সাড়াক সেওনি-মানসার
বৈচিত্র্যময় মধ্য প্রদেশ ছাড়িয়ে যাত্রা শুরু মহারাষ্ট্রে
বাবর আলী। পেশায় চিকিৎসক, নেশায় পর্বতারোহী। সাইক্লিং, ম্যারাথন রানও তার সঙ্গী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জয় করেছেন হিমালয়ের সাড়ে ২২ হাজার ফুটের ভয়ংকর চূড়া ‘আমা দাবালাম’। এর আগে হেঁটে ভ্রমণ করেছেন দেশের ৬৪ জেলা। সাইকেল চালিয়ে দেশের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু কৃতিত্ব। এবার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন বৈচিত্র্যময় দেশ ভারতে। ভূ-স্বর্গখ্যাত কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে বানিহাল, উধমপুর, জম্মু, পঠানকোট হয়ে দিল্লি ও আগ্রা। পরে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র, ঝাঁসী পেরিয়ে প্রবেশ তেলঙ্গানায়। এর পরে অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক হয়ে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে সফর শেষ হবে। তার হিসাবে সব মিলিয়ে ৪৫ দিনে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার সফর করবেন তিনি।
এই সফরের প্রতিদিনের গল্প থাকবে জাগো নিউজে। আজ থাকছে সপ্তদশ পর্ব।
দিন ১৬। বাতাসে ভেজা গন্ধ। গত রাতের এক পশলা বৃষ্টির রেশ ভোরের হাওয়ায়। এগোতেই প্রথম গ্রামের নাম ঝিলমিলি।
‘ঝিলমিল ঝিলমিল ঝিলের জলে ঢেউ খেলিয়া যায় রে
ঝির ঝির ঝির হাওয়ায় রে ঢেউ খেলিয়া যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল।’
মাথায় শচীন দেব বর্মণ ঘুরছে। চড়াই ছাড়াতেই অনেকদিন বাদে গুরুদুয়ারার দেখলাম। মধ্য প্রদেশে রাস্তার ধারে শিখদের উপসনালয়ের সংখ্যা একেবারে হাতে গোনা। ঠান্ডার আমেজের সঙ্গে খানিক বাদে বাড়লো হাওয়ার দাপট। উধমপুরের পরে এই প্রথম উইন্ডব্রেকার পরতে হলো। পুব আকাশে নিভন্ত প্রদীপের মতো সূর্য টিমটিম করছে। পেছনের জনপদগুলোতে গত রাতে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়িগুলোর সাদা শরীরে কাদার বাটিকের কারুকাজ।
আজকের রাস্তায়ও বেশ চড়াই-উতরাই। একের পর এক পথ আগলে দাঁড়াচ্ছে। চড়াই পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকলেও আমাকে তো পেরোতে হবে। দুই চাকায় ভর করে আমি একে একে চড়াই ডিঙিয়ে এগোচ্ছি। চোরগরাতিয়া পেরিয়ে মহাসড়ক ছাড়লাম। ঢুকে পড়লাম সেওনি সড়কে। মধ্য প্রদেশের জেলা শহর এই সেওনি। আমার উদ্দেশ্য শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ডাল সাগর লেক। শহরের দিকে এগোতেই ঘুম ঘুম চোখের বাচ্চারা হলুদ বাসের পেছন থেকে প্রচণ্ড কৌতূহল নিয়ে তাকাচ্ছে। সড়কের পাশে মহাদেব শিবের ত্রিশুল আর ডমরুর দেখা পাওয়া যাচ্ছে এন্তার। আরেকটু এগোতেই জেলা শহরের নানান উপাদান ছড়িয়ে- ডেপুটি কমিশনারের অফিস, থানা, হাসপাতাল, নানান সরকারি কার্যালয়।
