রমনা পার্কে কী আছে দেখার মতো

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২৫

সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমি

মনের প্রশান্তি আর একঘেয়েমি দূর করার জন্য ঘোরাঘুরি আসলেই দরকার। জীবনে ছোট পরিসরে আমার সাথে পরিচয় হয়েছিল মেহজাবিন আর বুশরার সাথে। ঘোরাঘুরি তেমন আগে কখনো করা হয়নি। তবে বুশরার সুবাদে হয়েছিল। গাইডও ছিল ওইদিন বুশরা। আমাদের আগে থেকে কোনো পরিকল্পনা থাকতো না কোথায় যাবো? হঠাৎ করেই দুপুরের দিকে ঠিক হলো যে আমরা বের হবো। কিন্তু কোথায় যাবো? ভারী মুশকিল হলো তো এবার। হঠাৎ করে তিনজন মিলেই বললাম, রমনা পার্কে যাওয়া যায়। যেই ভাবা সেই কাজ। রওয়ানা দিলাম রিকশা নিয়ে। আমি আর মেহজাবিন ছিলাম সিটে বসা আর বুশরা ছিল রিকশার ওপরে।

বিজ্ঞাপন

রমনা পার্ক বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র। রমনা এলাকা ছায়া সুনিবিড় মনোরম একটা উদ্যান। প্রতিষ্ঠার সময় ১৬১০ সালে। ৬৮.৫০ একর জায়গা নিয়ে পার্কটি অবস্থিত। প্রতি বছর ছায়ানটের উদ্যোগে রমনা পার্কের বটমূলে পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রিকশায় যেতে যেতে শাহবাগের দিকে চোখে পড়লো ফুলের দোকান। ফুল তো মনের ভেতর পরশ মাখা অনুভূতি জাগায়। এরপর কিছুটা হেঁটে শিশুপার্ক অতিক্রম করেই পৌঁছে গেলাম মূল ফটক দিয়ে রমনার ভেতরে। প্রবেশ করতে কোনো প্রকার টাকা লাগে না। ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়লো সবুজের এক বিশাল সমারোহ।

রমনা পার্কে কী আছে দেখার মতো

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মন ভালো করতে প্রকৃতির যেন বিলম্ব হয় না। শহরের মাঝে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা খুঁজে পাওয়াই যেন দুষ্কর। সবুজে ঢাকা মোঘল আমল থেকে প্রায় ২১১ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে এখানে। জলরাশির এক শীতল ঠান্ডা বাতাস শরীর মনকে পুলকিত করে দেয়। আমরা আশেপাশে ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম অসংখ্য লতাগুল্ম, ছোট বড় দুর্লভ প্রজাতির বৃক্ষ, পাদাউক, কেয়া, কৃষ্ণচূড়াসহ নানা মৌসুমি ফুলের সমাহার। লেকের দৈর্ঘ ৮১২ মিটার এবং প্রস্থ ৯ থেকে ৯৪ মিটার।

jagonews24

এমন পরিবেশে আসবো আর ছবি তুলবো না, তা কখনো হয়। কিন্তু মেহজাবিন কোনো প্রকার ছবি তুলবে না। জোর করে ক্যামেরাবন্দি হলাম তিনজন। আমি তো তালিপামের ওখানে গিয়ে একটু উঁকি দিয়ে ছবি তুললাম। আমার ক্যামেরা ম্যান ছিল বুশরা। আসলে সবুজের জন্য পরিবেশটা সুন্দর। কিন্তু মানুষ সেটাকে অযোগ্য করে ফেলছে। অনেক মানুষের আনাগোনা ছিল। কেউ হাঁটছে তো কেউবা ঘুরছে। পরিবেশটা আসলেই সুন্দর। বসার অনেক জায়গা আছে। নিরিবিলি পরিবেশ। ভেতরে খাবারের দাম অনেক বেশি। তাই খাওয়া হয়নি কিছুই। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায় পার্কটি। তাই কী আর করা? বের হয়ে গেলাম।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

পার্কের পাশেই ছিল ফুসকা। খেলাম কিনে তিনজন। তারপর হাঁটতে হাঁটতে যাচ্ছি। কিন্তু কোন দিকে যাচ্ছি জানি না। বুশরা বলে ও চেনে। ভয়ও লাগছিল। সন্ধ্যা হয়ে গেছে এদিকে। ওইদিন এমন একটি দিন; যেদিন পুরো বাংলাদেশে একই সময় বিদ্যুৎ ছিল না। হাঁটতে হাঁটতে যাচ্ছি। সামনে যত যাচ্ছি; তত ভয় যেন বাড়ছে। তেমন মানুষের আনাগোনা ছিল না।

রমনা পার্কে কী আছে দেখার মতো

মেহজাবিন আর আমি তো ভয়েই শেষ। বেশি ভীতু আমি ছিলাম। হঠাৎ একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, ‘তোমরা উল্টো চলে আসছো।’ আর কী করার? আবার পেছনে ফিরে গেলাম। একটা রিকশা ঠিক করলাম। যেহেতু রাত প্রায় হয়ে আসছে। দেরি না করে উঠে পড়লাম রিকশায়। ফিরে এলাম আমাদের আবাসস্থলে। দিনটি একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর ছিল; তেমনই ছিল সবুজের সাথে পরিচিত হওয়া। সবুজ মানেই প্রকৃতি। তাই শহরজুড়ে প্রকৃতিকে জানতে হলে এখানে আসাই যায়।

বিজ্ঞাপন

লেখক: শিক্ষার্থী, অনার্স ২য় বর্ষ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।