সোনারগাঁও জাদুঘরে কখন ও কীভাবে যাবেন?

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৮ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২৪
ছবি- সোনারগাঁও জাদুঘর

ঢাকার আশপাশে যারা একদিনেই ঘুরে বেড়াতে চান, তাদের জন্য সেরা এক স্থান হতে পারে সোনারগাঁও জাদুঘর। খুব কম খরচে ও কম সময়েই ঢাকা থেকে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সোনারগাঁও জাদুঘর থেকে।

ঢাকা থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় অবস্থিত এই জাদুঘর। গ্রামবাংলার লোক সংস্কৃতির ধারাকে পুনরুজ্জীবন, সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য গড়ে উঠেছে ‘বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন’, যা সোনারগাঁও জাদুঘর নামে পরিচিত।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীন লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (সোনারগাঁও জাদুঘর) প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে এটি ঐতিহাসিক পানাম নগরীর একটি পুরোনো বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়।

পরে ১৯৮১ সালে ১৫০ বিঘা আয়তনের কমপ্লেক্সে এ দেশের সাধারণ মানুষের শৈল্পিক কর্মকাণ্ডের পরিচয়কে তুলে ধরতে শিল্পী জয়নুল আবেদীন এই জাদুঘর গড়ে তোলেন।

সোনারগাঁও জাদুঘরে যা আছে দেখার

জাদুঘরে প্রবেশ করলেই প্রথমে চোখে পড়বে প্রায় ১০০ বছরের প্রাচীন এক অট্টালিকা ভবন। এই ভবন পুরোনো বড় সর্দার বাড়ি নামে পরিচিত। এর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন স্থাপত্য ভাস্কর্য দুটি ঘোড়া।

জাদুঘরে আরও আছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের তৈরি গরুর গাড়ির ভার্স্কয, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভার্স্কয ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ভার্স্কয। যা দেখে যে কোনো পর্যটকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

সর্দার বাড়িতে মোট ১০টি গ্যালারি আছে। গ্যালারিগুলোতে কাঠ খোদাই, কারুশিল্প, পটচিত্র ও মুখোশ, আদিবাসী জীবনভিত্তিক নিদর্শন, গ্রামীণ লোকজীবনের পরিবেশ, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির নিদর্শন।

আরও পড়ুন

এছাড়া তামা-কাসা-পিতলের নিদর্শন, লোহার তৈরি নিদর্শন, লোকজ অলংকারসহ আছে অনেক কিছু। ভবনটির সামান্য পূর্বে আছে লোকজ স্থাপত্যকলায় প্রতিষ্ঠিত জয়নুল আবেদীন স্মৃতি জাদুঘর। এই ভবনটিতে আছে মাত্র দুটি গ্যালারি।

এই দুটি গ্যালারির মধ্যে একটি গ্যালারি কাঠের তৈরি। যা প্রাচীন ও আধুনিক কালের নিদর্শন সমৃদ্ধ। গ্যালারির বাইরে আছে পাঠাগার, ডকুমেন্টেশন সেন্টার, সেমিনার হল, ক্যান্টিন। আরও আছে কারুমঞ্চ, গ্রামীণ উদ্যান ও বিভিন্ন রকমের বৃক্ষ, মনোরম লেক, লেকের মাঝে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌ বিহার, মৎস্য শিকারের সুন্দর ব্যবস্থা ও পঙ্খীরাজ নৌকা।

জাদুঘরের মধ্যে কারুশিল্প গ্রামও দেখতে পাবেন। সেখানে লোকজ স্থাপত্যে তৈরি হওয়া মানোরম ঘরগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের অজানা অচেনা। অথচ দক্ষ কারুশিল্পীরা বাঁশ বেত, কাঠ খোদাই, মাটি, জামদানি, নকশিকাঁথা, পাট শিল্প, ঝিনুক,কামার, শঙ্খ শিল্প, রেশম শিল্প, একতারা ইত্যাদি উৎপাদন করছেন।

চাইলে পরিবার নিয়ে ইতিহাস-ঐতিহ্যকে খুব কাছ থেকে দেখতে ঘুরে আসুন সোনারগাঁও জাদুঘর থেকে। ছুটির দিনে ঘোরার জন্য উপযুক্ত স্থান এই জাদুঘর। বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্যের সাক্ষী এ জাদুঘর প্রতিনিয়ত বাঙালি ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণের প্রতীক হয়ে উঠছে।

কখন যাবেন ও প্রবেশ মূল্য কত?

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতি সপ্তাহের বুধ ও বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে। এছাড়া সপ্তাহের বাকি ৫ দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাদুরঘর। এই জাদুঘরে ঢুকতে জনপ্রতি প্রবেশ ফি লাগবে ৫০ টাকা। তবে ছাত্রছাত্রীদের জন্য জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা।

কীভাবে যাবেন?

রাজধানীর গুলিস্তান থেকে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় যাওয়ার যে কোনো বাসে চড়ে বসুন। মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় নেমে ৩০-৪০ টাকা রিকশা ভাড়ায় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে পৌঁছে যাবেন। নিজের গাড়ি থাকলে খুব সহজে ও কম সময়ের মধ্যেই আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে।

জেএমএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।