ময়মনসিংহে আইনুন্নাহারের পথে হেঁটে অনেকেই হয়েছেন সফল নারী
আইনুন্নাহার বৃহত্তর ময়মনসিংহের একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। যার অনুপ্রেরণায় ময়মনসিংহে অসংখ্য নারী উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছেন। তারা এখন স্বাবলম্বী। নিজের উদ্যম ও সাহসী মনোভাবই তাকে অনেক দূর নিয়ে গেছে।
২০০৩ সালে আইনুন্নাহার যুব উন্নয়নের সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে তৃণমূল নারী উন্নয়ন সমিতি গঠণ করেন। এসময় মাত্র দুই হাজার টাকা পূজিঁ নিয়ে শুরু করেছিলেন মেয়েদের পোশাক তৈরির ব্যবসা। সেই ব্যবসার পুজিঁ এখন ২০ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণসহ ৪০ লাখ টাকা। তিনি জেলার ১৬০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই শিখিয়ে স্বনির্ভর করে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। ময়মনসিংহ শহরের ৬১, ডিবি রোড, সেহড়া এলাকায় তার প্রতিষ্ঠান তৃণমূল নারী উন্নয়ন সমিতির অফিস রয়েছে। একটি ভাড়া বাসায় তিনি তার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
আইনুন্নাহারের প্রতিষ্ঠানের তৈরী পোশাক ও শো’পিচ এখন দেশের বাইরে ভারত, নেপাল, চীন ও কানাডায় রফাতানি করে সুনাম অর্জন করছে।
আইনুন্নাহার বর্তমানে তৃণমূল নারী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি এবং তৃণমূল কারুপণ্য অ্যান্ড বিউটি পার্লারের স্বত্তিধিকারী। তিনি ময়মনসিংহ নারী উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি। তার আন্তরিকতা, সাহসিকতা ও দক্ষতায়্এখন তিনি নারীদের কাছে আদর্শ এক নেত্রী। তিনি এপর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার নারী কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এর মধ্যে ৪১জন হিজরাও রয়েছেন। এছাড়া সাত শতাদিক ভাসমান যৌন কর্মীকে সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে ১৬০ জন নারী কর্মী রয়েছেন। এদের মধ্যে ২৫ জন বেতনভুক্ত স্থায়ী কর্মচারী।
আইনুন্নাহার ২০১০ সালে যুব উন্নয়ন থেকে সফল আত্মকর্মী নারী পুলস্কার লাভ করেন। ২০১৩ সালে উপজেলা, জেলা ও ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে ‘জয়িতা’ পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালে জাতীয় যুবমেলা পুরস্কার ও ২০১৬ সালে এসএমই পণ্যমেলা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও আগামী জুনে চীনে অনুষ্ঠিতব্য ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে তার প্রতিষ্ঠান অংশ নিবে বলে তিনি জানান।
তার প্রতিষ্ঠানে বেডশিট, নকশী কাঁথা, মেয়েদের সেলোয়া-কামিজ থ্রি-পিচ, ওয়ান-পিচ, ছেলেদের পাঞ্জাবী, পাটের তৈরী বিভিন্ন ব্যাগ, পুতুল ও শো’পিচ থেরী হয়। যার চাহিদা দেশ-বিদেশে সমান। ঢাকার অধিকাংশ দোকানে তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য সরবরাহ হয়ে থাকে।
তিনি আশা করেন বিসিক বা সরকার যদি তাকে তার প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দেয় তবে ময়মনসিংহে নারীদের নিয়ে একটি বড় কারুপণ্যের কারখানা প্রতিষ্ঠা করবেন। যেখানে অসংখ্য নারীদের কর্মসংস্থান হবে। এসময় তিনি যথাসময়ে আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আতিয়ার রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি ভবিষ্যতেও সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এফএ/এমএএস/এবিএস