ডাল সাগর তালাব পার্কের গেটে এই সকালে তালা ঝুলছে। ওয়াকওয়ের পরে আবার লেকের জলকে লোহার বেড়ায় ঘেরাও করা হয়েছে। এত নিরাপত্তা কীসের জন্য কে জানে! প্রবেশপথের ফটকে তালা ঝুললেও লোকে পার্কের ধারে প্রাকৃতিক কর্ম সারছে দেদারসে। মূত্রথলির জমানো পানি ফেলার জায়গা কি পুরো শহরে এই একটাই নাকি? লোহার বেড়া না থাকলে নির্ঘাত লেকেই মুতে এর পানির স্তর বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতো হারামজাদার দল! লেকের ঠিক মধ্যিখানে আছে ছোট একটা দ্বীপ। পাড়ে কয়েকটা প্যাডেল বোটও আছে। বিকেলে জমজমাট হয়ে ওঠে জায়গাটা।
আরও পড়ুন>> খরচ বাঁচাচ্ছে পেট্রোল পাম্পের ফ্রি বিশুদ্ধ পানি-হাওয়া
আশপাশ দেখে তাই বোঝা যায়। পাড়ঘেঁষে শয়ে শয়ে স্ট্রিট ফুডের কার্ট। লেক দেখে মন না ভরলেও লেকের তীর ঘেঁষা এক দোকানে পোহা খেয়ে মনপ্রাণ তৃপ্ত হয়ে গেলো। আরেকটু পরে সকালের নাশতা করার ইচ্ছে থাকলেও লোকের ভিড় দেখে এগোলাম। পোহা জিনিসটা সোজা বাংলায় চিড়া ভাজা। মহারাষ্ট্রের বেশ জনপ্রিয় খাবার এই পোহা। পাশের প্রদেশের খাবার হলেও সীমান্তঘেঁষা মধ্য প্রদেশের এ শহরেও এটি জনপ্রিয় বলেই মনে হলো। চিড়া ভাজার সঙ্গে ছোলা, চুরমুর আর জিলাপি মাত্র ১৫ রুপিতে। স্বাদও অতুলনীয়। এই দোকানের মিল্ককেকটাও চেখে দেখলাম। খেতে দারুণ।
ফের সাইকেলে চড়ে বসতেই শুরু চড়াই-উতরাই। একটা শহরের ভেতরে এত চড়াই-উতরাই আগে দেখিনি। সেওনিতে স্কুলের সংখ্যা প্রচুর। অসংখ্য বাচ্চা-কিশোর সাইকেলে চেপে স্কুলে যাচ্ছে। এছাড়া শহরভর্তি কৃষ্ণচূড়া গাছ। বৃক্ষের মাথা আর পাদদেশ দুই-ই ফুলে ফুলে লাল হয়ে আছে। অশ্বত্থের নতুন তামাটে পাতা কী সুন্দর সূর্যের নরম আলো ধরেছে! মহাসড়কের আগে ‘কিপলিং কোর্ট’ এর সাইনবোর্ড। রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের বিখ্যাত বই ‘দ্য জাঙ্গল বুক’-এ উল্লেখ আছে এই সেওনির।
হাইওয়ের ধারে অসংখ্য কোকিলের ডাক। পাখির ডাক নাকি জায়গা দখল কিংবা মিলনের ডাক। অন্যের বাসায় নিজের ডিম রেখে যাওয়ার দোষে দুষ্ট কোকিলের সুরেলা আহ্বান মিলনেরই ডাক। অল্প এগোতেই বাঘ-সিঙ্গির রাজত্বে গাড়ির গতি কম রাখার অনুরোধ সাইনবোর্ডে। এগিয়ে চলছি পেঁচ ন্যাশনাল পার্ক পানে। গোপালগঞ্জ নামক জায়গা ছাড়িয়ে পেলাম দুর্গা দেবীকে। তার বাহন সিংহের পিঠে চড়ে বসে আছেন ভারতের পতাকার রঙের শাড়ি পরে। ইনিই কি এখানকার বনবিবি?
