বান্দরবানে প্রকৃতির খোঁজে হাজারো পর্যটক


প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, ২২ জুলাই ২০১৫

ঈদের ছুটি শেষে অফিস-আদালত আবার কর্মমুখর হয়ে উঠলেও পর্যটকদের বান্দরবানের দর্শনীয় স্থানসমূহ ঘুরে বেড়ানোর তৃপ্তি যেন কিছুতেই মিটছে না। সবুজের চাদরে ঢাকা প্রকৃতিকে দেখার এবং সারি সারি পাহাড়ের ওপর দিয়ে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন পার্বত্য জেলা বান্দরবানে।

bandarban

ঈদের আনন্দে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপভোগ করতে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। কোথাও কোন সিট খালি না থাকায় অনেক পর্যটক পড়েছেন বিপাকে। নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা, স্বর্ণ মন্দিরসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে এখন পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। পাহাড়ের সঙ্গে মেঘের লুকোচুরি খেলা এবং মেঘ উড়ে যাবার দৃশ্য দেখার জন্য পর্যটকরা ভিড় করছেন নীলাচল ও নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে। শৈলপ্রপাত আর মেঘলার লেকের জলে গা ভিজিয়ে নাগরিক ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন অনেকে।

bandarban

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা রোজিনা বলেন, পাহাড়ে মেঘের ভেলা আর রোদ-বৃষ্টির খেলা দেখতে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বান্দরবানে নীলাচলে এসেছি। সত্যেই পাহাড়ের ভাজে ভাজে মেঘ লুকিয়ে আছে। প্রতিবছর বান্দরবানে একবার আসার চেষ্টা করব।

এদিকে, বান্দরবানের নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের ম্যানেজার জয় ত্রিপুরা বলেন, বৃষ্টির কারণে ঈদের দ্বিতীয় দিন পর্যটক না আসলেও তৃতীয় দিন থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন পর পর্যটকদের দেখা পেয়ে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ছাড়াও খুশিতে মাতোয়ারা গাড়ি চালকরা।

bandarban

বাস-মিনিবাস, রিকশা-টমটম, সিএনজি থেকে শুরু করে পরিবহন সেক্টরে বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত খুশি। তাদের মতে বান্দরবানে কয়েকদিন ধরে হাজার হাজার পর্যটক যাওয়ায় দীর্ঘদিনের হতাশা কাটিয়ে নব উদ্যমে পর্যটন ব্যবসা চালু হয়ে উঠেছে।

পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী সাইফুল আলম জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকায় গত কয়েক বছর ব্যবসা হয়নি। শীতকালীন মৌসুম ছাড়াও প্রতি বছরে দুই ঈদ হচ্ছে আমাদের ব্যবসার অন্যতম মৌসুম। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় এই ঈদে হাজারো পর্যটকের দেখা মিলছে। পর্যটকগণ এভাবে পর্যায়ক্রমে আসতে থাকলে হয়ত অতীতের লোকসান টুকু পুষিয়ে উঠতে পারব।

বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, ঈদকে কেন্দ্র করে অর্ধ-শতাধিক হোটেল-মোটেল এক সপ্তাহের জন্য বুকিং হয়ে আছে। জেলা শহরের হোটেল প্লাজা ব্যবস্থাপক রাহাত বলেন, আমাদের পুরো হোটেল অনেক আগেই বুকিং হয়ে গেছে। একটা সিটও খালি নেই।

bandarban

বান্দরবান আবাসিক হোটেলের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, হাজারো পর্যটকের ঢল নেমেছে বান্দরবানে । শহরের আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্ট হাউসগুলো কোথাও কোনো সিট খালি নেই। আরো কয়েকদিন এ অবস্থা বিরাজ করবে।

এদিকে, পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব সময় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ। আর প্রত্যেকটা পর্যটন কেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পর্যটকরা যাতে কোন ধরনের ছিনতাই বা হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সৈকত দাশ/এআরএ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।