এক কিলো দূরত্বে বেগুনের আগুন চারগুণ!


প্রকাশিত: ০৩:০২ পিএম, ১৫ জুন ২০১৫

রাজধানীর শ্যামবাজার থেকে ঠাটারী বাজারের দূরত্ব দেড় থেকে দুই কিলোমিটার হবে। এ দূরত্বে রমজানের বিশেষ সবজি বেগুনের দাম বেড়েছে চারগুণ। কাঁচার ঝালও দ্বিগুণ। পেঁয়াজ, শশা, লেবুসহ অন্যান্য রমজানের পণ্যের দামও বাড়ছে দেড় থেকে দুইগুণ। রাজধানীর পাইকারি শ্যামবাজার, মৌলভীবাজার ও চকবাজার এবং খুচরা ঠাটারী বাজার খিলগাঁও ও মুগদা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

পাইকারি ও খুচরা বাজারের আকাশ ছোঁয়া এ দামের ব্যবধানকে খরচ বেশি বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। আর মনিটরিং নেই বলেই এই ব্যবধান বলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

পবিত্র রমজান আসতে বাকি আর কয়েক দিন। রাজধানীর পাইকারি সবজির বাজার শ্যামবাজার গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন প্রকার বেধে বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। শ্যামবাজার থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ঠাটারী বাজার খুচরায় সেই বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পেঁয়াজ, শশা, কাঁচামরিচেরও প্রায় একই চিত্র। শ্যামবাজরে পাইকারি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৫ টাকায় খুচরায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০-৪৫ টাকায়।

এর মধ্যে দেশি পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ৩২-৩৬ টাকা খুচরা বাজারে ৪০-৪৫ টাকা। আর বিদেশি পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ২২-২৭ টাকা খুচরা বাজারে ৩৬-৩৮ টাকা। রসূন (দেশি) পাইকারি  ৪০-৪৫ টাকা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। প্রতি কেজি ৭০ টাকার রসূন (বিদেশি) বিক্রি হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। ৮০ টাকার আদা খুচরায় বেঁচে ১২০ টাকা।

১৬ টাকার শশা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। কাঁচার ঝালও বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০ টাকার কিনে কাঁচামরিচ বিক্রি করছে ৪০ টাকায়।

এদিকে রাজধানীর চকবাজারে পাইকারি প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়, খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৭০ টাকা। ১০৫ টাকা মসুর ডাল খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা। বিদেশি মসুরের ডাল ৮৫ টাকায় কিনে বিক্রি ৯৫ টাকা। ৬০ টাকার বুটের ডাল ৭০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল মৌলভীবাজারে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায় খুচরায় তা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। আর লিটার প্রতি ৭৬ থেকে ৮০ টাকার বোটলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৬-১০০ টাকা।

দুই থেকে চারগুণ দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে ঠাটারী কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মো. জামাল উদ্দিন জানান, গাড়ি ভাড়া, দোকান ভাড়া অন্যান্য খরচ মেটাতে একটু বেশি দামে সবজি বিক্রি করতে হয়।

কাপ্তান বাজারে মুদি ব্যবসায়ী নাজির উদ্দিন জাগোনিউজকে জানান, পাইকারি বাজেরের দামের সঙ্গে ভাড়া খরচসহ অল্প লাভেই আমরা পণ্য বিক্রি করি। রাজধানীর অন্যান্য বাজারে তুলনায় আমাদের বাজারে খুচরা পণ্যের মূল্য সবচেয়ে কম।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের দ্রব্যমূল্যের মনিটরিং সেলের দায়িত্ব থাকা সহকারী সচিব মোহাম্মদ হারুন আর রশিদ জাগোনিউজকে জানান, রমজান মাসের যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে সেই পণ্যের পাইকারি ও খুচরাবাজার দর নিয়ে মনিটরিং করছে এফবিসিসিআই।

বাজার মনিটরিংয়ে দেখা গেছে, রমজানের প্রযোজনীয় বেশ কিছু পণ্যে পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে দুই থেকে চারগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে। আর এ দাম বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণও নেই। অতি মুনাফার আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এই অনৈতিক কাজ করছেন। তাই সরকারের বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় আনলে পাইকারি ও খুচরা বাজারের দামের ব্যবধান কমে যাবে। বাজারের পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হবে।

# একনজরে রাজধানীর কাঁচামালের দাম

এসআই/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।