শুভ্রতার স্পর্শে : ক্লান্ত শরীরে ঘুমের দেশে

অতনু দাশ গুপ্ত
অতনু দাশ গুপ্ত অতনু দাশ গুপ্ত
প্রকাশিত: ০৪:৫৭ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৮

ঘরে ঢুকেই একটি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। আশেপাশে তাকিয়ে দেখি ছিমছাম ঘর! মনে হচ্ছে- আমার জন্যই বিশেষভাবে পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। নাকি এখানকার সব ঘরই এমন? তবে আশ্চর্যের বিষয়- এখন কেন জানি ক্লান্ত লাগছে না। তবে মনে হচ্ছে- এটা শরীরের একটানা পরিশ্রমের পর বেশ বড় একটি বিরতি নেওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি।

আমার বালিশের উপরে একটি কাগজে কিছু কথা লেখা ছিল। যার অর্থ দাঁড়ায়- ‘অতনু, স্বাগতম! তোমার ব্যবহারের জন্য ওয়াই ফাই পাসওয়ার্ড।’ সেখানে কিছু সংখ্যা লেখা ছিল, পরে মারসিয়া বলেছিলেন যে, এটা ওনার ফোন নম্বর।

jagonews24

ভাবছিলাম, উনি কোনো তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি শুধু পাসওয়ার্ড দেওয়া ছাড়া। কারণ উনি ভালোভাবেই জানেন- এসে প্রথমে আমি বাড়িতেই যোগাযোগ করবো, আর কিছু করি না করি! ‘ক্যানাডিয়ান চিন্তাধারা’ বলতে হয়! যদিও পরে জেনেছিলাম, উনি আসলে ইউক্রেনের। ফোনে নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়াইফাই অ্যাকটিভ করলাম।

ম্যাসেঞ্জার খুলে দেখছিলাম নতুন কোনো মেসেজ এসেছে কিনা? দেখলাম- কুন্তল দাদার ক্ষুদেবার্তা, যেটা কয়েক সেকেন্ড আগেই এসেছে। জবাব দিতেই হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবেই কল পেলাম দাদার কাছ থেকে। কানাডা আসার পর দেশ থেকে প্রথমবারের মত কোনো কল পেলাম, সাথে দেশের পরশও!

দাদাকে আমার ডেন্টালের লেখাপড়ার ‘গুরু’দের মধ্যে একজন বলে মানি। বিস্তারিত সব জিজ্ঞেস না করলেও মোটামুটিরকম স্বল্প কথায় সবকিছুই জেনে নিলেন। খুব খুশি হলেন ড্রাইভারের কথা শুনে! বললেন, যা ভেবেছিলেন তা-ই! এয়ারপোর্টে যা হয়েছিল তা বিস্তারিত বললাম- আমার পাগলামি আর উদ্ভ্রান্তের মত দৌড়ানোর কথা! কিছু অপরিচিত মানুষের আত্মীয়দের চাইতেও অধিক আত্মীয়তাসুলভ আচরণ!

দাদা কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলেন আর বললেন, ‘একটা লম্বা ঘুম দাও! কী জানি? লম্বা, মাঝারি, ছোট ঘুম হবে! জামা-কাপড় ছেড়ে পরমাত্মার নাম স্মরণ করে দিলাম ঘুমের রাজ্যে পাড়ি!

jagonews24

এখন পর্যন্ত মনে হয়, জীবনের দীর্ঘতম ঘুম ছিল ওটাই! রাত ৪টা নাগাদ শোবার পর দুপুর সাড়ে ১২টায় একবার ঘুম থেকে উঠে কিছুটা শোরগোল শুনতে পেলাম। কারণ নিউ ইয়ার ডে নিয়ে কোনো আয়োজন ছিল হয়তো! আবার শুয়ে একদম উঠলাম সন্ধ্যায়। হয়তো ৬টা কিংবা সাড়ে ৬টা নাগাদ।

নিদ্রাদেবীর ভান্ডারে আমার জন্য বরাদ্দকৃত অশেষ কৃপা যা ছিল, তার পুরোটাই দিয়ে দিলেন কিনা কে জানে! স্বাভাবিকভাবেই প্রচণ্ড ক্ষুধায় কাতর। বাইরে গেলাম সিঁড়ি বেয়ে নিচে যাব বলে। কিন্তুু এ কি? বিড়াল কার? এখন নিচে যাব কেমন করে? দেখলাম আমার দিকেই এগিয়ে আসছে! একদিকে ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছে, তার মধ্যে এমন বিড়াল বিভ্রাট!

চলবে...

এসএইচএস/এসইউ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।