শিশু অধিকার নিয়ে কাজের সমন্বয় চায় বিভিন্ন সংগঠন
শিশু অধিকার সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানামুখি কার্যক্রম চলছে। এই কাজের যেমন সমন্বয় প্রয়োজন, তেমনি কার্যক্রমগুলো অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়া দরকার। সরকার দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সংগঠন।
মঙ্গলবার জাতীয় যাদুঘর মিলনায়তনে শিশু অধিকার সুরক্ষায় কর্মরত সংগঠন ‘এক রঙ্গা এক ঘুড়ি’ ও ‘গুড নেইবার্স’ আয়োজিত ‘ন্যাশনাল ক্যাম্পেইন অন চাইল্ড রাইটস’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে এ আশার কথা উঠে আসে। এসময় শিশু অধিদপ্তরের কার্যক্রমের প্রতিষ্ঠানিক রূপদানের দাবি জানানো হয়।
দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এক রঙ্গা এক ঘুড়ি ’র প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এস এম মাসুদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পথ-শিশু পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. আবুল হোসেন, গুড নেইবার্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাইনুদ্দিন মইনুল, শাপলা নীড়ের (জাপান) কান্ট্রি ডিরেক্টর তমকো উচিয়ামা এবং ওয়ান ২ থিঙ্ক-এর প্রতিষ্ঠাতা নাদিরা মালেক। মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন পথ শিশুদের নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলোর জোট স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুল হক টুকু বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশে শিশুদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। তখন অনেক বিদেশি সংস্থাও সরকারকে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিল। শিশুদের অধিকার নিশ্চিত না করতে পারলে দেশকে এগিয়ে নেয়া অসম্ভব। শিশু অধিদপ্তর গঠনের কাজও দ্রুত শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, শিশুদের নিয়ে সরকারি অনেকগুলো সংস্থা কাজ করছে। বিশেষ করে শিশু একাডেমি অনেক কাজ করে থাকে। এক সময়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সৃষ্ট এই সংস্থা দিয়ে সকল কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই শিশু অধিদপ্তর গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই অধিদপ্তরের কার্যক্রম চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে উত্থাপিত মূল প্রবন্ধে মনিরুজ্জামান মুকুল বলেন, ১২-১৮ বছর বয়সী শিশুদের ৬৪ শতাংশ বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছরের হওয়ার আগেই (ইউনিসেফ ২০০৮), শিশু শ্রমের সাথে জড়িত ১৩ শতাংশ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এবং বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার (ইউনিসেফ ২০০৮), ৬৩ শতাংশ মেয়ে শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার (ইউনিসেফের গবেষণায়) এবং ৩৩ শতাংশ ছেলে শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)। এ সকল বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠানে সকালে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বিকেলে পুরস্কার বিতরণী করা হয়। এ ছাড়া পাপেট শো ও শিশু অধিকার বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন ছিল। অনুষ্ঠানে শিশু শ্রম ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কর্মরত ব্যক্তি ও বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএস/এনএফ/এমএস