মানিকগঞ্জ

অবৈধ ফার্মেসির ছড়াছড়ি, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

মো. সজল আলী মো. সজল আলী মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও অলিগলিতে গড়ে উঠেছে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি বা ওষুধের দোকান। এসব দোকানে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, যৌন উত্তেজক, ঘুমের ওষুধসহ নিষিদ্ধ, নকল ও নিম্নমানের নানা ধরনের ওষুধ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। ফলে রোগীরা এসব ওষুধ সেবন করে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে ক্রেতারাও প্রতারণা ও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

ওষুধ প্রশাসন বলছে, অবৈধ ফার্মেসি ও ভেজাল ওষুধ বাজারে সরবরাহ বন্ধে সকলকে সচেতন হতে হবে।

অবৈধ ফার্মেসির ছড়াছড়ি, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

রাস্তার মোড়ে মোড়ে গড়ে ওঠা এসব লাইসেন্সবিহীন শত শত ফার্মেসি থেকে প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা নিবন্ধিত চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে কাছের এসব ফার্মেসিতে গিয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। এতে তারা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।

জেলা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ জেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত ফার্মেসির সংখ্যা ১৬৪০টি। এর মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে লাইসেন্স নবায়ন করেছে মাত্র ৪১৯টি। অর্থাৎ জেলায় নবায়নবিহীন ফার্মেসির সংখ্যা এখন ১,২২১টি। এছাড়া আরও অসংখ্য ফার্মেসি রয়েছে যাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। গত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে মাত্র ২৩টি ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হয়েছে।

অবৈধ ফার্মেসির ছড়াছড়ি, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

আরও পড়ুন-
বিপর্যয়ের মাঝে দীপ্তি ছড়িয়েছে সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ
ভাসানী সেতুতে মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে রেলিংয়ের ফাঁকা স্থান
ভূমি জটিলতায় ভোগান্তি কাটে না শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কে

ড্রাগ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের জানান, নিয়ম অনুযায়ী অনিবন্ধিত ও মেয়াদোত্তীর্ণ ফার্মেসি মালিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন নবায়ন করার জন্য তাগিদ দেওয়া হবে। এছাড়া যেসব ফার্মেসিতে ভেজাল ওষুধ বিক্রি হয় তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে প্রতিবেদককে ওষুধ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

মানিকগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ রায় জানান, সকল প্রকার ভেজাল খাদ্য মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। আর ওষুধ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা ভেজাল হলে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। কাজেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচিত প্রত্যেকটি ফার্মেসিকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে নিয়মিত মনিটরিং করা। এই বিষয়ে জনবল নেই বা কম এটা বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

অবৈধ ফার্মেসির ছড়াছড়ি, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

ওষুধ প্রশাসন মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুলতানা রিফাত ফেরদৌস বলেন, নকল ও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি, যাতে ভোক্তারা প্রতারিত না হয় এবং সন্দেহজনক ভেজাল ওষুধের স্যাম্পল সংগ্রহ করে সেগুলো ল্যাবে পাঠানো হয়। ভেজাল ওষুধ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অনেক সময় ওষুধ রাখার ক্ষেত্রে তাপমাত্রাজনিত কারণে ওষুধের গুণগত মান নষ্ট হয়। সেদিকে ফার্মেসি মালিকদের সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া অবৈধ ফার্মেসি ও ভেজাল ওষুধ বাজারে সরবরাহ বন্ধে সকলকে সচেতন হতে হবে।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।