বিস্ময়কর যে জলাশয়ে গোসল করতেন ক্লিওপেট্রা!

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫২ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২১

বিস্ময়কর এক স্থান। উপর থেকে দেখলে মনে হবে বরফের সমুদ্র। যেন ঢেউ আছড়ে পড়ছে। স্থানটির সৌন্দর্য দেখলে যে কেউই বিস্ময় প্রকাশ করতে বাধ্য। প্রকৃতির অপরূপ এক সৃষ্টি।

তুরস্ক ভ্রমণে গিয়ে পামুক্কালে দর্শন করেননি এমন পর্যটক নেই বললেই চলে। দক্ষিণ-পশ্চিম তুরস্কের ডেনিজলি প্রদেশের একটি প্রাকৃতিক স্থান হলো পামুক্কালে। বিশ্বের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অধিক জনপ্রিয় স্থানটি।

jagonews24

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকাতেও নাম আছে পামুক্কালের। এ কারণেই প্রতিবছর অন্তত ২০ লাখ পর্যটক ভিড়েন ক্লিপেট্টার গা ভেজানোর স্থানটি দেখতে! বুঝতেই পারছেন স্থানটির জনপ্রিয়তা কতখানি। পামুক্কালের ছবি দেখে নিশ্চয়ই আপনারও সেখানে যেতে ইচ্ছে করছে!

তুর্কি ভাষায় পামুক্কালে শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো তুলোর দুর্গ বা কটন প্যালেস। মধ্য তুরষ্কে চাষ করা তুলো বাগানের সঙ্গে পামুক্কালের সাদা পাহাড়ের ঢালের মিল থাকায় তুর্কিরা একে তুলোর দুর্গ বলেন।

jagonews24

এর পাশেই আছে হাইরাপোলিস (রোমান স্পা শহর)। যেটি ১৯০ বিসিতে নির্মিত হয়। সেখানকার ধ্বংসাবশেষে একটি আদিম থিয়েটার ও সমাধিসহ নেক্রোপলিস আছে।

যা দুই কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট আশ্চর্যের এক অনন্য সংমিশ্রণের বিস্ময়কর পামুক্কালে-হিয়েরাপোলিস, বর্তমানে পর্যটন হটস্পটে পরিণত হয়েছে।

jagonews24

সাদা ক্যালসিয়াম জমার কারণেই সিঁড়ির মতো আকৃতির সৃষ্টি হয়েছে স্থানটিতে। কিছু সংস্করণে উল্লেখ আছে, পামুক্কালে পবিত্র পুল হিসেবে বিবেচিত।

কারণ সেখানে মিশরীয় রানি ক্লিওপেট্টা গোসল করতেন। তিনি মনের আনন্দে সাঁতার কাটতেন পামুক্কালের প্রাচীন জলাশয়ে! যেটি অ্যাপোলো মন্দিরের পাশেই অবস্থিত।

jagonews24

পামুক্কালে কটন ক্যাসল বা তুলোর দুর্গ নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। মুক্তার ন্যায় ঝকঝকে সাদা ল্যান্ডস্কেপ ও ফিরোজা রঙের ছোট ছোট অনেকগুলো জলাশয় আছে সেখানে।

আসলে পামুক্কালের ওই স্থানে কার্বনেট ক্যালসিয়াম খনিজ পদার্থের উষ্ণ প্রস্রবন ও সোপান আছে। যা সেখানকার প্রবাহিত পানির কারণে সৃষ্টি হয়েছে।

jagonews24

পামুক্কালের উচ্চতা ১০০ মিটারেরও বেশি। সেখানকার নিকটতম শহর ডেনিজলি থেকেও সাদা পাহাড়ের দেখা মেলে। ডেনিজলি শহরটি পামুক্কালে থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

পামুক্কালের উষ্ণ প্রস্রবণের পানির তাপমাত্রা থাকে ৩৫-১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে অন্তত ১৬৭টি উষ্ণ জলের প্রস্রবণ আছে।

jagonews24

১৯৮৮ সালে পামুক্কালে হিরাপোলিসের সঙ্গে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে স্বীকৃত পায়। এরপর থেকেই দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে সেখানে। জুন-আগস্ট পর্যন্ত পামুক্কালে ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।

বিস্ময়কর এই স্থানে যেতে হলে ইস্তাম্বুল থেকে ডেনিজলি (পামুক্কালে থেকে ১১ মাইল দূরে অবস্থিত) পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে সকালের ফ্লাইটে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পৌঁছাতে পারবেন পামুক্কালেতে।

jagonews24

দর্শনার্থীদেরকে খালি পায়ে টেরেসগুলো অতিক্রম করতে হয়। যাতে সূক্ষ্ম ক্যালসাইটে ক্ষয় বা দাগ না হয়। চাইলে প্রথমে অ্যাকোয়ামেরিন পুল ও পরে অ্যান্টিক পুলে সাঁতার কাটতে পারবেন। এজন্য সঙ্গে পোশাক রাখবেন।

সূত্র: ট্রাভেল/ট্রাভেল টক ট্যুরস/জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।