প্রতীক বরাদ্দে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির অভিযোগ


প্রকাশিত: ০৩:০৮ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০১৫

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে নারীদের অবজ্ঞা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে নিরাপদ ও নারীবান্ধব চট্টগ্রাম গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে মহিলা পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখা আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিটি নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য শীলপাটা, পানপাতা, টিস্যুবক্স, পিঞ্জর, কেটলি, গ্লাসের মতো হালকা ও হাস্যকর প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে, যা নারীদের জন্য বিব্রতকর ও অবজ্ঞার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক লতিফা কবির। এতে অন্যান্যের মধ্যে জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুগতা বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শিরিন আক্তার হেনা, অর্থ সম্পাদক শুভ্রা দাস, লিগ্যাল সম্পাদক নিলুফার জাহান বেবি, সদস্য গৌরি চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, যুগ যুগ ধরে চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির ধারাবাহিকতায় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নারী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। নারীরা নানাদিক থেকে বৈষম্যের শিকার। নারীদের অবদমিত করে রাখা হয় সর্বক্ষেত্রে।

নিরাপদ, সঠিক পরিবেশ না থাকায় সকল বয়সের নারীই প্রায় প্রতিদিন নানাভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে, শিক্ষাঙ্গনে প্রতিদিনই ভয়াবহ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। স্কুল কলেজের তরুণী-কিশোরীদের উত্যক্তকরণ, ক্রমবর্ধমান সহিংস আচরণ, সন্ত্রাসী তৎপরতা, সাইবার ক্রাইম নারী জীবনকে নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। রাস্তাঘাট, পরিবহন, কাঁচাবাজার কোনটিই নারীবান্ধব নয়। এসব থেকে নির্বাচন কমিশনও নিজেদের বিরত রাখেনি।

এতে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের প্রতি ২৪টি, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ১৫টি ও জনগণের প্রতি ৪টি সহ মোট ৪৩টি দাবি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নারীবান্ধব চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া, মহিলা বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি, গণপরিবহনে মহিলা আসন বৃদ্ধি, কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল ও শিশু রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রত্যেকটি বাজার নারীবান্ধব করাসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়।

এছাড়া নির্বাচন কমিশনের প্রতি নারী নির্যাতনকারী ব্যক্তিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার, নারী ভোটাররা যাতে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, নারী প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

অধ্যাপক লতিফা কবির বলেন, বিগত দিনে নির্বাচিত সংরক্ষিত নারী জনপ্রতিনিধিরা যথাযথ পরিবেশ ও অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় তারা নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারেননি। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরের নির্বাচিত নারী সকল জনপ্রতিনিধিদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করে নারীর সমঅংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এমজেড/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।