সিকিম ভ্রমণে যে ভুল করলে বিপদে পড়তে পারেন

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২৩

সিকিমের সৌন্দর্য পুরো বিশ্ববাসীকেই আকৃষ্ট করে। এ কারণে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করেন সিকিমে। উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য ও উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র হলো সিকিম। এর রাজধানী শহর গ্যাংটক। আয়তনে ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম প্রদেশ এটি।

মোট ৬ লাখেরও বেশি জনসংখ্যাসহ সিকিমের মোট আয়তন হলো মোটমুটি প্রায় ৭০০০ বর্গ কিলোমিটার। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা পার্বত্যময় হওয়ায় সিকিমে গ্রীষ্মকালে বেশ দারুণ আবহাওয়া বিরাজ করে, তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রীর বেশি অতিক্রম করে না। তাই গ্রীষ্ম হতে পারে সিকিম ভ্রমণের সেরা সময়।

আরও পড়ুন: বিশ্বের ৬ স্থানে নারীদের প্রবেশ নিষেধ 

অন্যদিকে শীতকালে তাপমাত্রা হিমাঙ্কেরও নীচে নেমে যাওয়ার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা মেরুদণ্ড শিহরিত কম্পন অনুভব করে।

সিকিমের পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ সমস্তটাই বৈচিত্র্যময়। পাহাড়-পর্বত, পাহাড়ি ঝরনা, ওষুধি গাছের জঙ্গল, ঘন বন, সবকিছু মিলিয়ে এক আলাদা মাত্রা পায়ে সিকিম।

সিকিম প্রদেশটিতে ৪টি জেলায় বিভক্ত। উত্তর সিকিম, পূর্ব সিকিম, দক্ষিণ সিকিম ও পশ্চিম সিকিম। চলুন দেখে নেওয়া প্রতেকটি জেলার গুরুত্ত্বপূর্ণ স্থানসমূহ যেখানে ঘুরতে না গেলেই নয়। সিকিমে বেড়াতে গেলে কয়েকটা বিষয় সম্পর্তে জেনে রাখা জরুরি, না হলে বিপদে পড়তে পারেন।

আরও পড়ুন: এক জাহাজেই ঘুরতে পারবেন ১৩৫ দেশ, জানুন খরচাপাতি

বৃষ্টির জন্য প্রস্তুত থাকুন

সিকিমে প্রায় সারা বছর ধরেই বৃষ্টিপাত হয়। তাই সব সময় কিছু অতিরিক্ত পোশাক, একটি ছাতা বা রেইনকোট রাখতে ভুলবেন না। না হলে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজতে হবে।

সঙ্গে ওষুধ রাখুন

সিকিমের জনপ্রিয় পর্যটন স্থলগুলোই অনেকটা উচ্চতায় অবস্থিত। সেসব স্থানে যেতে গেলে পাহাড়ি ঘোরানো রাস্তা দিয়ে যেতে হবে।

সেক্ষেত্রে গা গোলানো, বমিভাব ইত্যাদি হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে ওষুধ সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না।

আরও পড়ুন: ভারত গিয়ে ঘুরে আসুন ‘বাংলার সুইজারল্যান্ডে’ 

সুবিধাজনক স্থানে থাকুন

পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে অ্যাডভেঞ্চারে মেতে ওঠেন কমবেশি সবাই। সিকিমে গিয়েও পাহাড়ি জঙ্গলে ট্রেক করা, জিপলাইনিং, কেবল্ কার রাইড, প্যারাগ্লাইডিং বা হেলিকপ্টার রাইডের মতো অ্যাডভেঞ্চার গেমে মেতে ওঠার আগে সতর্ক থাকতে হবে।

শারীরিক অবস্থা বুঝে তবে অ্যাডভেঞ্চারে মাতুন। পাহাড়ি পরিবেশে সবার স্বাস্থ্য ঠিক থাকে না। আবার স্থূলকায় হলে ট্রেকিং করবেন না, তাহলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

শুধু পূর্ব ও উত্তর সিকিমেই ঘুরবেন না

রাজধানী গ্যাংটক পূর্ব সিকিমে অবস্থিত ও ফুলের উপত্যকা, বিশ্বের উচ্চতম হ্রদ, শীতকালে তুষারপাত সহ নানা আকর্ষণীয় জিনিসগুলির দেখা মেলে উত্তর সিকিমে।

আরও পড়ুন: দেশের সবচেয়ে উঁচু ওয়াচ টাওয়ারে উঠে যা দেখবেন 

তাই বেশিরভাগ পর্যটকই পূর্ব ও উত্তর সিকিম ভ্রমণ করেন। তবে দক্ষিণ ও পশ্চিম সিকিমকে বাদ দিয়ে দেবেন না। পশ্চিম সিকিমের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়া দক্ষিণ সিকিমে দেখত পাবেন রাজ্যের একমাত্র চা বাগান ও অসংখ্য হ্রদ।

স্থানীয়দের এড়িয়ে যাবেন না

সিকিমের বাসিন্দা বেশ অতিথিপরায়ণ ও সরল। তাদের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বললেই দেখবেন সবাই আপনাকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকবেন। সিকিমের রেস্তোরাঁ বা ক্যাফেতে যান না কেন, সবাই আপনাকে স্বাগত জানাবে হাসিমুখে।

শুধু মোমো খেয়েই থাকবেন না যেন

সিকিমের মোমো অত্যন্ত সুস্বাদু। তাই বলে শুধু মোমো খেয়েই যেন পেট ভরাবেন না। সিকিমের খাবার খুবই সুস্বাদু। এখানকার রান্নার মধ্যে ভুটান, নেপাল, চিন ও তিব্বতের রান্নার প্রভাব স্পষ্ট।

আরও পড়ুন: নীলাচল ভ্রমণে থাকা-খাওয়া ও যাতায়াত খরচ কত? 

এছাড়া সেখানকার ৩টি প্রাধন উপজাতি, ভুটিয়া, লেপচা ও নেপালি রান্নার প্রভাবও আছে যথেষ্ট। নেওয়ারি, থাকালি, থুকপা, শ্যাফালে ও লাফিং হলো এখানকার কিছু সুস্বাদু খাবার।

উপযুক্ত পোশাক না পরা

যেহেতু সিকিম একটি পাহাড়ি অঞ্চল, তাই সেখানে আরামদায়ক স্পোর্টস জুতা ও ট্রেক প্যান্ট সঙ্গে নিন। পাহাড়ি রাস্তা ও ঢাল পাড়ি দেওয়ার জন্য আরামদায়ক পোশাকও সঙ্গে নিয়ে নিন। না হলে বিপদে পরবেন।

ভালো ট্রাভেল এজেন্সি বেছে না নেওয়া

সিকিমের মতো হিমালয় রাজ্যে প্রবেশের জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন। পারমিটগুলো প্রতিদিন সকালে জারি করা হয়। ট্যুর অপারেটররা খুব সহজেই পারমিটের জন্য আবেদন করে ও আপনাকে অনেক ঝামেলা বাঁচায়।

তাই সহজেই পারমিট পেতে ভালো ট্র্যাভেল এজেন্সি বেছে নিন। তারাই আপনার আরামদায়ক ভ্রমণের ব্যবস্থা করে দেবে। এমনকি কম খরচে থাকার ব্যবস্থাসহ ভ্রমণসূচী অনুযায়ী পারমিট পাওয়ার নিশ্চয়তা দেবে।

সূত্র: টুর জিন

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।