জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২৩ উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন ও সড়ক নিরাপত্তায় সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন (নিসচা)।
Advertisement
রোববার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলনে নিরাপদ সড়ক চাই এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
সংবাদ সন্মেলনে তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বহুমাত্রিক হওয়ায় সরকারের একার পক্ষে তা নিরসন করা সম্ভব নয়। এজন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকার এরই মধ্যে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণয়ন করেছে। কিন্তু এই আইনে কিছু কার্যকর দিক থাকলেও এর অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আইনে গতিসীমা লঙ্ঘনে শাস্তির বিধান বলা থাকলেও গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার আচরণগত পাঁচটি মূল ঝুঁকি যেমন- অতিরিক্ত গতি, স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট ও সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, শিশুদের জন্য নিরাপদ আসনের অনুপস্থিতি বিবেচনায় রেখে সার্বিকভাবে সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আলোকে যথাযথ আইন ও বিধিমালা বাস্তবায়িত হলে সড়ক নিরাপদ হয়ে উঠবে।
Advertisement
আরও পড়ুন>> ফেনীতে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, উন্নত দেশগুলো নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ তথা বহুমুখী পরিবহন ব্যবস্থা, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী ও দুর্ঘটনা পরবর্তী ব্যবস্থাপনার আলোকে নিজেদের আইনি ও নীতি কাঠামো প্রণয়ন করে যথাযথ বাস্তবায়নে সুফল পেয়েছে। সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের উদ্দেশ্য হলো মানুষ বা সড়ক ব্যবহারকারী ভুল করলেও সড়ক ব্যবস্থাপনা এমন হবে যার ফলে মানুষকে তার ভুলের সর্বোচ্চ মাশুল অর্থাৎ মৃত্যু বা পঙ্গুত্বের শিকার যেন হতে না হয়।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় বাংলাদেশ রোড সেফটি প্রকল্পে যে বরাদ্দ রয়েছে তা পুরোপুরি সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের কাজে ব্যবহার করা, এই অ্যাপ্রোচের আলোকে সড়কে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি কমে। পাশাপাশি সড়কে মৃত্যু কমাতে নতুন আইনি কাঠামো প্রণয়নও এখন সময়ের দাবি।
নিসচার মাসব্যাপী কর্মসূচি
Advertisement
১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সারাদেশে মাসব্যাপী সড়কের ব্যবহার সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন।
২ অক্টোবর সারাদেশে সড়ক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম। ৩ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ট্রাফিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন। ওইদিন সারাদেশেও একই কার্যক্রম চলবে।
৪ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে ট্রাফিক মোড়ে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ট্রাফিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন। ওইদিন সারাদেশেও একই কার্যক্রম চলবে। ৫ অক্টোবর সারাদেশে সড়ক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম।
৭ অক্টোবর সারাদেশে সড়ক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম। ৮ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ট্রাফিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন। ওইদিন এবং ৯ অক্টোবরও সারাদেশে একই কার্যক্রম চলবে।
আরও পড়ুন>> গাইবান্ধায় বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
১০ অক্টোবর ফেনী জেলা কমিটি আয়োজিত চালক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ। ১১ অক্টোবর সারাদেশে এই কার্যক্রম চলবে। ১২ অক্টোবর রাজশাহী জেলা শাখা আয়োজিত প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) ২০০ প্রাইমারি স্কুলের প্রশিক্ষণরত শিক্ষকদের মাঝে সড়ক নিরাপত্তামূলক কর্মশালায় চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ।
১৪ অক্টোবর সারাদেশে কার্যক্রম চলবে। ১৫ অক্টোবর যানবাহনের গতিসীমা (যানবাহন, রাস্তা ও পারিপার্শ্বিক আস্থা বিবেচনায়) নির্ধারণ সংক্রান্ত গোলটেবিল বৈঠক।
এছাড়া ১৬-২১ অক্টোবর সারাদেশে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন; ২৩ অক্টোবর দেশব্যাপী প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা।
২৪ অক্টোবর সারাদেশে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। ২৫ অক্টোবর শরীয়তপুর জেলা শাখা আয়োজিত জেলার ৩০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০০ জন প্রধান শিক্ষক এবং জেলা প্রশাসন ও সুধীসমাজের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ।
২৬ অক্টোবর সারাদেশে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। ২৮-২৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ট্রাফিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন শুরু ও সারাদেশে এই কার্যক্রম চলবে।
৩০ অক্টোবর সারাদেশে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলবে এবং ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আয়োজনে চালক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ও নেতাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা।
আরএ/ইএ/এএসএম