ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন ঢাকার পাশেই


প্রকাশিত: ০৪:৪৬ এএম, ২৩ জুলাই ২০১৪

রাজধানী ঢাকায় থেকেও শত ব্যস্ততার কারণে পাশ্ববর্তী অনেক জায়গা দেখা হয়নি। দেখা হয়নি বিভিন্নবিনোদন ও ভ্রমণকেন্দ্রগুলোও। তাই এই ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার পাশের কয়েকটি জায়গায়।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ
ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভারের নবীনগরে রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণউৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রথম বিজয় দিবসে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মোট ১০৮ একর উচুঁ-নিচু টিলা আকৃতির জায়গার উপর বিস্তৃত সবুজ ঘাসের গালিচায় আবৃত দেশি-বিদেশি গাছের বাগান আর লাল ইটের রাস্তা সমৃদ্ধ এই সৌধটি ভ্রমণকারীদের আকর্ষণ করে। আর এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে কৃত্রিম লেক। সৌধ চত্বরের আশপাশের পুরো এলাকাটিই ছায়াঘেরা। ফলে এই গরমে ঘুরে বেড়াতে ভালোই লাগবে সবার। জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢুকতে কোনো প্রবেশ মূল্য লাগে না। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এটি খোলা থাকে।

কীভাবে যাবেন-
ঢাকার গুলিস্তান ও গাবতলী থেকে নবীনগর, ধামরাই ও মানিকগঞ্জগামী যেকোনো বাসে সাভারের নবীনগরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনেই নামা যায়। ভাড়া ৩০-৩৫ টাকা।

ফ্যান্টাসি কিংডম
আশুলিয়ার জামগড়ায় গড়ে উঠেছে বিশ্বের আধুনিক সব রাইড নিয়ে বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডম। রোলার কোস্টার, শান্তা মারিয়া, ম্যাজিক কার্পেটসহ আনন্দদায়ক ও রোমাঞ্চকর বেশকিছু রাইড আছে এখানে। তবে এখানে সর্বশেষ সংযোজন জলের রাজ্যে বেড়ানোর মজাদার আর রোমাঞ্চকরসব রাইডসমেত ওয়াটার কিংডম। মজার মজার ১১টি রাইড ছাড়াও রয়েছে বেড়ানোর অনেক জায়গা। কৃত্রিম সমুদ্র সৈকত ওয়েবপুল, বিশাল উঁচু জায়গা থেকে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে জল ভর্তি পুলে পড়ার জন্য স্লাইড ওয়ার্ল্ড, টিউব স্লাইড, পরিবারের সবাই মিলে আনন্দ করা যাবে ফ্যামিলি পুলে।

এ ছাড়া লেজি রিভার, ওয়াটার ফল, ডুম স্লাইড, লস্ট কিংডম, প্লে জোন, ড্যান্সিং জোনের মতো মজারসব রাইডও আছে এখানে। ওয়াটার কিংডম প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বছরের সব দিনই খোলা থাকে। এখানে যেতে হলে অবশ্যই ভিজতে হবে। তাই সাথে নিয়ে যেতে হবে বাড়তি পোশাক আর তোয়ালে। তবে এসব পোশাক ভাড়ায়ও পাওয়া যাবে এখানে। ফ্যান্টাসি কিংডমের পাশেই হেরিটেজ পার্কে আছে ঐতিহ্যের পরিপূর্ণ ভাণ্ডার। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর অনেকগুলোই চোখে পড়বে এখানে। এগুলো মূল স্থাপনার অবিকল আদলেই তৈরি করা হয়েছে হেরিটেজ পার্কে।

কীভাবে যাবেন-
মতিঝিল থেকে মঞ্জিল পরিবহন, হুইল লাইন্স ওয়াটার কিংডম মগবাজার, মহাখালি, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও আশুলিয়া হয়ে। আর হানিফ মেট্রো সার্ভিস যায় মতিঝিল থেকে ছেড়ে শাহবাগ, শুক্রাবাদ, আসাদগেট, শ্যামলি, গাবতলি, সাভার, নবীনগর হয়ে। ভাড়া ৪০-৫০ টাকা।

নন্দন পার্ক
সাভারের অদূরে চন্দ্রার বাড়ই পাড়ায় রয়েছে নন্দন পার্ক। এখানকার ড্রাই জোনে মজাদার বেশ কিছু রাইড থাকলেও এর মূল আকর্ষণ ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে। এসবের মধ্যে প্রথমেই বলা যায় ওয়েবপুলের কথা। যারা কখনও সমুদ্রে যাননি কিংবা গেলেও ভয়ে সমুদ্র জলে স্নান করেননি তাদের আফসোস অনেকটাই মেটাতে সক্ষম হবে মজাদার এই রাইডটি। এটি আসলে একটি কৃত্রিম সমুদ্র সৈকত। সাত হাজার বর্গফুটের এই সৈকতে আছে সমুদ্রের মতোই বড় বড় ঢেউ। তবে এত বড় ঢেউয়ের মধ্যেও নামতে কিন্তু কোনো ভয় নেই। টিউবে চড়ে ঢেউয়ের তালে ভেসে বেড়াতে পারেন ইচ্ছে মতো।

এখানকার ওয়েব রানার হলো ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের আরেক মজার রাইড। ৭০ ফিট উচু থেকে জলভর্তি উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে জলভর্তি পুকুরে পড়ার মজা পাওয়া যাবে এই রাইডটিতে। এ ছাড়া ফ্যামিলি কার্ভ স্লাইড, ওয়াটার ফান প্লাজা, ডুম স্লাইড, মাল্টি প্লে জোনসহ মজার মজার সব রাইড আছে এখানে। ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের পুরোটাই পানির রাজ্য। তাই বলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই পানিতে ডুবে যাওয়ার কোনো ভয় নেই। ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের সময় প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা। আর বছরের সব দিনই খোলা থাকে এটি। ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে গেলে আপনাকে অবশ্যই ভিজতে হবে। তাই সাথে বাড়তি পোশাক নিতে হবে। তবে বাড়তি পোশাক বহনের ঝক্কি এড়াতে চাইলে পার্কের ভেতরেই ভাড়ায় পোশাক পাওয়া যাবে।

কীভাবে যাবেন-
ঢাকা থেকে নন্দন পার্ক যাওয়ার কয়েকটি রুট আছে। আবাবিল পরিবহন মতিঝিল থেকে ছেড়ে গুলিস্তান, মগ বাজার, মহাখালি, বনানি, উত্তরা, আশুলিয়া ইপিজেড হয়ে যায়। আর সুপার বাস মতিঝিল থেকে ছেড়ে গুলিস্তান, শাহবাগ, আসাদগেট, গাবতলী, সাভার, নবীনগর, ইপিজেড হয়ে যায়। ভাড়া ৫০-৬০ টাকা।

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান
গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর থানা জুড়ে অবস্থিত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৬৪৭৭ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। এ ছাড়াও নানা রকম গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ এ উদ্যান। জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বেশ কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র, ১৩টি কটেজ ও ৬টি রেস্ট হাউস আছে।

কীভাবে যাবেন-
গাজীপুর থেকে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে যেতে হলে নিজস্ব পরিবহন না থাকলে জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে লোকাল বাস কিংবা টেম্পু যোগে উদ্যানের মূল প্রবেশপথের সামনেই নামা যায়।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।