পেঁচ ন্যাশনাল পার্ক বা টাইগার রিজার্ভের বাঘের হাত থেকে রক্ষা পেতে কি তার চরণেই নৈবেদ্যের ফুল জোটে? বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চলে বনবিবির ব্যাপক দাপট আছে। একটু এগিয়ে বিশাল হনুমান মূর্তি। বনের কাছে বলেই কি প্রাণী দেবতার এত ভিড়?
আরও পড়ুন>> ১৩তম দিনে ১৬০ কিমি পাড়ি, বিস্ময় জাগালো ব্যালেন্সিং রক
কালবদি পেরিয়ে রুখাডের কিছুটা আগে থেকে রাস্তার দুপাশ রুদ্ধ। উঁচু সবুজ স্টিলের পাত দিয়ে মোড়ানো। প্রবেশ করেছি পেঁচ ন্যাশনাল পার্ক অঞ্চলে। বন্যপ্রাণীরা যাতে অযাচিত দুর্ঘটনায় না পড়ে, তার জন্য এ ব্যবস্থা। উঁচু উড়ালপুলের মতো সড়কের নিচে প্রাণীদের আন্ডারপাসের ব্যবস্থা। বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক করিডরকে ব্যাহত না করার আপ্রাণ চেষ্টা। তবে উঁচু সবুজ স্টিলের পাতকে বানরের দল থোড়াই কেয়ার করে। পাত টপকে রাস্তার ডিভাইডারে লোকের ফেলে যাওয়া খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে শাখামৃগের চঞ্চল দল। স্টিলের পাতের ওপর গাছের গম্বুজাকৃতি শীর্ষই শুধু দেখা যায়। সেগুলোও আবার অধিকাংশ নিষ্পত্র। এছাড়া রাস্তার ডিভাইডারে বাগানবিলাসের ঝোপ হিসেবে বাড়তে থাকা চারা।
এক জায়গায় চোখে পড়লো হারিকেনের ভেতরে রাখা স্ট্রিট লাইট। বানরের দল থেকে বাঁচানোর জন্যই সম্ভবত এ ব্যবস্থা। উঁচু স্টিলের পাতের মাঝে মাঝে কয়েক কিলোমিটার বাদে বাদে ছোট ফাঁকা জায়গা। ফাঁকা জায়গা ধরে এগিয়ে গেলে পিচের কিংবা মাটির ছোট রাস্তা আপনাকে নিয়ে যাবে পেঁচ ন্যাশনাল পার্কের অভ্যন্তরের ছোট গ্রামগুলোতে। অসংখ্য স্তম্ভমূল নামানো বটের নিচে বাইসন ট্রিট রেস্টুরেন্ট। বাইসন তো আর নেই, আছে শয়ে শয়ে বানর। কুরাই পেরোতেই সবুজ বেষ্টনী শেষ। পিপারিয়ার পরের জনপদের নাম পটিয়া। চট্টগ্রামের পটিয়া তবে এখানেও!
খাওয়াসা টোল গেট পেরিয়ে কিছুটা এগোতেই মধ্য প্রদেশের সীমানা শেষ। প্রবেশ করলাম নতুন রাজ্য মহারাষ্ট্রে। তবে মধ্য প্রদেশকে আজীবন মনে থাকবে আমার। এমন বৈচিত্র্যময় ভূখণ্ডের মুখোমুখি আমি আগে কখনো হইনি। নিঃসীম শূন্যতার মধ্য দিয়ে পথচলার অনুভূতিটুকুর জন্যও এই প্রদেশের কাছে ঋণী থাকবো আজীবন।
