হেল্পলাইন ১০৯২১ : আড়াই বছরে ৬১,৮৮৬ জনকে সেবা
বিভিন্ন ধরণের হুমকি, যৌন হয়রানি, অপহরণ, পারিবারিক বিরোধ কিংবা নির্যাতনের ঘটনায় সেবা দিচ্ছে ন্যাশনাল হেল্পলাইন ১০৯২১। বিনা খরচে এই টেলিফোন সেবা গ্রাহকদের জন্য ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। দেশের যে কোন জায়গায় যে কোন অপারেটর থেকে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারেন নির্যাতিত ব্যক্তি ও তার পরিবার।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আওতায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
২০১২ সালের ২০ জুন থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আড়াই বছরে ন্যাশনাল হেল্পলাইন ৬১ হাজার ৮’শ ৮৬ জনকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, গত আড়াই বছরে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইন, করণীয় ও অধিকার সংক্রান্ত তথ্য জানতে ফোন দিয়েছেন ৩৬ হাজার ৯২৭ জন। স্বাস্থ্য সেবার জন্য ফোন দিয়েছেন ৩৯৪ জন। কাউন্সেলিং-এর জন্য ফোন দিয়েছেন ৭৬০ জন। পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন ৭১৩ জন। আইন সহায়তা চেয়েছেন ২৭২৬ জন।
এছাড়াও পারিবারিক মধ্যস্থতা, পারিবারিক বিরোধ, বিবাহ বিচ্ছেদ, আইন সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ ও সহায়তা চেয়ে ফোন করেছেন ২ হাজার ৯৬৫ জন।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম একটি সমন্বিত কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) ও ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল, ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, ন্যাশনাল হেল্পলাইন, এবং রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি।
প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন জানিয়েছেন, নির্যাতিত নারীদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সেবা এক জায়গা থেকে দেয়ার ধারনার ওপর ভিত্তি করে ওসিসি গড়ে তোলা হয়। ওসিসি থেকে স্বাস্থ্যসেবা, পুলিশী সহায়তা, ডিএনএ পরীক্ষা, সামাজিক সেবা, আইনি সহায়তা, মানসিক কাউন্সেলিং ও আশ্রয়সেবাসমূহ দেয়া হয়ে থাকে।
ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওসিসি রয়েছে। এছাড়াও জেলা পর্যায়ে ৪০টি এবং উপজেলা পর্যায়ে ২০ ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল-এর মাধ্যমে গ্রামে গঞ্জে সেবা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, নির্যাতিত নারী ও শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই সেন্টারের মাধ্যমে সারাদেশে নির্যাতিত নারীদের মনো-সামাজিক কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করার পাশাপাশি দক্ষ কাউন্সেলর তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ভৌগলিক সীমানা বাধা পেরিয়ে গ্রামে-গঞ্জে কিংবা দুর্গম এলাকায় থেকেও যাতে একজন নির্যাতিত নারী প্রয়োজনীয় সুবিধা ভোগ করতে পারেন সে উদ্দেশ্যেই এই কার্যক্রম চালু করা হয়।
টোল ফ্রি এ হেল্পলাইনে ফোন করে একজন নারী তার প্রয়োজনীয় সহায়তা চাইতে পারেন। দেশের যে কোন প্রান্তে মুহূর্তেই সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য সব ধরনের সেবা প্রদানকারী সংস্থার তথ্যই আছে ন্যাশনাল হেল্পলাইনে। সেন্টার নির্যাতিতের পরিচয় ও তথ্য গোপন রেখেই তার প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করে থাকে। -বাসস
আরএস