নায়াগ্রার সৌন্দর্য যেন মহাবিস্ময়
নায়াগ্রা ফলস প্রকৃতির এক অপরূপ সৃষ্টি। এই বৃহৎ জলপ্রপাতের টানে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায়। যুক্তরাষ্ট্রের বুক চিরে বয়ে যাওয়া নায়াগ্রা নদী পতিত হয়েছে কানাডায়। ফলে কানাডা থেকে নায়াগ্রার সৌন্দর্য অবাক করার মতো।
পৃথিবীতে এমন অনেক কিছু আছে যা আমাদের অবাক করে। নায়াগ্রা জলপ্রপাত তার মধ্যে একটি। এটি বিশ্বের বৃহত্তম জলপ্রপাত। এটি প্রকৃতির এক মহাবিস্ময়। যা সব প্রকৃতি পিপাসু পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। এখানে গেলে মনে হতে পারে পৃথিবীর সমস্ত পানির মোহনা বুঝি এটাই।
সে বিস্ময় চোখে নিয়েই আয়ারল্যান্ড থেকে ১৫ বারের মতো নায়াগ্রা ফলস দেখতে এসেছেন মেরি মর্নেল। তার ভাষায়, নায়াগ্রা যতোই দেখি ততোই অবাক হতে হয়। জানতে ইচ্ছে করে অপরূপ সৃষ্টির ইতিহাস ও ঐতিহ্য। জানি এসব কিছু অজানা থেকে যাবে। নায়াগ্রা ফলসে পানিপ্রবাহ সব সময় অবাক করার মতো।
নিউইয়র্ক এবং ওন্টারিও প্রদেশের মধ্যে অবস্থিত এ জলপ্রপাত। এতে পৌঁছানো খুব সহজ, কারণ এটি বিমান, সড়ক এবং রেলপথের সাথে ভালভাবে সংযুক্ত। নিকটতম বিমানবন্দরগুলো হলো- নিউইয়র্কের বাফেলো নায়াগ্রা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কানাডার ওন্টারিওতে লেস্টার বি. পিয়ারসন্ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অবস্থিত। নায়াগ্রা জলপ্রপাত টরন্টো থেকে মাত্র ১২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এ জলপ্রপাত দেখতে কোনো টাকা গুনতে হয় না। তবে ছোট জাহাজে চড়ে জলপ্রপাতের কাছে পৌঁছাতে ২৫ ডলার গুনতে হবে। এছাড়া অবজারভেশন এলাকা থেকে নায়াগ্রা দেখতে প্রায় ২ ডলার খরচ হবে। সপরিবারে নায়াগ্রা দেখতে এসেছেন মনোরথ প্যাটেল। ভারতীয় আমেরিকান পরিবারটি প্রতিবছরই এখানে বেড়াতে আসেন।
মনোরথ প্যাটেল বলেন, পরিবার মিলে উইসকনসিনে বসবাস করি। সময় পেলেই এখানে ছুটে আসি। বারবার দেখে অবাক হই। প্রকৃতির মোহনীয়তা নায়াগ্রা না এলে বোঝা যাবে না।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে নায়াগ্রা নামক দুটি নদী প্রবাহিত হয়েছে। বড় জলপ্রপাতের সৌন্দর্য দেখতে হলে কানাডা থেকে দেখতে হবে। জলপ্রপাত দুটি যে নদীতে প্রবাহিত হয়েছে তার অর্ধেক যুক্তরাষ্ট্রের এবং অপর অর্ধেক কানাডা অংশের। একটি মাত্র রেইনবো ব্রিজ দিয়ে উভয় দেশে যাতায়াত করা যায়। তবে এক্ষেত্রে উভয় দেশের ভিসা থাকতে হবে।
ছোট জাহাজে অনেক সময় দুদেশের পর্যটকবাহী জাহাজ মিশে যায়। তবে পতাকা দেখে এটা চিহ্নিত করা হয়। এসব জাহাজে পর্যটকদের তোলার আগে রেইনকোট পরানো হয়। ফলসের পাশে গেলে দেখা যায় প্রতি মিনিটেই একবার করে বৃষ্টি হচ্ছে। নায়াগ্রা নদী থেকে নিচে পানি প্রবাহের কারণে বারবার মেঘের মতো আবহ সৃষ্টি করে পর্যটকদের ভিজিয়ে দিচ্ছে।
এমওএস/এমকেআর