ঢাকার কাছে বালাপুর জমিদার বাড়ি

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ১২ আগস্ট ২০২১

বেশ কয়েকদিন টানা লকডাউনের পর অবশেষে খুলছে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো। আগামী ১৯ আগস্ট থেকে দেশের সব পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো খোলা থাকবে। এবার সুযোগ পেলেই ঢাকার খুব কাছে নরসিংদীর বালাপুর জমিদারবাড়ি থেকে একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন। শত শত বছর ধরে ইাতহাসের সাক্ষী হয়ে আজও মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে এই রাজবাড়িটি।

ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোর মধ্যে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নরসিংদী। এ জেলার সদর উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়েই বালাপুর জমিদার বাড়ি। এটি বালাপুর গ্রামে প্রায় ৩২০ বিঘা জায়গার জুড়ে রয়েছে জমিদার নবীন চন্দ্র সাহা প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী এই জমিদারবাড়ি।

jagonews24

নান্দনিক, দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর কারুকাজ করা আছে পুরো জমিদারবাড়িতে। বর্তমানে এই বাড়িটি হয়ে উঠেছে পর্যটনদের কাছে প্রিয় একটি দর্শনীয় স্থান। ঢাকার অতি নিকটে হওয়ায় একদিনেই ঘুরে আসা যায় এই রাজবাড়ি থেকে। পরিবার নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানোর পাশাপাশি প্রাচীন ইতিহাস আর ঐতিহ্যের নিদর্শনেও চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।

ইতিহাসের তথ্যমতে, জমিদার নবীন চন্দ্র সাহা ছিলেন ঐতিহ্যবাহী বালাপুর জমিদারবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা এবং অঞ্চলের প্রধান জমিদার। সে সময় প্রায় ৩২০ বিঘা জমির ওপর অত্র অঞ্চলের সবচেয়ে বড় এবং বিশাল আকারের এই বিলাসবহুল জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন তিনি।

jagonews24

জমিদার নবীন চন্দ্র সাহার তিন পুত্র ছিলেন। কালীমোহন সাহা, আশুতোষ সাহা ও মনোরঞ্জন সাহা। বাবা জমিদার নবীন চন্দ্র সাহা মারা যাওয়ার পর বড় পুত্র কালীমোহন সাহা জমিদার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদার কালীমোহন সাহা সপরিবারে ভারতে চলে যান। যাওয়ার আহে জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যান কর্মীদেরকে। ফিরে আসার কথা থাকলে আর দেশের মাটিতে পা রাখেননি কালমোহন।

jagonews24

এই বিলাসবহুল নান্দনিক কারুকার্য সমৃদ্ধ জমিদারবাড়ির ভবনটিতে ১০৩টি ছোট বড় কক্ষ ছিল। যার প্রতিটি কক্ষেই ছিল মোজাইক করা। ঘরের সব দরজা-জানালাগুলোতে ফুল লতা-পাতাসহ বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর কারুকার্য মণ্ডিত ছিল।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব কারুকার্য অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। ভবনটির পূর্বদিকে তিনতলা, উত্তর দিকে একতলা, দক্ষিণে দ্বিতীয় তলা এবং পশ্চিম দিকে একটি বিশাল আকারের গেট আছে।

jagonews24

বিশাল এই জমিদার বাড়িতে আরও আছে সান বাঁধানো পুকুরঘাট, কারুকার্য সমৃদ্ধ দুর্গাপূজার মণ্ডপ। মন্ডপের ভিতরের কারুকাজ দেখে জমিদারবাড়ির অতীত ইতিহাস চোখের সামনে ভেসে উঠে, জমিদারবাড়িতে সেই সময় অতিথিদের থাকা-খাওয়া ও ঘুমানোর জন্য ছিল আরও একটি সুন্দর এবং দৃষ্টিনন্দন ভবন।

বাড়ির পাশেই আছে বিশাল আকারের খেলার মাঠ। এ ছাড়াও ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বালাপুর নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। দৃষ্টিনন্দন বালাপুর জমিদারবাড়ি এরই মধ্যে সংস্কারের অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে।

কীভাবে যাবেন?

রাজধানীর গুলিস্তান থেকে মেঘালয় বাসে করে যেতে পারবেন নরসিংদী। ভাড়া পড়বে ৯০ টাকা। আর লোকাল বাসে করে গেলে ৩০-৪০ টাকার মধ্যেই পেঁছাতে পারবেন।

jagonews24

সেখান থেকে মাধবদী বাস স্ট্যান্ড নেমে রিকশায় ১০-১৫ টাকা দিয়ে মাধবদী গরুরহাট সিএনজি স্টেশন যেতে হবে। সেখান থেকে বালাপুরগামী সিএনজিতে চড়ে মাত্র ২০ টাকায় পৌঁছাতে পারেন বালাপুর জমিদার বাড়িতে।

জেএমএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।