বিশ্বের কোন দেশ কীভাবে ঈদুল ফিতর পালন করে?

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২০ পিএম, ১০ মে ২০২১

ঈদ মানেই আনন্দ। তবে ঈদুল ফিতরের আনন্দ ঈদুল আযহার চেয়ে অনেক বেশি। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনারত থেকে তবেই আলিঙ্গন করতে হয় ঈদুল ফিতর। এ কারণে মুসলিমদের কাছে এই ঈদের বিশেষত্বও বেশি। ‘ফেস্টিভ্যাল অব ব্রেকিং দ্য ফাস্ট’ হিসেবে ঈদুল ফিতরকে আখ্যা দেওয়া বিশ্বব্যাপী।

ঈদ মানেই নতুন পোশাক পরা। মজাদার সব খাবার খাওয়া। ঈদের নামাজ পরতে যাওয়া ও কোলাকুলি করা। এসব তো এদেশের ঈদের চিত্র। তবে জানেন কি, বিশ্বের কোন দেশে কীভাবে পালিত হয় ঈদুল ফিতর? তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, আইসল্যান্ড, মিশর ও নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের ৫টি দেশ কীভাবে ঈদ উদযাপন করে, সে বিষয়ে জানানো হলো-

তুরস্ক

তুরস্কের ঈদ উদযাপন সম্পর্কে জানলে আপনি রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন। তুর্কিবাসীরা ঈদ উদযাপন করেন সমুদ্র সৈকতে। তপ্ত রোদে সমুদ্র সৈকতে এসে ভিড় জমান সবাই। ঈদের ছুটি কাটাতে তুরস্কের বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতে পরিবারসহ সময় কাটান তুর্কিবাসীরা। তুরস্কের জনসংখ্যার প্রায় ৯৮ শতাংশই ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সেখানকার বিভিন্ন প্রদেশে ভ্রমণ করে।

jagonews24

এ ছাড়াও অনেকে ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন এবং ২য় ও ৩য় দিন তারা সমুদ্রে কাটান। এ সময় তারা মাছ ধরা, সাঁতার কাটাসহ এবং আনন্দ হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন। বালুকাময় উপকূলে বসে সমুদ্রের ঢেউ দেখেই পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে থাকেন তুর্কিবাসীরা। ঈদ মানে তাদের কাছে বিশ্রাম, আনন্দ, আবার বিশ্রাম!

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরে ঈদ উদযাপিত হয় বেশ জাকজমকতার সঙ্গে। গিলং সেরাই এলাকায় ঈদুল ফিতরের দিন রঙিন আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে। গিলং সেরাইয়ের রাস্তাগুলো ঈদ উপলক্ষ্যে সাজানো হয় বেশ ঘটা করে। ৫০টিরও বেশি আলোক এবং ভিজ্যুয়াল ইনস্টলেশনের মাধ্যমে আলোকসজ্জা করা হয় সেখানে।

jagonews24

গিলং সেরাইকে কেন্দ্র করেই সিঙ্গাপুরের ঈদুল ফিতরের উৎসব পরিপূর্ণতা পায়। সেখানেই সব মুসলিমরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ভিড় জমায়। ১০০ এরও বেশি খাবারের দোকান বসে। যেখানে ঐতিহ্যবাহী মালয় খাবার পরিবেশন পাওয়া যায়। চোখ ও পেট ভরাতে সিঙ্গাপুরে একবার হলেও ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে পারেন।

আইসল্যান্ড

আইসল্যান্ডবাসী ঈদের দিনও রোজা থাকেন। কারণ গ্রীষ্মের শুরুতে সূর্য স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকায় মধ্যরাতে সূর্যাস্ত যায় সেখানে। আইসল্যান্ডে বসবাসরত মুসলমানরা প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা রোজা রাখে। যদিও এটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তবে ইসলামিক নির্দেশনা অনুযায়ী, তারা নিকটতম দেশের সূর্যাস্তের সময়কালের ভিত্তিতে রোজা ভাঙেন।

jagonews24

আইসল্যান্ডের রাজধানী রেকজাভাকের কয়েকটি মসজিদে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। মসজিদের আশেপাশের এলাকাতেই অতিথিদের সমাগম ঘটে। সেখানেই তারা পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন। এ সময় তারা ইন্দোনেশিয়ান, মিশরীয় এবং এরিটরিয়ানে বিভিন্ন খাবার ও পানীয় খেয়ে থাকেন। শিশুরা নতুন পোশাক পরে ছোটাছুটি করে। এভাবেই আইসল্যান্ডবাসীরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

মিসর

অন্যান্য দেশের মতেই মিসরে ঈদুল ফিতর শুরু হয় ঈদের নামাজ পড়ার মাধ্যমে। এরপর পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের সঙ্গে যুবকদের দেখা করার নিয়ম আছে। এ সময় প্রবীণরা পরিবারের অল্পবয়সীদেরকে একটি ছোট টোকেন বা সালামি দেয়। অনেক মিসরীয়রা ঈদ উদযাপনের জন্য সরকারি বিভিন্ন উদ্যান এবং চিড়িয়াখানায় পরিবারসহ ঘুরতে যান। গিজা চিড়িয়াখানা সবার জন্যই অন্যতম জনপ্রিয় এক স্থান।

jagonews24

নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ঈদুল ফিতরের উত্সব শুরু হয় সকালের নামাজের মধ্য দিয়ে। তারপরে ইডেন পার্কে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাই অ্যানুয়াল ঈদ ডে’। সেখানে বিভিন্ন আয়োজন দেখতে একে একে ভিড় জমান নিউজিল্যান্ডবাসী। সেখানে বিভিন্ন কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিভিন্ন খাবারের দোকান বসে।

jagonews24

সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। অনেকটা সাংস্কৃতিক উৎসবের মতো উদযাপিত হয় নিউজল্যান্ডের ঈদুল ফিতর। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য যেমন শিক্ষামূলক; তেমনি বিনোদনমূলক। এটি সর্বস্তরের মুসলিম দর্শকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত।

সূত্র: ট্যুর হিরো

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।