বানর-রাজ্যে একদিন

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ , লেখক ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ১০:২৬ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৫

বানর চঞ্চল প্রকৃতির প্রাণি। প্রচলিত আছে- মানুষ একসময় নাকি বানর ছিলো। বানর দেখেতে যাওয়ার মধ্যে কোনো বাহাদুরি না থাকলেও শহরের বুকে বানরের বসতি দেখলে যে কেউ থমকে দাঁড়াবেন। বানর-রাজ্য খ্যাত মাদারীপুরের চরমুগুরিয়া বন্দরে তাই ভিড় জমে বানর দর্শনার্থীদের। আপনিও একদিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন।

বানর-রাজ্য কেন: আড়িয়াল খাঁ নদবেষ্টিত মাদারীপুর অঞ্চল একসময় বন-জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। স্থানীয়দের ধারণা, সুন্দরবন এক সময় বাকেরগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই বাকেরগঞ্জ হয়ে কিছু বানর মাদারীপুরে আসে। ১৯২০ সাল থেকে মাদারীপুরের কুলপদ্বী, পুরানবাজার ও চরমুগুরিয়া এলাকায় বানরের বিচরণ রয়েছে।

Banor

ধর্মীয় অনুভূতি: দেশ ভাগের আগে এ অঞ্চলে অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতি ছিল। অনেকে বানরকে দেবতা মনে করে কলা, ফল-মূল, মোয়া, মুড়ি, চিড়া ইত্যাদি খেতে দিত। আস্তে আস্তে এই বানরগুলো চরমুগুরিয়া বন্দরে মানুষের মাঝে থাকতে শুরু করে।

অবস্থান: ৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই বন্দরে বানররা মানুষের একান্ত পড়শী। ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট, রাস্তা-ঘাট এমনকি হাটের মধ্যে অবাধে বিচরণ করে। বানরগুলোকে চরমুগুরিয়া বন্দরের কালীবাড়ি, স্বর্ণকারপট্টি, জেটিসি, আদমজী, চাল আড়ৎ ও চৌরাস্তা এলাকায় বেশি বিচরণ করতে দেখা যায়।

বানরের সংখ্যা: বর্তমানে চরমুগুরিয়া বন্দরে প্রায় দেড় হাজার বানরের বসতি রয়েছে।

Banor

বিনোদন: বানর-রাজ্যে প্রবেশ করে কিছু খাবার ছিটালেই ছুটে আসবে বানরদল। খাবার না দিয়েও ঘুরে ঘুরে দেখতে পাবেন- কেউ গাছে ঝুলছে, কেউ বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছে, কেউ বাচ্চার মাথার উকুন মেরে দিচ্ছে। আবার কোনটি খুটে খুটে মাঠের ঘাস ছিড়ে খাচ্ছে, কোনটি আবার খাবারের জন্য অন্য বানরকে তাড়া করছে।

কীভাবে যাবেন: ঢাকার গাবতলী, গুলিস্তান ও কেরানীগঞ্জ থেকে সড়ক পথে ও সদরঘাট থেকে নৌ-পথে মাদারীপুর যাওয়া যায়। সড়কপথে সার্বিক ও চন্দ্রা পরিবহনে মাদারীপুর শহরে না গিয়ে চরমুগুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশা বা অটোরিকশায় বানর-রাজ্যে প্রবেশ করতে পারেন। গাবতলী থেকে বরিশালগামী যেকোনো বাসে মস্তফাপুর নেমে বাস বা অটোরিকশায় চরমুগুরিয়া যাওয়া যায়।

Banor

ঢাকার সদরঘাট থেকে নৌ-পথে পারাবাত, তরিকা, দ্বীপরাজ লঞ্চে চড়ে মাদারীপুর শহরে যাওয়া যায়। শহর থেকে রিকশা বা অটো রিকাশায় চরমুগুরিয়া যেতে হবে।

থাকা-খাওয়া: থাকতে চাইলে মাদারীপুর শহরে অবস্থান করতে হবে। সেখানে সার্বিক ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল পলাশ, সুমন হোটেল, হোটেল মাতৃভূমি, হোটেল সৈকত ও হোটেল জাহিদসহ বেশকয়েকটি হোটেল রয়েছে। সেখানেই খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বা বাহির থেকেও খেয়ে আসতে পারবেন।

ছবি- ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।