ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

মক্কায় হজের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ (পর্ব-২)

প্রকাশিত: ১১:২৩ এএম, ১২ আগস্ট ২০১৫

বিশ্ব মুসলিমের মিলনমেলা হজ। হজের সময় প্রতিটি স্থানের প্রান্তরে-প্রান্তরে মানুষের আবেগ-অনুভূতিগুলো কাজ করে মাওলার প্রেমে পাগল হয়ে। মানুষ নিজের গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারে। হজের স্মৃতি বিজড়িত স্থান পরিদর্শন করে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমে আত্মপোলব্ধি করতে পারে। মনের সব চাওয়া-পাওয়া পূরণে অতিদ্রুত এগিয়ে যেতে পারেন। সে লক্ষ্যেই মক্কার যে স্থানে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি এবং যে স্থানগুলো হজ ও ওমরার রুকনের সঙ্গে জড়িত। স্মৃতি বিজড়িত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের শুরু হতে ওফাত পর্যন্ত।

জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য প্রথম পর্বের পর আজ তার দ্বিতীয় পর্ব তুলে ধরা হলো-

দ্বিতীয় পর্বে যা থাকছে-

১২. আরাফাতের ময়দান-
arafat moydan

নবনির্মিত মক্কার উত্তরে চতুর্দিক থেকে দুই কিলোমিটারের সুবিশাল প্রান্তর হচ্ছে আরাফাতের ময়দান। এই ময়দানেই ৯ জিলহজ্জ হাজিগণ অকুফে (অবস্থান) আরাফাহ করেন, যা হজের অন্যতম ফরজ বা রোকন। আরাফাতের ময়দানের সম্পূর্ণ অংশই মসজিদে হারামের বাইরে অবস্থিত। যা সবুজ বৃক্ষ আর শীতল ফোয়ারার পানি দ্বারা পরিবেষ্টিত। এর পাশেই অবস্থিত উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয় নগরী। আরাফার ময়দান থেকেই হজের খুতবা দেয়া হয়।

১৩. মুজদালিফার ময়দান-
আরাফাত ও মিনার মাঝামাঝি একটি জায়গার নাম মুজদালিফা। ৯ জিলহজ হাজিগণ মুজদালিফায় রাত্রি যাপন করেন। এখানে হাজিগণ মাগরিব ও এশার নামাজ একসাথে আদায় করেন। মুজদালিফার পূর্ব সীমানার পিলারে আল্লাহর কুদরতে হজরত আদম ও হজরত হাওয়া আলাইহিস সালাম একসঙ্গে প্রথম মিলিত হয়েছেন বলে রেওয়ায়েত আছে।  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, মুজদালিফায় রাত্রি যাপনকারীকে আল্লাহ রহমতের চাদরে ঢেকে নেন।

১৪. মিনার ময়দান-
mina

মক্কার সামান্য দূরে অবস্থিত মিনা আরাফার মতোই আরেকটি বিশাল ময়দান। সাদা রঙের স্থায়ী তাঁবু দিয়ে সাজানো ময়দানটিকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় গম্বুজ আর গম্বুজে সাজানো। হাজিদের জন্য ৮ জিলহজ জোহরের আগে মিনায় পৌঁছে জোহর থেকে পরের দিন ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া সুন্নত।  জিলহজের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখ এই তিনদিন মিনায় অবস্থান করা সুন্নত।

১৫. মিনার মসজিদে খায়েফ-
এটা মিনার সবচেয়ে বড় মসিজদ। যা মিনার উত্তর দিকে যাব পাহাড়ের পাশে অবস্থিত।

১৬. কংকর মারার স্থান-
miner

মিনায় স্থাপিত কংকর মারার স্থানে ১১ জিলহজ সকালে হাজিদেরকে মুজদালিফা থেকে ফিরে আসতে হয়।

১৭. জাবালে নূর তথা হেরা গুহা-
hera guha

ঐতিহাসিক আরেকটি স্থানের নাম গারে হেরা। ইসলামিক নিদর্শনের মধ্যে এটি অনন্য একটি স্থান। এখানে বসেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধ্যান করতেন। ধ্যানমগ্ন অবস্থায় সর্বপ্রথম ওহি নাজিল হয়। এখানেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবুওয়ত লাভ করেন। যে কারণে এ পাহাড় ও গুহাটির মর্যদা অনেক বেশি। হেরা গুহা মক্কার উত্তর দিকে অবস্থিত। মসজিদে হারাম থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। এর উচ্চতা ২০০ মিটার এবং এটি একটি খাড়া পাহাড়। মক্কার এটিই সর্বোচ্চ পাহাড়। এ গুহাতে একসঙ্গে ৫ জন লোক বসতে পারেন। সেখানেই একটি পাথরে খোদাই করে লেখা আছে সুরা আলাকের আয়াতগুলো।

১৮. সাওর পাহাড়-
মসজিদুল হারাম থেকে ছয় কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। হিজরতের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রথম এই পাহাড়ের একটি গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। সাওর পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় চার হাজার ফুট।

১৯. আবু কুবাইস পাহাড়-
মক্কার পূর্ব প্রান্তে এই পাহাড় অবস্থিত। এই পাহাড়ের কাছে একটি উপত্যকায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিন বছর সামাজিক ও অর্থনৈতিক বয়কটের অবস্থায় চরম কষ্টের মধ্যে ছিলেন। হজরত নূহ আলাইহিস সালাম মহাপ্লাবনের সময় হাজরে আসওয়াদকে এই পাহাড়ে রেখেছিলেন। এই পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আঙুলের ইশারায় চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করেন।

২০. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাড়ি-
 মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৪৪০ গজ পূর্বে অবস্থিত। এখানে রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম হয়। এই বাডড়টি এখন পাঠাগার।

২১. জান্নাতুল মুয়াল্লা-
jannatul

মাসজিদুল হারাম থেকে উত্তর দিকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে এই গোরস্থান। এখানে হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহু, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাতা আমিনা, দাদা আব্দুল মোত্তালিব, চাচা আবু তালেব, পুত্র কাসেমসহ অনেক সাহাবির রওজা অবস্থিত।

উল্লেখিত স্থানগুলোতে মানুষ তার মনে কথা খুলে বলে মাওলাকে। মাওলাও তার অতি আদরের সৃষ্টি মানুষের কথা শুনে আপন মনে। মাপ করে দেয় তার প্রিয় সৃষ্টিকে। আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ করে এক মুসলিম অপর মুসলিম ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে। যার শিক্ষা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে আল্লাহ অসীম রহমত বরকত ও কুদরতে। এই অনুগ্রহ যেন পৃথিবীতে অটুট থাকে। আল্লাহ আমদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাগোনিউজ২৪ডটকমের সঙ্গে থাকুন। হজের স্থানগুলোর পরিচিতি ও তাৎপর্যসহ ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

# মক্কায় হজের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ (পর্ব-১)

এমএমএস/এসএইচএস/পিআর