সাদা কাশফুলে অপরূপ সাজে পানছড়ি
প্রতিটি ঋতুর রয়েছে আলাদা রূপ-বৈচিত্র্য। তাই প্রকৃতির ধারাবাহিকতায় শরৎ আসে অপরূপ নিজস্বতা নিয়ে। বৈশ্বিক উষ্ণতা আর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে প্রকৃতি যখন তার চিরায়ত রূপ হারাচ্ছে; তখন খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের দু’পাশে তাকালেই দেখা যাবে বাতাসে দোল খায় সাদা কাশফুল। সেই কাশবন যেন হয়ে উঠেছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোনো ছবি!
পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া চেঙ্গীর বিস্তীর্ণ এলাকা ঢেকে গেছে কাশফুলে। এ যেন নীল আকাশে সাদা মেঘের সাথে নদীর ধারে আর মাঠে-প্রান্তরে থোকা থোকা কাশফুলের নিবিড় মেলবন্ধন। কাশফুল ভেদ করেই খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কে চলছে ছোট-বড় যানবাহন। চোখে জুড়ানো এই অপরূপ সৌন্দর্য মন কাড়ছে স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীদের।
শরতের বিকেলে রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি উপেক্ষা করে যান্ত্রিক পরিবেশকে পেছনে ফেলে প্রকৃতির কাছ থেকে একটু প্রশান্তি পেতে প্রায়ই খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের বিভিন্ন কাশবনে ছুটে আসেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এখানকার কাশবন যে কারো মনকে উদ্বেলিত করে। চারদিকে কাশফুল, নদীর ধারে শরীর-মন জুড়িয়ে দেওয়া বাতাস। তাই কাশবনে বসে কেউ গল্প করছেন। আবার কেউ নিজের ছবি তুলছেন।
শুধু খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চেঙ্গী নদীর কূলে নয়, পানছড়ির উল্টাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলা পানছড়ি-তবলছড়ি সড়কের পাশেও ফুটে আছে কাশফুল। এ ছাড়াও খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়ক ছাড়িয়ে পানছড়ি-লোগাং সড়কের পাশে নালকাটার কাশবন যে কাউকে আন্দোলিত করবে।
কাশবনে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, ‘সাদা আর সবুজের মিলনমেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলা চেঙ্গী নদীর কূলে ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতিই অন্যরকম। সাদা মেঘের সঙ্গে এই কাশফুলের সাদা রং মনকেও সাদা করে দেয়।’
স্থানীয় সাংবাদিক শাহজাহান কবীর সাজু বলেন, ‘ঋতুপরিক্রমায় আসা শরৎ ঋতু সীমান্তঘেঁষা পানছড়িকে সাজিয়েছে অপরূপ সাজে। শরতের বিকেলে রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি উপেক্ষা করে কাশফুলের ছোঁয়া নিতে পানছড়িতে ছুটে আসছে বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীরা। চেঙ্গী নদীর বালুচর যেন পরিণত হয়েছে সাদা আর সবুজের মিলনমেলায়।’
শরতের এ সময়টাতে সাদা আর সবুজের সাথে একাত্ম হয়ে পানছড়ির মাঠে-প্রান্তরে ছুটে বেড়ায় কোমলমতি শিশু থেকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধরা। থোকা থোকা কাশবন পাহাড়ি জনপদ পানছড়িকে নতুন রূপে সাজিয়েছে। এ যেন বিধাতার অপরূপ দান।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসইউ/এএ/এমকেএইচ