দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই দেখুন কাঞ্চনজঙ্ঘা

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২২ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া

কাঞ্চনজঙ্ঘার অভূতপূর্ব সৌন্দর্য সবাইকে বিস্মিত করে। শীতে যেন এই পর্বতের সৌন্দর্য দ্বিগুন বেড়ে যায়। তাই পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়ে হিমালয়ে। তবে এই মুহূর্তে যারা ভারত ভ্রমণ করতে পারছেন না তারা জানলে অবাক হবেন, দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব দৃশ্য। এজন্য বেড়িয়ে পড়তে পারেন ঠাকুরগাঁও কিংবা পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে। শুধু পঞ্চগড় নয় ঠাকুরগাঁও থেকেও এর দর্শন মেলে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের অন্যতম এক সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। ৮ হাজার মিটারেরও (২৬ হাজার ফুট) অধিক উচ্চতা এই পর্বতের। ৫টি পর্বতচূড়ার কারণে একে ‘তুষারের ৫টি ঐশ্বৰ্য’ বলা হয়। সর্বোচ্চ উচ্চতার এই দৈত্যাকার পর্বতের দেখা পেতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটকরা ভিড় জমান সেখানে।

ভারতের সিকিম ও নেপালের সীমান্তাঞ্চলে অবস্থিত এ পর্বতের চূড়া অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা যায়। খুব ভোরে অর্থাৎ সাড়ে ৬-৭টার মধ্যেই দৃশ্যমান হয় কাঞ্চনঝঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। প্রতিবছরই শীত এলে হিমালয়ের এই পর্বতশৃঙ্গের দেখা মেলে। তবে প্রতিদিনই যে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলবে তা কিন্তু নয়।

দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই দেখুন কাঞ্চনজঙ্ঘা

স্থানীয়দের মতে, সকাল সাড়ে ৬-৭টার মধ্যে এর দেখা মেলে। সকাল ১০টা পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই দেখা যায়। তারপর ধীরে ধীরে ঝাপসা হয় পর্বতের দৃশ্য। আবার শেষ বিকেলে যখন সূর্যকিরণ তির্যক হয়ে পড়ে বরফের পাহাড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।

কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য অনেক পর্যটকই এ সময় ভিড় জমান ঠাকুরগাঁও জেলায়। তবে আকাশে মেঘ বা কুয়াশা থাকলে অনেক সময় নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয় দর্শনার্থীদের। কেবল মেঘও ও কুয়াশামুক্ত আকাশ থাকলেই দেখা দেয় কাঞ্চনঝঙ্ঘা।

দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই দেখুন কাঞ্চনজঙ্ঘা

কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও যা যা দেখবেন পঞ্চগড়ে

কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও পঞ্চগড়ে আরও দেখতে পাবেন সবুজের নৈসর্গ সমতল ভূমির চা বাগান। সীমান্ত নদী মহানন্দার পাড়ে বসে সূর্যাস্ত দর্শন, মোঘল আমলের স্থাপত্য মির্জাপুর শাহী মসজিদ, বার আউলিয়ার মাজার, গোলকধাম মন্দির, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট।

দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই দেখুন কাঞ্চনজঙ্ঘা

এছাড়া দেশের একমাত্র পাথর সমৃদ্ধ পাথরের জাদুঘর রকস ‘রকস্ মিউজিয়াম’, জেমকন গ্রুপের কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের আনন্দ ধারা, শিশুপার্কেও ঘুরে আসতে পারেন। মএকই সঙ্গে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন ভিতরগড় দুর্গনগরী ও ১৫০০ বছরের পুরাতন সুবিশাল মহারাজার দীঘি, ভূগর্ভস্থ ও নদী থেকে পাথর উত্তোলন দেখলে পর্যটকদের চোখ জুড়িয়ে যাবে।

কীভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন?

ঢাকা থেকে পঞ্চগড় বা তেঁতুলিয়া অথবা বাংলাবান্ধায় যেতে পারেন দূরপাল্লার কোচে। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে যেতে পারেন পঞ্চগড়। এরপর পঞ্চগড় থেকে বাস, মাইক্রোবাস, কার বা যে কোনো যানবাহনেই পৌঁছাতে পারবেন তেঁতুলিয়া উপজেলায়।

দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই দেখুন কাঞ্চনজঙ্ঘা

তেঁতুলিয়া জেলা পরিষদের দুটি ডাকবাংলো আছে। উপজেলা প্রশাসনের পিকনিক কর্নার ও বেরং কমপ্লেক্স নামে দুটি আবাসন আছে। এছাড়া উপজেলা সদরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বেশ কয়েকটি হোটেল গড়ে উঠেছে। ডাকবাংলে থাকতে চাইলে আগে থেকে বুকিং দিতে হবে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বুড়িরবাঁধ এলাকা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়া দেখতে পারবেন।

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।