সিলেটের ডাউকি নদী ভ্রমণে কখন যাবেন, কোথায় থাকবেন?

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২৭ এএম, ৩০ মে ২০২৪
ছবি-এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার নদী হলো ডাউকি

সিলেট ভ্রমণে দেখে আসতে পারেন এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার ডাউকি নদী থেকে। সিলেট বিভাগের দুই জেলায় ডাউকা ও ডাউকি নামে দুটি নদী আছে। ডাউকা নদীর উৎপত্তিস্থল সুনামগঞ্জ জেলার চাতল নদী হতে। অন্যদিকে ডাউকি নদী ভারতে মেঘালয় রাজ্যের শিলং মালভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে নদীটি উৎপন্ন হয়েছে।

এটি একটি ক্ষুদ্র পাহাড়ি নদী। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ভারতের মেঘালয় ও বৃহত্তর সিলেটের উত্তরাংশের মধ্যে সীমানায় অবস্থিত একটি চ্যুতির নাম ডাউকি।

ডাউকি খরস্রোতা এক পাহাড়ি নদী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নদীটি সাপের মতো এঁকেবেঁকে গেছে। দেশের সীমানায় অভ্যন্তরে প্রবেশের পর এটি দক্ষিণ-পশ্চিম অভিমুখী সুনামগঞ্জ জেলার দিকে প্রবাহিত হয়েছে।

মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের সময় উজানের জলনিষ্কাশন অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে নদীর স্রোত বেড়ে যায়। শিলং মালভূমির পাহাড়গুলো থেকে স্রোতের সঙ্গে বড় বড় গণ্ডশিলা নদীতে প্রবাহিত হয়।

নদীবাহিত এসব গণ্ডশিলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংগ্রহ করে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়। ডাউকি নদী স্থানীয় নৌ-যোগাযোগের একটি মাধ্যমও বটে।

নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই নদী ও এর আশপাশের এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি লীলাভূমি। প্রতিবছর বিশেষ করে, শীতকালে এ নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে হাজারো মানুষ। চাইলে অন্যান্য সময়ও যেতে পারেন ডাউকির সৌন্দর্য দর্শনে।

ডাউকি নদী খাসী ও জয়ন্তিয়া অঞ্চল দিয়ে বয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। স্বচ্ছ কাঁচের মতো ডাউকি নদীর জলই দেখলে নদী ছেড়ে কোথাও যেতে ইচ্ছে করবে না। এমনকি মাছের খেলাও আপনি দেখতে পাবেন লাইভ।

আরও পড়ুন

নদীতে নৌবিহার করতে করতে কীভাবে যে দিন কেটে যাবে বুঝতেই পারবেন না। নদী ছাড়াও অবশ্য ডাউকিতে দেখতে পাবেন ঝুলন্ত সেতু। এটি ব্রিটিশদের দ্বারা ১৯৩২ সালে নির্মিত হয়েছিল। যদিও সেতুটি বাংলাদেশের সীমানায় নয়। তবে দেখা যায় এদেশ থেকেই।

নদীতে নৌবিহার করতে করতে মনে হবে যেন শূন্যে ভাসছেন। এতই স্বচ্ছ তার জল। পাহাড়ঘেরা নদী ও শহরের বর্ণনা দেওয়ার বোধ হয় নতুন করে প্রয়োজন হয় না।

জানেন কি, ডাউকিকে এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০০৩ সালে এই গ্রামকে গডস ওন গার্ডেন হিসেবে অভিহিত করা হয়।

কীভাবে যাবেন?

জাফলং ভ্রমণকালে প্রথমে আপনাকে সিলেট শহরে যেতে হবে। দেশের সব স্থান থেকেই বাস, টেন বা প্লেনে করেও সিলেট শহরে যেতে পারবেন। সেখান থেকে জাফলং যেতে হবে।

এরপর সিলেট থেকে প্রায় সব ধরনের যানবাহনেই জাফলং যেতে পারবেন। লোকাল বাসে যেতে শহরের শিবগঞ্জ যেতে হবে। জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৮০ টাকা। সিএনজি বা অটোরিকশায় ১২০০-২০০০ টাকায় জাফলং পৌঁছাতে পারবেন।

অন্যদিকে মাইক্রোবাস যাওয়া-আসার জন্য রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে প্রায় ৩০০০-৫০০০ টাকা। তবে সিলেট নগরীর যে কোনো অটোরিকশা বা সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে সহজেই জাফলং যাতে পারবেন।

দলগতভাবে গেলে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে গেলে সুবিধাও পাবেন আবার খরচও কমে আসবে প্রত্যেকের। পাশাপাশি চলতি পথে আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোতেও ঢুঁ মেরে আসতে পারবেন। তবে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই দরদাম করে নিতে হবে।

কোথায় থাকবেন?

জাফলংয়ে থাকার জন্য তেমন ভালো কোনো ব্যবস্থা নেয়। থাকতে হলে গেস্ট হাউজ, রেস্ট হাউজ, জেলা পরিষদের বাংলোতে আগে থেকেই বুকিং দিতে হয়।

এ কারণে পর্যটকরা সারাদিন জাফলং ঘুরে রাতে আবার সিলেটে ফিরে আসেন। সেখানে আপনি সাধ্যের মধ্যে যে কোনো হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।