এগোতেই রাস্তার ধারের ফলক জানাল পেঁচ টাইগার রিজার্ভের তুরিয়া গেট এখান থেকে ১২ কিলোমিটার। এছাড়াও আরেকটি ফটক আছে করমাঝেরি নামে। সেওনি শহরের মতো কিপলিং-এর বিখ্যাত বই মোগলি খ্যাত 'দ্য জাঙ্গল বুক' এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পেঁচ টাইগার রিজার্ভের নাম। পেঁচকে কেন্দ্র করে মহারাষ্ট্রের দিকে প্রচুর বিলাসবহুল রিসোর্ট আছে। রাস্তায় এদের বিশাল সব ফলক। মহারাষ্ট্রে ঢুকেই হাইওয়ে ছেড়ে গ্রামের ছোট রাস্তা ধরলাম। হুড লেক দেখার উদ্দেশ্যটা প্রচ্ছন্ন, জঙ্গল দেখাটাই প্রকট লক্ষ্য। কিলোমিটারখানেক এগোতেই বিশাল একটা সাপকে রাস্তা পেরোতে দেখলাম। আমি ফোনের হোল্ডার থেকে ক্যামেরা ছাড়াতে ছাড়াতেই ব্যাটা পগার পার! মধ্য প্রদেশ আর মহারাষ্ট্রের এই অংশে মূলত গোন্ড আদিবাসীদের বসতি। তাদের ছোট বসতি পেরিয়ে হুড লেকে। জায়গাটা ভয়ানক নির্জন। কিছুটা সময় পাড়ে কাটিয়ে ফের মহাসড়কে।
আরও পড়ুন>> মহাভারতের কুরুক্ষেত্র-বাবরের পানিপথের যুদ্ধক্ষেত্রে
টানা চালিয়ে সাড়ে ১২টা নাগাদ দেওলাপার। এক দোকানে চা-সমুসা খেয়ে পাওনি নামক লোকালয়ে। আজ প্রচুর মোটরবাইক আরোহী থামাচ্ছে আমাকে। খুব আগ্রহ নিয়ে কী বৃত্তান্ত জিজ্ঞেস করছে। রামটেক যাওয়ার মোড়ের আগে থামালেন উলহাস নামে এক মোটরাবাইক আরোহী। অবশ্য বাংলা উচ্চারণে শব্দটা অতি অবশ্যই ‘উল্লাস’।
বছর পঁয়তাল্লিশের ভদ্রলোক ল পড়েছেন, কিন্তু এখন একটা সেকেন্ডারি স্কুলে ইংরেজি পড়ান। থাকেন রামটেকে। আমি রামটেক যাবো শুনে উচ্ছ্বসিত হয়ে নিজে থেকেই সঙ্গ দেবেন বলে জানালেন। তিনি নিজেও একজন সাইক্লিস্ট। মোড়ের দোকানটাতে ভাত-রুটি না পেয়ে ব্রেড-পাকোড়া আর চা খেয়ে পকেটে হাত দিতেই দোকানি জানালো উল্লাস ভাই বিল দিয়ে দিয়েছে। ব্রেড পাকোড়া জিনিসটাও মহারাষ্ট্রে বেশ চালু খাবার। আমাকে রামটেক বাসস্ট্যান্ডের দিকে এগোতে বলে উনি বাইকে চলে গেলেন।
মোড় থেকে খানিকটা এগোতেই রাস্তা ছাগলের দখলে। রাখাল মশাই রাস্তায় ধান ছড়িয়ে দিয়ে উদাস নয়নে দূরে তাকিয়ে আছেন। একটু এগোতেই রাস্তার চামড়া তথা কার্পেটিং উধাও। বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে ফোন করতেই স্কট কোম্পানির দামি একটা রোডবাইকে চড়ে এলেন উল্লাস ভাই। প্রথমেই নিয়ে গেলেন কুমারী মাতা বাওলি তথা সিঁড়ির ধাপযুক্ত কুয়াতে। জলে প্রচুর মাছ ছাড়াও শক্ত খোলের বেশকিছু কচ্ছপও নানান কসরত করে বেড়াচ্ছে।
