পার্ক নাকি হীরার খনি!

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩৯ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

অবিশ্বাস্য এক পার্ক। যেখানকার মাটি খুঁড়তেই মেলে হীরা। বিষয়টি মনগড়া মনে হলেও কিন্তু সত্যিই এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন অনেকেই।

যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসের ক্রেটার অব ডায়মন্ড স্টেট নামক এই পার্কে গেলে আপনিও মাটি খুঁড়ে পেতে পারেন হীরা। বিশ্বব্যাপী এটি ‘ডায়মন্ডস স্টেট পার্ক’ নামেও পরিচিত।

আরও পড়ুন: যে দেশের নাগরিকত্ব মেলে খুব সহজেই 

আরকানসাসের পাইক কাউন্টিতে মারফ্রিজবোরো শহরে প্রায় ৯১১ একর ধরে গড়ে উঠেছে এই হীরার পার্ক। তার মধ্যে সাড়ে ৩৭ একর জুড়েই আছে‘হিরার খনি’।

এটিই দুনিয়ার একমাত্র হীরার খনি, যেখানে ঢুকতে কোনো সরকারি অনুমতিপত্রের প্রয়োজন পড়ে না। অর্থাৎ ছোট থেকে বড় সবাই এই পার্কে টিকিট কেটে ঢুকতে পারেন।

এমনকি এই পার্কে আগত দর্শনার্থীরা হীরা খুঁজতে মাটি খোঁড়াখুঁড়িও করতে পারেন। তবে পার্ক কর্তৃপক্ষের শর্ত একটাই, এজন্য অবশ্যই টিকিট কাটতে হবে।

আরও পড়ুন: কেন বিয়ে হয় না পাহাড়ি এই গ্রামের সুন্দরী নারীদের? 

টিকিট কেটে ভেতরে যারাই হীরার খনি দেখতে যান, তাদের অনেকেই সৌভাগ্যবশত মাটির খুঁড়তেই পেয়ে যান হীরা। ওই পার্কে প্রতিদিনই গড়ে অন্তত ২টি করে হীরা খুঁজে পান আমজনতা।

১৯০৬ সাল থেকে সেখানে হীরার সন্ধান চালু হয়। তখন স্থানটির মালিকানা ছিল জন হাডলসটন নামক এক ব্যক্তির কাছে। ১৯৭২ সালে একে স্টেট পার্কের মর্যাদা দেয় আরকানসাস ডিপার্টমেন্ট অব পার্কস অ্যান্ড ট্যুরিজম।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯০৭-১৯৩২ সালের মধ্যে জমির উপরিস্তরে ক্ষয়ের পর প্রায়শই ৩০ ক্যারেট বা তার বেশি ওজনের হীরা পাওয়া যেত। এরপর এই স্থান থেকে হীরা পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে মারফ্রিজবোরো শহরে।

আরও পড়ুন: মালদ্বীপ ভ্রমণে খরচ কমাতে কখন যাবেন? 

পরবর্তী সময়ে উৎসুক জনতার ভিড় বাড়তে থাকে। হীরার টানে স্থানটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ১৯৫১ সালে পর্যটকদের ভিড়ের ফায়দা তুলতে এগিয়ে এসেছিলেন লেখক তথা প্রোমোটার হাওয়ার্ড এ মিলার ও তার স্ত্রী মোডিয়ান।

দেশজুড়ে তারা প্রচারণা শুরু করেন। এরপর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে। ১৯৫৬ সালে ওই গর্ত থেকে ৩৪.২৫ ক্যারাট বা ৬.৮৫০ গ্রামের নীল রঙের হীরা খুঁজে পান জন পোলক।

ডায়মন্ডস স্টেট পার্কে মূলত সাদা, পিঙ্গল ও হলদেটে এই তিন রঙের হীরা পাওয়া যায়। ১৯৭২ সালের পর থেকে এখনো পর্যন্ত সেখানে ৩৩ হাজার ১০০ হীরা খুঁজে পাওয়া গেছে।

২০২১ সালের অক্টোবর মাসে এক নারী ৪.৩৮ ক্যারেট ওজনের একটি হলুদ হীরা খুঁজে পান এই পার্কে। রেন রেডবার্গ ও তার স্বামী মাইকেল মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে পেয়ে যান এই অমূল্য রতন।

আরও পড়ুন: এক জাহাজে চড়েই শত দেশ ঘুরবেন যেভাবে 

এর আগে ২০১৭ সালের মার্ট মাসে কালেল ল্যাংফোর্ড নামের এক কিশোর আধা ঘণ্টা খোঁড়াখুঁড়ির পর ৭. ৪৪ ক্যারেটের একটি হীরা খুঁজে পান। বিগত ৪০ বছরে সেখানে পাওয়া দ্বিতীয় ভারী হীরা ছিল এটি।

টিকিট কেটে পার্কে ঢোকার পর নিজেদের যন্ত্রপাতি নিয়েই চাইলে দর্শনার্থীরা খোঁড়াখুঁড়ি করতে পারেন। আবার সেগুলো ভাড়া নেওয়ারও সুযোগ আছে। তবে ব্যাটারি বা মোটরচালিত যন্ত্র নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ।

পার্কে হীরার খনি ছাড়াও পিকনিক করার ব্যবস্থা আছে। তাঁবু খাটিয়ে সময় কাটানোর জন্য ৪৭টি নির্দিষ্ট জায়গারও ব্যবস্থা করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। আছে গিফট শপ ও ওয়াটার পার্ক। চাইলে সেখানে নিরিবিলি সময় কাটাতেও যেতে পারেন।

সূত্র: আরকানসাস/সিএনএন

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।