একদিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন মেলখুম ট্রেইলে

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪৪ পিএম, ১২ মার্চ ২০২৩

জুয়েল নাগ, মিরসরাই

ঘুরে আসুন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের একটি রোমাঞ্চকর ট্রেইলে। নাম তার মেলখুম ট্রেইল। নতুন এ পর্যটন কেন্দ্রের পরতে পরতে আছে রোমাঞ্চ। মেলখুমের প্রবেশের পর খাড়া উঁচু পাহাড়।

দুই পাশে ১০০-২০০ ফুট খাড়া পাহাড়ের মাঝে নিচে বালি বিছানো সরুপথ। মেলখুম একটি ট্রেইল, মোটামুটি একদিনের ভ্রমণের জন্য যথেষ্ট এই স্থান।

আরও পড়ুন: এক জাহাজেই ঘুরতে পারবেন ১৩৫ দেশ, জানুন খরচাপাতি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড মিরসরাই রেঞ্জে যতো ঝিরি আছে সবচেয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঝিরি এটি। এই ঝিরির কোথাও কোনো পাথর পাবেন না আপনি।

স্বচ্ছ পানিতে সূর্যের কিরণ লেগে সুন্দরীর সাদা বালির নাকফুলের মতো ঝিলিক দিয়ে আপনাকে বিমোহিত করবে পুরোটা পথ। আলো ছায়ার খেলায় স্বচ্ছ পানি কখনো কখনো গাঢ় নীল মনে হবে।

চোখের সামনে উড়ে বেড়াবে রং-বেরঙের ঘাস ফড়িং, প্রজাপতির ঝাঁক, পানিতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ে এসে খুনসুঁটি খেলবে ঝিরি ছোট মাছ, তারপর দেখা মিলবে গন্তব্যের মেলখুম।

আরও পড়ুন: ছুটির দিনে জিন্দাপার্ক ঘুরে যা যা দেখবেন

কূপের ভেতর দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে তারা পাহাড়ের বিস্তীর্ণ কঠিন সরু পিচ্ছিল পথ। সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। হালকা-পাতলা মানুষ হলে যেতে সুবিধা হবে।

নারী পর্যটকদের বেশি ভেতরে প্রবেশ না করাই ভালো। পিচ্ছিল পথে পড়ে হাত-পায়ে বা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

একদিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন মেলখুম ট্রেইলে

মেলখুমের নামকরণ

মেলখুমের আশপাশের স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, কোনো এক সময়ে পাহাড়ে মেল পাতা পিষে কুমের ভেতর দেওয়া হতো, পাতার বিষে খুমের ও পাহাড়ি ছড়ায় মাছ মারা যেত।

আরও পড়ুন: ট্রেনের চেইন কখন টানলে জরিমানা দিতে হয়?

মেল মিশ্রিত ছড়ার পানি যতটুকু যেত, ততটুকুতেই মাছ মরে থাকতো। এভাবে মাছ শিকারের জন্য মেল পাতার ব্যবহার করতে করতে এই এলাকার নাম হয়ে উঠে মেলখুম।

ট্রেইলের পথ পরিচিতি

ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ বাজার থেকে সোজা পূর্বদিকে সোনাপাহাড় এলাকায় নাহার এগ্রোর সামনে নামবেন। তারপর হাঁটা পথে পূর্বদিকে যে রাস্তা ধরে মূল ট্রেক, হাঁটা শুরু করলে ৫ মিনিট পর রেললাইন পাওয়া যাবে।

তারপর আর পাকা রাস্তা নেই, মাটির পাহাড় কাটা রাস্তা। মেঠো পথ ধরে যখন হাঁটবেন ১৫ মিনিট হাঁটার পর পাবেন ছোট একটি কালভার্ট।

একদিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন মেলখুম ট্রেইলে

আরও পড়ুন: মক্কা থেকে মদিনায় বুলেট ট্রেন চালাবেন সৌদি নারীরা

কালভার্ট থেকে হাতের ডানদিকে ছোট একটি ঝিরি আছে, সেই ঝিরিতে কোনো পাথর নেই। চিকন একটি ঝিরি, ৬-৭ ফিটের মতো। পাশে সেই ঝিরি ধরে উজানে হাঁটা শুরু করলেই ৪৫-৫০ মিনিট হাঁটলেই মেলখুমের সামনে যেতে পারবেন।

পুরো ট্রেইল শেষ করে ঘুরে আসতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। হাতের ডানে বামে অনেক পাহাড়ি ছোট রাস্তা আছে আপনি ঝিরি পথটা ধরে হাঁটতে হাঁটতে মেলখুমে পৌঁছে যাবেন।

সতর্কতা

যারা সাঁতার জানেন না, শ্বাসকষ্ট কিংবা ঠান্ডাজনিত সমস্যা আছে তারা যে কোনো খুমে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। কারণ খুমের পানি অনেক বেশি ঠান্ডা। মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে এই জায়গা।

একদিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন মেলখুম ট্রেইলে

আরও পড়ুন: প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে আসুন শিমুল বাগানে

অবশ্যই কয়েকজন মিলে যাবেন। বেশি ভারি ব্যাগ নিয়ে যাওয়া যাবে না। মেলখুমের রাস্তায় ভালো খাবার দোকান নেই তাই আপনার পছন্দমতো খাবার নিয়ে যেতে পারেন।

দূর দূরান্ত থেকে আসলে খাবার ও থাকার হোটেল হিসেবে বেছে নিতে পারেন বারইয়ার হাঁট পৌরসভার কিছু হোটেল রেস্তোরাঁ।

মেলখুমের প্রবেশের আগে ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ের আধা কিলোমিটার উত্তরে পাবেন আরশিনগর ফিউচার পার্ক ও রেস্তোরাঁ, তিন কিলোমিটার দক্ষিণে পাবেন মহামাইয়া লেক ও হান্ডি রেস্তোরাঁ।

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।