মনের ক্লান্তি মেটাতে বর্ষায় ঘুরে আসুন নিকলী হাওরে
নিকলী হাওরের অবস্থান কিশোরগঞ্জ জেলায়। এর নাম এসেছে নিকলী উপজেলা থেকে। মূলত সেখান থেকেই হাওরটির উৎপত্তি। নিকলী ছাড়াও এই হাওরের পরিধি পার্শ্ববর্তী মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। ঢাকা থেকে এর দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার।
ভ্রমণপিপাসুদের মনের ক্লান্তি মেটানোর এক অপরূপ স্থান নিকলী হাওর। সেখানে খুঁজে পাওয়া যায় গ্রামীণ পরিবেশের ছোঁয়া। যতদূর চোখ যায় হাওরের স্বচ্ছ জলরাশি আর সাদা তুলার মতো মেঘ। বিশাল জলরাশির মাঝে ছোট ছোট গ্রাম। যেন একেকটি দ্বীপরাষ্ট্র। হাওরজুড়ে গলা ডুবিয়ে থাকা হিজল গাছের সারি, করচের বন, শুশুকের লাফালাফি মুহূর্তেই মন ভালো করে দেয়।
সেখানে পৌঁছে নৌকা রিজার্ভ করে আপনার যাত্রা শুরু করতে পারেন। সেখানকার বাসিন্দারাই মূলত নৌকার মাঝি। তারা মাছ ধরা পেশার সঙ্গেও জড়িত। প্রতিবছর বর্ষায় নিকলী বেড়িবাঁধে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। এতে স্থানীয় নৌকার মাঝি ও হোটেল-রেস্টুরেন্টের মালিকদের ব্যবসাও ভালো হয়।
বর্ষাকালে ট্রলারের মাধ্যমে পর্যটকদের হাওরে ঘুরিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন সিদ্দিক মিয়া। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘সারা বছরই আমরা এই বর্ষার অপেক্ষায় থাকি। এ সময় হাওরে পর্যটকদের আগমন ঘটে। তাদেরকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে হাওরের কয়েক হাজার মাঝি ও মালিকের জীবিকার ব্যবস্থা হয়।’
আরও পড়ুন
- ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় আছে এশিয়ার যত দুর্গ
- মাচুপিচু-মাসাইমারা, আদিবাসী সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত ১০ স্থান
কিশোরগঞ্জের হাওরগুলোর চিরায়ত রূপের সঙ্গে নতুন সংমিশ্রণ ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম এর লম্বা-সরু সুন্দর সড়কটি। দু’পাশে পানি আর মাঝ দিয়ে সুন্দর রাস্তা। আর আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে সাদা বক। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। নিকলী ভ্রমণের উপযুক্ত সময় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস। তবে সেপ্টেম্বরে তুলনামূলক পানি কম থাকে।
এদিকে চোখ জুড়াবে জেলেদের নৌকা ও শিশুদের সাঁতার কাটা দেখেও। লোভ সামলাতে না পেরে পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি করে ক্লান্ত শরীরকে ভিজিয়ে নিতে পারেন আপনিও। তারপর নৌকায় বসে হাওরের মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
প্রথমেই পৌঁছাতে হবে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে। এরপর কালিয়াচাপরা সুগার মিল এলাকা থেকে সিএনজি করে নিকলী হাওর চলে যাবেন। সময় লাগবে ঘণ্টাখানেক। আবার পুলের ঘাট নেমেও আধা ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছাতে পারবেন হাওরে।
নিকলীতে থাকার জন্য বেশ কিছু আবাসিক হোটেল আছে। চাইলে সেখানে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। তবে অনেকেই সারাদিন হাওর ভ্রমণ করে সন্ধ্যা হতেই ফিরে যান নিজ গন্তব্যে।
জেএমএস/এমএস