শিক্ষায় নারীর ঈর্ষণীয় সফলতা

মুরাদ হুসাইন
মুরাদ হুসাইন মুরাদ হুসাইন , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৫ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২২
ভালো ফলাফলের পর নারী শিক্ষার্থীদের উল্লাস, ফাইল ছবি

দেশে নারী শিক্ষায় সফলতা এখন ঈর্ষণীয়। গত পাঁচ বছরে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে এগিয়ে মেয়েরা। পাসের হার, জিপিএ-৫ সবকিছুতেই মেয়েদের আধিপত্য। সংখ্যাগতভাবেও ছাত্রীর সংখ্যা ছাত্রদের চেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) থেকে এ তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞাপন

সবশেষ প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত দেশে মোট শিক্ষার্থী ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৭ হাজার ৬৩৫ জন। এর মধ্যে ছাত্রী প্রায় ২ কোটির মতো, যা মোট সংখ্যার ৫৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। বর্তমানে প্রাথমিকে মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫১ শতাংশ ছাত্রী। মাধ্যমিক শিক্ষায় আরও এগিয়ে মেয়েরা। এ স্তরে মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ ছাত্রী। এইচএসসি পর্যায়ে ছাত্রী ৫৪ শমিক ৯২ শতাংশ। একবছর আগে ছাত্রীর অংশগ্রহণের হার ছিল প্রায় ৫০ শতাংশ।

jagonews24২০২১ শিক্ষাবর্ষে মেয়েদের পাসের হার ছিল ৯৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রেও মেয়েরা এগিয়ে ছিল। ১১টি বোর্ডে ১ লাখ ২ হাজার ৪০৬ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেলেও ছেলেদের মধ্যে এ সংখ্যা ৮৬ হাজার ৭৬৩ জন ছিল। একই বছরে এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় মেয়েদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। ছেলেদের পাসের হার ৯২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তবে উচ্চশিক্ষা স্তরে কিছুটা পিছিয়ে মেয়েরা।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে তত্ত্বাধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ২০১৮ সালের শেষের দিকে উচ্চ মাধ্যমিকে তিন বছরের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী সমতার কথা ঘোষণা করেছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গীকারের জায়গা থেকে দেওয়া ওই আগাম ঘোষণা নিঃসন্দেহে ভালো, যা ছিল খুবই প্রত্যাশিত। কিন্তু গত এক দশক ধরে এই স্তরে ঘুরেফিরে একই জায়গায় আছে ছাত্রী ভর্তি। এই স্তরে সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্তত ১০টি চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলোতে সরকার মনোনিবেশ না করলে বৈষম্য বাড়ার পরিবর্তে কমবে।

গত কয়েক বছরের হিসাবে দেখা গেছে, প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি-জেডিসি ও এসএসসি পরীক্ষায় কেবল অংশগ্রহণেই নয়, সফলতায়ও ছাত্রীদের হার বেশি। বিভিন্ন ধারার আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রফেশনাল, কারিগরিতে নারীর অংশগ্রহণ, টিকে থাকা এবং সফলতার হার বাড়ছে।

দেখা গেছে, মাদরাসা শিক্ষায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর অংশগ্রহণ ১০ শতাংশ বেশি। বর্তমানে মাদরাসার মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ দশমিক ২৬ শতাংশই ছাত্রী। উচ্চশিক্ষায়ও দিন দিন বাড়ছে নারী। এ স্তরে বর্তমানে ৩৩ শমিক ৯৪ শতাংশই ছাত্রী, যা আগের বছর ছিল ৩২ শমিক ৫৭ শতাংশ। এছাড়া নারী শিক্ষকের হার ৫৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৪০ দশমিক ৬১ শতাংশ। কারিগরি ও ভোকেশনালে ২৮ শমিক ৭৬ শতাংশ, যা আগে ছিল ২৬ শতাংশ। প্রফেশনাল শিক্ষায় আগের বছরের চেয়ে বেড়ে হয়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলেও ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা করা হলেও সেই অনুপাতে ঝরে পড়েনি।

 

এমএইচএম/এমএইচআর/এএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।