ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৮ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
আহসান মঞ্জিলের বয়স বর্তমানে ১৫০ বছরেরও বেশি

আহসান মঞ্জিলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। রাজধানীর পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী ইসলামপুরের কুমারটুলী এলাকায় মাথা উঁচু করে স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে এই মঞ্জিল। নবাবদের তৈরি আহসান মঞ্জিলের বয়স বর্তমানে ১৫০ বছরেরও বেশি।

আহসান মঞ্জিলকে ঢাকা শহরের প্রথম ইট-পাথরের তৈরি স্থাপত্য নিদর্শন মনে করা হয়। তৎকালীন নবাবদের হাতে এই ভবনেই সর্বপ্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠে। এক সময় ঢাকা শহরের সবচেয়ে উঁচু গম্বুজ ছিল আহসান মঞ্জিলের প্রাসাদের ছাদের ওপরের সুন্দর গম্বুজটি।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

আহসান মঞ্জিল দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথমভাগে মূল ভবন ও অন্যটি অন্দরমহল যা দ্বিতলা বিশিষ্ট। একসময় মূল ভবন ও অন্দরমহলের মাঝে সংযোগ সেতু থাকলেও বর্তমানে এটি অচল ও বেহালদশায় পড়ে আছে।

কী কী দেখবেন আহসান মঞ্জিলে?

মূল ভবনের নিচতলায় আছে ১০ রুম ও উপরের তলায় ১৪ রুম। নিচ তলায় মধ্যে উনবিংশ শতাব্দীর সৈনিকদের বর্ম, নবাবদের ব্যবহৃত ধাতব, পিতল, সিরামিক ও চিনামাটির তৈরি নানা ধরনের আসবাবপত্র।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

আরও আছে ফানুস, জগদান, ফলপাত্র, আতরদান, বক্ষণাস্ত্র, শিরণাস্ত্র, দাঁতসহ হাতির মাথার কঙ্কাল, বিলিয়ার্ড টেবিল, বক্স, ভল্টসহ দৈত্যাকার আলমারি ও সিন্ধুক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

শেখ এনায়েত উল্লাহর তৈরি প্রমোদভবনটি একসময় নবাবদের আবাসিক ভবন ও জমিদারদের সদর কাচারি হিসেবে চালু থাকলেও বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

আরও পড়ুন

১৮৫৯ সালে নওয়াব আব্দুল গনি এটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন ও ১৮৭২ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। প্রাণপ্রিয় পুত্র খাজা আহসান উল্লাহর নামে এর নামকরণ করা হয় ‘আহসান মঞ্জিল’।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

১০ নং রুম দিয়ে দোতলায় ওঠার জন্য পাকা সিঁড়ি আছে। দোতলায় আছে বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের প্রতিকৃতি। এছাড়া আছে নবাবদের ব্যবহৃত হাতির দাঁতের হাতপাখা, পাশার ঘুটি, সাদা সিমেন্টের তৈরি ভাস্কর্য, লাইব্রেরি কক্ষ, টাইপ মেশিন পানিশোধন যন্ত্র, বৈদ্যুতিক হিটার, বৈদ্যুতিক মিটার।

আরও আছে ঝাড়বাতি, প্রাসাদ ড্রইিং রুম, দর্শনার্থী বিশ্রামাগার, বলরুম নাচঘর, দৈত্যাকার হল গ্র্যান্ড পিয়ানো, ক্রিষ্টাল টেবিল, ঘোড়ার হাতল বিশিষ্ট চেয়ার, গুপ্ত স্থানে যাওয়ার জন্য দুটো সিঁড়ি।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

আহসান মঞ্জিলের অন্দরমহলে আছে অফিস, ঘোড়ার গাড়িতে সলিমুল্লাহর ভাস্কর্য, নওয়াবদের, মোটরযান (ডিওরোমা), নওয়াবদের বজরা, স্টিমার, প্রভাবশালী কর্মচারীদের প্রতিকৃতি, শয়নকক্ষ ও হাম্মামখানা, ইমারজেন্সি সিঁড়ি।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

এছাড়া আহসান মঞ্জিলে আছে বিশাল বাগান, ফুল ও ফল গাছ, দোতলা থেকে নামার জন্য দৈত্যাকার সিঁড়ি যা ফটোগ্রাফিপ্রেমী দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু, প্রবেশ পথে রয়েছে দর্শনার্থীদের ব্যাগ রাখার সুব্যবস্থা।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

কীভাবে পৌঁছাবেন আহসান মঞ্জিলে?

আহসান মঞ্জিলে যেতে ঢাকার সদরঘাটগামী যে কোনো বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে নেমে যেতে হবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে কিংবা ৩০ টাকা রিকশা ভাড়ায় আহসান মঞ্জিল যেতে পারবেন।

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিলে

অথবা ঢাকার যে কোনো জায়গা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত এসে রিকশা অথবা সিএনজি নিয়ে সদরঘাট হয়ে আহসান মঞ্জিল দেখতে যেতে পারেন।

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।