বর্ডার থেকে বেডরুম সর্বত্র নিরাপত্তার দাবি নারী সংহতির


প্রকাশিত: ১০:৪৮ এএম, ২৩ মার্চ ২০১৬
ধর্ষণের পর হত্যার শিকার তনু

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুকে কুমিল্লা সেনানীবাসে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে নারী সংহতি। এ নৃশংস ঘটনার তিন দিনেও ধর্ষক হত্যাকারীকে শনাক্ত বা আটক না করায় ক্ষোভ জানিয়েছে নারী সংহতি।  

বুধবার নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীল ও সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা দেব এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, গত ২০ মার্চ ২০১৬ রোববার ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণ ও হত্যার নৃশংস ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় নারী সংহতি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বলে, দেশের নারীরা ঘরে-বাইরে-কমেক্ষেত্রে কোথাও নিরাপদ নয়। সেনানিবাসের ভেতর, যেখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা আছে বলে ধারণা করা হয়, এখানকার সেনারা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কাজে নিয়োজিত সেখানে নারী ধর্ষণ ও হত্যার মতো অমানবিক, ঘৃণ্য ঘটনা ঘটে।

এটা আবারো প্রমাণ করে যে, বর্ডার থেকে বেডরুম কোথাও সরকার দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। অতীতের সকল ঘটনার বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় ধর্ষণ-নিপীড়ন বন্ধ হচ্ছে না এমনকি ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় যৌনসন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে।

নেতৃবৃন্দ তনুর পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, তনু হত্যার দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়নামতি সেনানিবাসের অভ্যন্তরে পাওয়ার হাউসের পানির ট্যাংক সংলগ্ন স্থানে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। তার গলাকাটা মৃতদেহ নগ্ন অবস্থায় কালভার্টের পাশে ঝোপঝাড়ের ভেতর পড়েছিলো। তনুর নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিলো এবং তার মোবাইল ফোনটিও পাশে পড়েছিল। এরপর তনুর মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রথমে সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, তনু ‘ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের (ভিসিটি) সদস্য। তনুর সহকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, তনু ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়ে ঘটনার পরদিন সোহাগীর পরিবার যেন কোনো তথ্য দিতে না পারে, সেজন্য দিনভর তাদের নজরদারিতে রাখা হয়। বন্ধ করে রাখা হয় তাদের মোবাইল ফোনও।

এমনকি সোহাগীর সহপাঠীদেরও সেখানে যেতে দেয়া হয়নি। তনুর পরিবার এ ঘটনায় মামলা করলেও পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে মিডিয়া থেকে দূরে রাখা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এসব ঘটনায় তনুর ধর্ষক ও হত্যাকারীদের সনাক্ত ও বিচার প্রক্রিয়া থেকে আড়াল করার কোনো অপচেষ্টা আছে কি না সে নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছে নারী সংহতি।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষক ও হত্যাকারীদের সনাক্ত করে আটক ও উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানান। একইসঙ্গে পাড়ায়-মহল্লায় সর্বত্র যৌন সন্ত্রাস প্রতিরোধ সেল গঠন করতে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান।

এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।