়াফ মাসজিদুল হারামের ভিতরে হওয়া।
আর বাকি ৩টি হজের মধ্যে তাওয়াফে জিয়ারাতেই শুধু প্রযোজ্য-
ক. নির্দিষ্ট সময়ে হওয়া
খ. তাওয়াফ ইহরামের পরে হওয়া ও
গ. উকুফে আরাফার পর হওয়া।
তাওয়াফে যে কাজগুলো সুন্নাত
১. হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা। সম্ভব না হলে উভয় হাত উঠিয়ে ইশারা করা ও বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলা।
২. ইযতিবা করা।
৩. প্রথম তিন চক্কর রমল করা।
৪. পরবর্তী চক্করগুলোতে রমল না করে ধীরেসুস্থে তাওয়াফ করা।
৫. সাঈ শুরুর পূর্বে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন (ইসতিলাম) করা।
৬. হাজরে আসওয়াদের সম্মুখে দাঁড়িয়ে তাকবির বলার সময় উভয় হাত তাকবিরে তাহরিমা সময়ের মতো ওপরে ওঠানো।
৭. হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করা।
৮. তাওয়াফ শুরু করার প্রক্কালে হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করা।
৯. বিরতি না দিয়ে তাওয়াফের চক্করগুলো সম্পন্ন করা।
১০. শরীর এবং পরিধেয় বস্ত্র নাজাসাতে হাকিকি থেকে পবিত্র হওয়া।
পরিশেষে...
হজ ও ওমরা আদায়ে তাওয়াফ যথাযথভাবে করা একান্ত আবশ্যক। হজের উদ্দেশ্যে আগত সব হাজিকে আল্লাহ তাআলা সঠিকভাবে তাওয়াফ করার তাওফিক দান করুন। তাওয়াফের জন্য নির্ধারিত বরকতময় রহমত লাভে ধন্য হওয়ার তাওফিক দান করুন। সমস্ত বনি আদমকে হজ, ওমরা, তাওয়াফসহ হজের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ দেখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। ওমরা ও হজের ধারাবাহিক আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
# হজ সফরে মৃত্যুতেও আখিরাতে মহাসফলতা
# হজের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
# হজের প্রস্তুতিই ওমরা পালন
এমএমএস/আরআইপি