শত বছরের বিস্ময় ১০১ কক্ষের জমিদার বাড়ি!

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৭ পিএম, ১৬ মে ২০২১

বিশালাকার এক জমিদার বাড়ি। আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কমবেশি সব জমিদার বাড়িগুলোই বেশ আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। তবে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী জমিদার বাড়ির বিশেষত্ব হলো এর ১০১টি ঘর।

দুইতলা ভবনের এই জমিদার বাড়ির কারুকাজ দেখে যে কেউই অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকবেন। আজও এর জৌলুস এতটুকুও কমেনি! তবে দালানটি নড়বড়ে হয়েছে সংস্কারের অভাবে।

jagonews24

আড়াইহাজার উপজেলা থেকে সাত-আট কিলোমিটার পূর্বে প্রায় ৬০ শতাংশ জমির ওপর বাড়িটি। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে গড়ে তোলা হয় এই ভবনটি। এই দালানটি সদাসদী জমিদার বাড়ি নামেও পরিচিত।

জমিদার বাড়িটি দোতালা এবং কারুকার্যখচিত। যা ১০১ কক্ষবিশিষ্ট বাড়ি। এই বাড়ির সামনে আছে একটি বড় উঠান। তিন দিকে আরো তিনটি বাড়ি। এখানে একটি বিশাল পুকুর আছে।

jagonews24

জানা যায়, দু’টি শানবাঁধানো ঘাট এবং ঘাটগুলোর মাঝে একটি দেয়াল ছিল। এই ঘাটগুলোর একটিতে পুরুষ, অন্যটিতে মেয়েরা গোসল করত। ঘাটের সিঁড়িগুলো এখনো আছে যা এখন প্রায় ধ্বংসের মুখে।

এই গোপালদী এলাকায় বাস করতে তিন জমিদার। তারা হলেন-সর্দার, তেলি ও ভূঁঞা। এই তিন বংশের মধ্যে সবচেয়ে বড় জমিদার ছিলেন সর্দার বংশধররা। সর্দার বংশের জমিদার ছিলেন শ্রী প্রসন্ন কুমার সর্দার।

jagonews24

তারা ছিলেন ৩ ভাই। জমিদার শ্রী প্রসন্ন কুমার সর্দারের এক ভাইয়ের নাম ছিলো মরিন্দ্র কুমার সর্দার আর অন্য ভাইয়ের নাম ছিলো শ্রী গোপাল চন্দ্র সর্দার। আর গোপাল চন্দ্রের নাম অনুসারে এই এলাকার নাম হয় গোপালদী।

এই জমিদার বংশের শেষ জমিদার ছিলেন গোপাল চন্দ্রের ছেলে খোকন সর্দার। যিনি স্বাধীনতার পরে ভারতে চলে যান। এখানে তিনটি জমিদার বাড়ির আরেকটি হলো ভূঁঞা জমিদার বাড়ি। ভূঁঞা জমিদাররা ছিলেন দুই ভাই। হরিচন্দ্র ভূঁঞা ও কানাইচন্দ্র ভূঁঞা। এই জমিদার বংশের শেষ জমিদার ছিলেন জগবন্ধু জমিদার।

jagonews24

আড়াইহাজারের এই জমিদার বাড়িগুলো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে পর্যটক ভিড় জমান। তারা শত বছরের এই বিস্ময়কর শত ঘরের বাড়িটি মুগ্ধ হয়ে দেখেন। প্রকৃতির মাঝে অবসর সময় কাটানোর সেরা এক স্থান হলো এই জমিদার বাড়ি।

সংস্কার অভাবে যদিও বাড়িটি এখন নড়বড়ে হয়ে গেছে। বাড়ির দেওয়ালেও জন্মেছে লতাপাতা। স্থানীয়দের মতে, দ্রুত সংস্কার না করলে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলো যেকোনো সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়বে।

jagonews24

যেভাবে যাবেন জিমিদার বাড়িতে

ঢাকা সায়দাবাদ থেকে অভিলাস পরিবহনে ৮০ টাকায় গোপালদী যেতে পারবেন। গুলিস্তান থেকে দোয়েল বা স্বদেশ পরিবহনে মদনপুর ৪৫ টাকা ভাড়ায় গিয়ে আড়াইহাজার বা গোপালদীতে সিএনজিযোগে যেতে পারবেন।

কুড়িল ফ্লাইওভারে ৩০০ফিট ক্রসিং থেকে লোকাল টেক্সিতে গাউছিয়া। ভাড়া পড়বে ৮০ টাকা। গাউছিয়া নেমে একটু সামনে গিয়ে লোকাল সিএনজিতে আড়াইহাজার বাজারে ৩০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন। এরপর আড়াইহাজার থেকে সিএনজিতে গোপালদী যেতে ভাড়া পড়বে ২৫ টাকা।

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।