রক্তরক্ষণ আপাতত বন্ধ : কেসপারের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল


প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০১৫

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন সাড়ে চার বছর বয়সের শিশু সাদমান কেসপারের শরীরের রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ হয়েছে।

বুধবার বিকেল ৩টার পর থেকে কোনো রক্তক্ষরণ হয়নি তার। তবে রক্তক্ষরণ আর হবে না এমনটি এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ভর্তির পর মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে জরুরিভাবে যে ৮/৯ ধরনের রক্তপরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছিল সেগুলোর কোনোটিতেই অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েনি। বর্তমানে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বিএসএমএমইউতে কেসপারের চিকিৎসার্থে গঠিত ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড প্রধান অধ্যাপক ডা. শফিকুল হক বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জাগো  নিউজকে জানান, শিশু কেসপারের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। বুধবার বিকেলের পর থেকে তার শরীর থেকে আর রক্তক্ষরণ হয়নি। তাকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্রামে রাখা হয়েছে। মুখে কোনো খাবার দেয়া হচ্ছে না। প্রয়োজনানুসারে স্যালাইনের মাধ্যমে খাবারের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।

তিনি  জানান, কেসপার শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল। দুর্বলতা কাটিয়ে না উঠা পর্যন্ত তাকে প্রয়োজনীয় অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোথাও নিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। রক্তপাতের সঠিক কারণ জানতে পর্যায়ক্রমে তার আরও পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে।

রক্তদানের মাধ্যমে শিশু কেসপারকে বাঁচাতে আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও তার বাবা অপুর বন্ধুরা পাশে দাঁড়িয়েছেন।

জানা গেছে, বুধবার বিএসএমএমইউতে ভর্তির পর থেকে বহু  ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই রক্তদান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।  

শাহরিয়ার নামে কেসপারের বাবা অপুর এক বন্ধু ছোটভাই পরিচয়ে জাগো নিউজকে জানান, চিকিৎসকরা কেসপারের একটি সিটিস্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু শরীর দুর্বল থাকায় তা এখন করা সম্ভব হচ্ছে না। বুধবার বিকেলের পর থেকে আর রক্তপাত না হওয়ায় সকলেই কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।

উল্লেখ্য, দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করে কেসপারের পায়ুপথ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসক দেখানো হয়। কিন্তু রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় গত ১৯ আগস্ট তাকে চট্টগ্রামের রয়েল হাসপাতালের শিশুসার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. জাফরুল হান্নানের অধীনে ভর্তি করানো হয়। ২৫ আগস্ট তার পেটে  অস্ত্রোপচার হয়।

অস্ত্রোপচারের পর ৩৬ ঘণ্টা তার রক্তপাত বন্ধ থাকলেও আবার রক্তপাত শুরু হয়। পরে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করলেও কোথা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা নির্ণয় করতে পারেননি ডাক্তাররা। ফলে বুধবার তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।

তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শফিকুল হককে প্রধান করে আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন, পেডিয়েট্র্রিক গ্যাস্ট্রোএন্ট্রিওলজির বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বজলুল করিম, পেডিয়েট্রিক হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. চৌধুরী ইয়াকুব জামাল ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ টি এম আতিকুর রহমান, শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. কাজী জহিরুল হাসান ও ডা. শাহিনুর।

# অনবরত রক্তক্ষরণ : জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শিশু সাদমান কেসপার
# কেসপারের দেহে সফল অস্ত্রোপচার : আইসিইউ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন!
# শারীরিক অবস্থার অবনতি : কেসপারকে আইসিইউতে স্থানান্তর
# বিএসএমএমইউর আইসিইউতে চিকিৎসা না পেয়েই কেসপারের মৃত্যু!

এমইউ/একে/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।