মৃত্যুঝুঁকি জেনেও যে রাস্তায় অ্যাডভেঞ্চারে যান পর্যটকরা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে বিপজ্জনক অনেক রাস্তা। মৃত্যুঝুঁকি আছে জেনেও অনেকেই প্রয়োজনের তাগিদে এসব রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করেন। তেমনই এক বিপজ্জনক রাস্তা হলো পাকিস্তানের কারাকোরাম হাইওয়ে।
এই রাস্তা ‘এনএইচ৩৫’ বা ‘কেকেএইচ’ নামেও পরিচিত। ১৩০০ কিলোমিটারের (৮১০ মাইল) এই জাতীয় মহাসড়ক পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের হাসান আবদাল থেকে গিলগিট-বালতিস্তানের খুঞ্জেরাব পাস পর্যন্ত বিস্তৃত। এই সড়ক দিয়ে চীনেও প্রবেশ করা যায়।
বিশ্বের বিপজ্জনক রাস্তার তালিকায় কারাকোরাম হাইওয়ের নাম থাকলেও এটি খুবই জনপ্রিয় বিশ্ববাসীর কাছে। মৃত্যুঝুঁকি আছে জেনেও পর্যটকরা অ্যাডভেঞ্চারের জন্য এই রাস্তায় যান।
জানলে অবাক হবেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ পাকা রাস্তাগুলোর মধ্যে একটি হলো কারাকোরাম হাইওয়ে। এর উচ্চতা ১৫ হাজার ৪৬৬ ফুট। পাকিস্তানের কারাকোরাম পর্বতমালার মধ্য দিয়েই তৈরি হয়েছে এই বিপজ্জনক রাস্তা।
অত্যধিক উঁচু হওয়ার কারণে কঠিন আবহাওয়ায় এই রাস্তায় যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। রিপোর্ট অনুসারে, ১৯৭৮ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে হাইওয়েতে ১০০০ জনেরও বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন
পিচ্ছিল রাস্তা, তুষারপাত, ভূমিধস এমনকি পাহাড় থেকে পাথর পড়ারও ঝুঁকি আছে বিপজ্জনক এই হাইওয়েতে। যেহেতু মহাসড়কে অবরোধ ও দুর্ঘটনা একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, তাই দক্ষ চালকরাই শুধু নিরাপদে ওই রাস্তায় যানবাহন চালাতে পারেন।
এর মনোরম অবস্থান ও উচ্চ-ঝুঁকির কারণে হাইওয়েটিকে ‘বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
হাইওয়েটি পাকিস্তান ও চীনের প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছিল।
প্রায় ২০ বছর ধরে নির্মিত হয় সর্বোচ্চ উচ্চতাসম্পন্ন এই হাইওয়ে। জানা যায়, এটি নির্মাণের সময় ৮১০ জন পাকিস্তানি শ্রমিক ও ২০০ চীনা শ্রমিকের প্রাণ গেছে।
হাইওয়েটি বর্তমানে একটি ‘কুলুঙ্গি’ দুঃসাহসিক পর্যটন গন্তব্য হয়ে উঠেছে। যদিও পাকিস্তানী পর্যটকদের তুলনায় আন্তর্জাতিক পর্যটকদেরই বেশি আকর্ষণ করে হাইওয়েটি।
কারাকোরাম হাইওয়ে দর্শনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো বসন্ত বা শরতের শুরুতে। শীতে প্রায়ই ভারী তুষারপাতে আচ্ছন্ন থাকে হাইওয়েটি। তখন পরিস্থিতি বুঝে কর্তৃপক্ষ অনেক সময় বন্ধও রাখেন রাস্তাটি।
জেএমএস/এমএস