হজ সফরে মৃত্যুতেও আখিরাতে মহাসফলতা


প্রকাশিত: ১১:৩১ এএম, ২৩ আগস্ট ২০১৫

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কাকে কি পরিমাণ মর্যাদা বা সম্মান দান করবেন তা তিনিই ভালো জানেন। তার পরেও আমরা কুরআন এবং হাদিসে অগণিত অসংখ্য আমলের মর্যাদা বা সম্মানের কথা জেনে থাকি। আর এর প্রকাশ হচ্ছে দুনিয়াতে মানুষকে আল্লাহর কাজে বেশি বেশি এগিয়ে আসার কুরআন-হাদিস মোতাবেক জীবন গঠন করার তাগিদও বটে। চলছে হজের মৌসুম। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত হতে মুসলিম মিল্লাত হজে আসা শুরু করেছে। এই হজের সফরে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর অনেক নেক বান্দাকে তাঁর দরবারে তুলে নেবেন। যারা আর স্ত্রী-পুত্র-ছেলে-সন্তান-আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফিরে আসবে না। চলে যাবেন সবচেয়ে বেশি আপনজনের কাছে। হজের উদ্দেশ্যে যাওয়া হাজিদের মৃত্যুর ঘোষণা হাদিসে কী এসেছে তা জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-


নামাজের জান্য যেমন নির্ধারিত সময় আছে, ঠিক তেমনি হজের জন্যও রয়েছে নির্ধারিত সময়। এ নির্ধারিত সময়ে হজ করার উদ্দেশ্যে যারা রওয়ানা হবে সেখানে মারা যাবে স্থানভেদে তাদের দাফন সেখানেই হবে। অর্থাৎ মক্কায় অবস্থানকালে মারা গেলে মক্কায় আর মদীনায় অবস্থানকালে মারা গেলে মদীনায় দাফন হবে। হজকালীন সময়ে মৃত ব্যক্তিকে তার দেশে ফেরত পাঠানোর হয় না। কারণ হজে গমণের পূর্বেই হজকালীন সময়ে মৃত্যু বরণ করলে দাফনের ঘোষণাপত্র নেয়া হয়ে থাকে। হজের গমনে মৃত্যু ব্যক্তির জন্য রয়েছে মহান পুরস্কারের ঘোষণা। যে ব্যক্তি কিয়ামাতের দিন তলবিয়া পাঠরত অবস্থায় হাশরের ময়দানে ওঠবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,  জনৈক হজে গমনে ব্যক্তিকে ইহরাম অবস্থায় তার সওয়ারি ভূপাতিতের কারণে তার মৃত্যু হয়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তাকে বরই পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও এবং তার ইহরামের দুই কাপড় দিয়েই তাকে কাফন পরাও। তবে তার মাথা ও চেহারা না ঢেকে উম্মুক্ত রাখ। কেননা, কিয়ামত দিবসে সে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উত্থিত হবে। (মুসলিম)

তাছাড়া অনেক হাজির আবেদন এমন শুনেছি যে, হে আল্লাহ! আমার মৃত্যুটি যেন মক্কায় হয় বা মদীনায় হয়। আমি যেন মদীনার জান্নাতুল বাকীতে বা মক্কার জান্নাতুল মোয়াল্লায় শেষ শয়ন করতে পারি। আল্লাহ অনেকের আবেদন মঞ্জুর করেন। আর মৃত্যুর জন্য প্রত্যেক হজে গমণকারীই মানসিকভাবে প্রস্তত থাকেন। এবং ইহরামের কাপড় পরিধান করে এর স্বীকৃতিও দিয়ে থাকেন। এভাবে হজের সফরে বেরিয়ে মারা গেলে তার আমলনামায় হজের সওয়াব লেখা হয়।

/
হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর মারা যাবে, সে ব্যক্তির জন্য কিয়ামত পর্যন্ত হজের ছাওয়াব লেখা হতে থাকবে। আবার যে ব্যক্তি ওমরার উদ্দেশ্যে বের হয়ে মারা যাবে, তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত ওমরার ছাওয়াব লেখা হতে থাকবে।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)

প্রতিটি মুমিন জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই থাকে আল্লাহ নৈকট্য অর্জন করে পকালের মুক্তি। তাই হজ বা ওমরা মুহূর্তে যদি কেউ ইন্তেকাল করে তাহলে তারা সারা জীবনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হবার দ্বারপ্রান্তে সে পৌছে গেল। আর এ মৃত্যুতে মুমিনের জন্য দুঃখিত হওয়ার বা কোনো কষ্ট পাওয়ার কারণ নেই। কারণ দয়াময় আল্লাহ মেহেরবান কিয়ামত পর্যন্ত তাকে হজ বা ওমরার ছাওয়াবের ভাগিদার করে একান্ত আপন করে নিবেন। আল্লাহ আমাদের এ পরম সৌভাগ্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। ওমরা ও হজের ধারাবাহিক আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।