গোকর্ণ গ্রামে আনন্দ ভ্রমণ

শাহরিয়ার কাসেম
শাহরিয়ার কাসেম শাহরিয়ার কাসেম , কবি ও কথাসাহিত্যিক
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মেঘলা আকাশ। চারদিকে বৃষ্টির আনাগোনা। মাঝে মাঝে টিপটিপ বৃষ্টি ঝরছে। গাছের পাতাগুলোও দমকা বাতাসে নড়ছে। থেমে নেই মানুষের চলাচল। ঈদের আমেজে সবাই ফিরছে যার যার আপন ঠিকানায়। কেউ বা ব্যস্ত কেনাকাটায়। সকালে রোদ প্রখর থাকলেও হঠাৎ বৃষ্টির আগমনে রাস্তা-ঘাট ছিপছিপে। তবুও আমার যেতে হবে আজ গোকর্ণ নবাব শামসুল হুদার বাড়ি দর্শনে। মাঝপথে শাফি মাহমুদ ভাই ও বকুল ভাই আমার জন্য প্রহর গুনছেন।

gokorno

আচমকা আকাশে সূর্যের তাপের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে লাগল। মনে হল যেন ভাদ্রের ছোঁয়া পেলাম। নাসিরনগর পৌঁছলে সঙ্গীদের মোটরসাইকেলে করে গেলাম ঐতিহ্যবাহী গোকর্ণ গ্রামে। যে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন নবাব স্যার সামসুল হুদা। নবাব স্যার সামসুল হুদা সম্পর্কে বাড়তি বলার প্রয়োজন অাছে বলে মনে হয় না। কারণ তাঁর দৃষ্টিনন্দন বাড়িটি দেখলেই সে সময়ের এতিহ্য আঁচ করা যায়।

gokorno

নবাব স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামে ১৮৬২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। এছাড়া ১৯১০ সালে সমগ্র ভারতের মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ১৯২২ সালে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

gokorno

নবাব বাড়িটি দেখার সময় কালে পূর্বাভাস ছাড়াই চলে আসে ছোট ভাই এস এম নাইম ইসলাম ও ছাব্বির অাহমদ। তাদের পেয়ে ছোট্ট ভ্রমণটা আরো প্রাণবন্ত হলো। নবাব বাড়ির পাশেই নির্মিত হয়েছে চোখজুড়ানো মসজিদ। দুপুরের নামাজ এ মসজিদেই আদায় করলাম।

gokorno

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাওর বেষ্টিত ও সরকার ঘোষিত দুর্গম উপজেলা নাসিরনগর। ইতিহাসের পাতায় নাসিরনগর নামটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। সময়ের ধারাবাহিকতায় কালের করাল গ্রাসে এ এলাকার ঐতিহ্য, অহংকার ক্রমশ জীর্ণ-শীর্ণ, বিস্মৃত হচ্ছে। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা নাসিরনগর বহু পীর-দরবেশ, সাধক আর জ্ঞানী-গুণীর জন্মস্থান।

gokorno

অনেকেই নাসিরনগরকে ভাটির দেশ বলে থাকেন। আজ একদল অগ্রজের সাথে সেই ভাটি অঞ্চল ঘুরে সত্যিই ভালো লাগল। ভাটির মানুষের জীবনযাত্রা, প্রকৃতি ও পরিবেশ মনোরম। তবে ভেসে অাসা একেকটা ঢেউ নাড়িয়ে দেয় এ আঞ্চলের মানুষের হৃদয়। তবে আমার ভ্রমণের দু’দিন ভালোই লেগেছে।

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।