ঐতিহাসিক ৭ প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভের অজানা অতীত

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৪
বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঐতিহাসিক সব স্মৃতিস্তম্ভ

সাইফুর রহমান তুহিন

বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিটি স্মৃতিস্তম্ভের পেছনেই আছে অজানা নানা গল্প। এদের মধ্যে বেশ কিছু স্মৃতিস্তম্ভ অনেক প্রাচীন। যা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।

দুঃখজনকভাবে সময়ের পথ পরিক্রমায় বেশ কিছু প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে যেগুলো এখনো রয়ে গেছে সেগুলো সমানভাবে নজরকাড়া ও আপনাকে খুবই মুগ্ধ করবে। তেমনই বিশ্বের নজরকাড়া ৮টি স্মৃতিস্তম্ভের অজানা ইতিহাস জেনে নিন-

সাইরাস দ্য গ্রেটের স্মৃতিস্তম্ভ, ইরান

প্রাচীন আচায়েমেনিড সাম্রারাজ্যকে যেখানে সমাধিস্থ করা হয়েছিলো সেখানেই সাইরাস দ্য গ্রেটের স্মৃতিস্তম্ভের অবস্থান। ইরানের ফার্স প্রদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা পাসারগাডায় এর অবস্থান।

সাইরাস দ্য গ্রেট জীবিত ছিলেন ষষ্ঠ শতাব্দীতে ও তার সমাধিস্থল এখন পাসারগাডার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ। আলেকজান্ডার এই স্মৃতিস্তম্ভ লুট করেছিলেন। তখন একটি সোনার বিছানা, সোনার কফিন ও একটি টেবিল আবিষ্কৃত হয়েছিলো যার সঙ্গে ছিলো মূল্যবান পাথরযুক্ত অলংকারাদি।

তাজমহল, আগ্রা, ভারত

তাজমহলকে নতুন করে চিনিয়ে দেওয়ার আর কী আছে? মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতি রক্ষার্থে বিশ্ববিখ্যাত স্থাপনাটি তৈরি করেন। তাজমহল সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে ভালোভাবে সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভগুলোর একটি।

জাহাঙ্গীর স্মৃতিস্তম্ভ, লাহোর, পাকিস্তান

রাভি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা সপ্তদশ শতাব্দীর এই স্মৃতিস্তম্ভটি মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্মরণে তৈরি। বাবার মৃত্যুর প্রায় ১০ বছর পর জাহাঙ্গীরের ছেলে এই সমাধিস্থল স্থাপন করেন। এটি দেখতে বেশ আকর্ষণীয় ও লাহোর নগরীর প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলোর একটি।

প্রথম সম্রাটের স্মৃতিস্তম্ভ, চীন

চীনের কিন সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াংয়ের (খ্রিস্টপূর্ব ২২১ অব্দ থেকে ২০৬ অব্দ পর্যন্ত) এই স্মৃতিস্তম্ভ এমন একটি আবিষ্কারম যেটি সারা বিশ্বেকে আলোড়িত করেছিল।

সম্রাটের সমাধিস্থল যদিও এখনো উন্মুক্ত করা হয়নি, তবে তার সেনাবাহিনীর টেরাকোটো মূর্তি খনন করে বের করা হয়েছে। এরপরই এটি চীনের অন্যতম প্রধান একটি ট্যুরিস্ট স্পটে পরিণত হয়। তবে সেনাবাহিনীর অধিকাংশই এখনো সমাধিস্থ অবস্থায় আছেন।

ইমাম হোসাইন দরগাহ, কারবালা, ইরাক

এই দরগাহ সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর একটি। ইরাকের কারবালা শহরের এই দরগাহটি হলো মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা:) এর নাতি হুসাইন বিন আলীর কবর।

ঐতিহাসিক কারবালার যুদ্ধ যে স্থানে সংঘটিত হয়েছিলো তার কাছেই স্মৃতিস্তম্ভটির অবস্থান। এই দরগাহ শিয়া মুসলিমদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান হিসেবে গণ্য হয়।

লেনিন স্মৃতিস্তম্ভ, মস্কো, রাশিয়া

লেনিনকে কে না চেনে? মস্কোর লেনিন স্মৃতিস্তম্ভ হলো রাশিয়ান বিপ্লবী ও রাজনীতিবিদ ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের জীবনের শেষ ঠিকানা। ১৯২৪ সালে মারা যাওয়ার পর তার সংরক্ষিত মৃতদেহ দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শনী করা হয়। প্রতিদিন সেনাসদস্যদের একটি বিশেষ দল মৃতদেহের যত্ন নিয়ে থাকে।

এটিকে আর্দ্র করা হয়, প্রিজারভেটিভ ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয় ও ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস স্থির তাপমাত্রায় রাখা হয়। তরতাজা রাখার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মৃতদেহকে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে গোসল করানো হয়। স্মৃতিস্তম্ভের ভিতরে ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করা পুরোপুরি নিষেধ।

হুমায়ুন স্মৃতিস্তম্ভ, নতুন দিল্লি ভারত

১৫৭০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হুমায়ুন স্মৃতিস্তম্ভকে ১৯৯৩ সালে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করা হয়। ১৫৬২ সালে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের স্ত্রীর বিশেষ নির্দেশে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। লাল পাথরের এই সৌন্দর্য সুদূর অতীত থেকেই দিল্লি নগরীর প্রধান আকর্ষণগুলোর একটি।

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।