এখান থেকে আমাদের উদ্দেশ্য রাম মন্দির। রামটেক থেকে কিছুটা এগিয়ে পাহাড় চূড়ায় এর অবস্থান। খাড়া রাস্তা ধরে উঠতে হয়। গিয়ার নিচে নামিয়ে প্রাণপণ প্যাডেলিং করতে করতে নিচে আম্বালা লেকের দেখা মিললো। পাড়ে বেশকিছু স্থাপনাও আছে এর। টানা উঠে রাম মন্দির বা গড় মন্দির। কথিত আছে, নির্বাসনের সময় ভগবান রাম ভাই লক্ষ্মণ আর সীতাসহ এখানে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। সেই থেকে নাগপুর শহরের এই তহসিলের নাম রামটেক। মন্দিরে ওঠার আগে হাতের ডানে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলে খিন্ডসি লেকের পাখির চোখের দৃশ্য দেখা যায়। এত বিস্তৃত আর বিশাল লেক নিকট অতীতে দেখিনি। এই পাহাড়ের ওপরেও মন্দির প্রাঙ্গণে অসংখ্য দোকান। রাম-লক্ষ্মণ দুজনেরই মন্দির আছে এখানে। মন্দিরের ওপরে উঠলে নিচের উপত্যকার দারুণ দৃশ্য দেখা যায়। আম্বালা আর খিন্ডসি নামে দুটো বড় লেক ছাড়াও আরও গোটা পাঁচেক ছোট লেক আছে ৪০ হাজার অধিবাসীর তহসিল রামটেকে।
মন্দির প্রাঙ্গণের একটা গৃহে এমন একটা প্রদীপ আছে, যা নাকি জ্বলছে কয়েকশ বছর ধরে। সেটিও পূজিত হয় এখানে। কার্তিক মাসে রাম মন্দিরে ভোর থেকে যে কীর্তন হয়, তাতে নাকি পুরো রামটেকের মানুষ অংশ নেয়। অসম্ভব ভিড় হয় তখন পাহাড়চূড়ার এই মন্দিরে। রাম মন্দিরেও একটা বাওরি আছে। বেরিয়ে গেলাম মহাকবি কালিদাস মেমোরিয়ালে। সংস্কৃত ভাষার অন্যতম সেরা কবি কালিদাসকে স্মরণ করতে বানানো হয়েছে এই বিশালাকার কমপ্লেক্স। কথিত আছে, এখানে বসেই কালিদাস ‘মেঘদূত’ রচনা করেছিলেন। মেঘকে দূত বানিয়ে প্রিয়জনকে বার্তা পাঠানোর এটাই তো ভালো জায়গা! ‘মেঘদূত’-এর নানান পংক্তি খোদিত আছে ম্যুরাল হিসেবে এই মেমোরিয়ালে।
রামটেকের সাইক্লিস্টরা আমার জন্য অপেক্ষা করছিল শহরের গান্দী চৌকে। ফুলের মালা, গোলাপ এসব দিয়ে বরণ করে নেওয়া হলো মহাত্মা গান্ধীর মূর্তিকে পেছনে রেখে। গিফট হিসেবে বেশ কয়েকটা ওরস্যালাইন জুসও নিয়ে এসেছেন ওরা। পরিচয় হলো খুদে সাইক্লিস্ট অভঙ্গের সঙ্গে। এই বয়সেই ছোটখাটো কিছু অর্জন ওর ঝুলিতে। বিদায় নিয়ে মানসারের পানে এগোনোর আগে আইস গোলা খাওয়া হলো সাইক্লিস্টদের পীড়াপীড়িতে। বরফের কুচির সঙ্গে কাজু, কিসমিস, ফলের মোরব্বা আর দুধ পাউডার মিলিয়ে বেশ দারুণ খেতে।
ফেরার পথে গেলাম মানসার বৌদ্ধ স্তূপাতে। ধারণা করা হয়, পঞ্চম শতাব্দীতে এই জায়গায় ছিল ভাকাতাকা রাজার রাজধানী। লাল ইটের স্তূপাটি আমাদের দেশের শালবন বিহারের মতো অনেকটাই। খোঁড়াখুঁড়ির কাজ এখনো পুরোটা শেষ হয়নি। মানসার থেকে মহাসড়কে উঠে চোখ দুটো খোঁজ করছে ধাবার। ভাইজি ধাবাতে গিয়ে বসতেই দমকা হাওয়া থেকে উদ্ভূত ধুলোয় জীবন জেরবার।
চলবে…
এএসএ/জিকেএস