মিরসরাইয়ের আরশিনগরে পর্যটকদের ভিড়

এম মাঈন উদ্দিন
এম মাঈন উদ্দিন এম মাঈন উদ্দিন , উপজেলা প্রতিনিধি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৩:৩৫ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

পর্যটকের ঢল নেমেছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র আরশিনগর ফিউচার পার্কে। শুক্রবার ও শনিবার রেকর্ড পর্যটক প্রবেশ করেছে এই পর্যটন স্পটে।

সকালে পর্যটক কিছুটা কম থাকলেও দুপুরের পর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ছুটি পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ঘুরতে আসছেন এখানে। বিশেষ করে ছোট শিশুদের জন্য অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র এটি।

আরও পড়ুন: ছুটির দিনে ঘুরে আসুন ঐতিহাসিক পানাম সিটিতে 

জানা গেছে, ৯ বছর আগে মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ১২ একর জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে এটি। বিনোদনের কথা চিন্তা করে পার্কটি গড়ে তোলেন মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন দিদার।

jagonews24

এখানে আছে থাকার জন্য কটেজ, খেলার রাইডার, বেবি শপ, চকোলেট শপ, রেস্টুরেন্ট, ফুডজোন, কৃত্রিম লেক, কমিউনিটি সেন্টার, মুক্ত মঞ্চ, রেস্টুরেন্টসহ অনেক রাইড আছে। বিশেষ করে শিশুদের বিনোদনের জন্য অন্যতম স্পট এটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পার্কের মূল গেইটের বাইরে টিকিট কাউন্টারে মানুষের জটলা। ভেতরে লোকজন ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শিশুরা বিভিন্ন রাইডে খেলাধুলা করছেন।

আরও পড়ুন: বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ বাড়ি 

কেউ লেকের পাড়ে পড়ে খোশ গল্পে মেঠে উঠেছেন। অনেকে প্রিয়জনদের নিয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত। কেউ রেস্টুরেন্টে, কেউ রেস্টুরেন্টের বাইরে বসে নাশতা করছেন

jagonews24

কেউ কেউ পার্কে স্থাপিত বিভিন্ন পাখি ও প্রাণীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। শিশুরা মোটু, পাতলুসহ বিভিন্ন প্রতিকৃতির সঙ্গে আনন্দ করছে। মূল গেইটের বাইরে বাড়তি আকর্ষণ আছে শীতকালীন ভাপা ও চিতই পিঠার আয়োজন।

ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের সমিতি বাজার এলাকা থেকে শিশুদের নিয়ে ঘুরতে আসা শহীদ উল্লাহ- সালমা দম্পতি বলেন, ‘এটি তো আরশিনগর বাড়ির পাশে অবস্থিত। তাছাড়া এটি বাচ্চাদের খুব পছন্দের জায়গা। সময় সুযোগ পেলে বাচ্চাদের নিয়ে এখানে ঘুরতে চলে আসি। খুব মজা করে বাচ্চারা।’

আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণে কী কী দেখবেন? 

মিরসরাই উপজেলার দক্ষিণ ওয়াহেদপুর থেকে আসা মহিবুল হাসান বলেন, ‘আমরা ৪ বন্ধু মিলে প্রথমে মুহুরী প্রজেক্ট গিয়েছিলাম। দুপুরের পর আমরা আরশিনগর ঘুরতে এলাম। পুরো পার্ক ঘুরেছি, অনেক সুন্দর পার্কটি। বিশেষ করে বিভিন প্রাণী ও পাখিদের প্রতিকৃতি খুব ভালো লেগেছে।’

jagonews24

এখানে ঘুরতে আসা স্কুল ছাত্র তন্ময় বলেন, ‘আমাদের স্কুল বন্ধ। তাই আম্মুর সঙ্গে বেড়াতে এসেছি। আরশিনগরের নাম অনেক শুনেছি। এবার প্রথম এলাম। খুব ভালো লাগছে।’

ফরহাদ হোসেন নামে এক পর্যটক বলেন, ‘একটু সময় পেলে আরশিনগর ছুটে আসি। এখানে খুব ভালো লাগে সময় কাটাতে। তবে ১০০ টাকা টিকিটটা একটু বেশি মনে হয়। আজ পার্কের গেইটের বাইরে ভাপা পিঠা খেলাম।’

আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে বড় গুহাটি কোথায়? 

টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার ও শনিবার প্রায় ৩ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। আরও প্রায় ৩০০-৪০০ মানুষ টিকিট ছাড়া রেফারেন্সে প্রবেশ করেছে। প্রতি টিকেট ১০০ টাকা। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য টিকিট প্রয়োজন হয় না ‘

পার্কের ভেতরে কুলিং কর্নারের দায়িত্বে থাকা মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘অবরোধের কারণে অনেকদিন পর্যটকে ভাটা পড়েছিল। গত কয়েকদিন ভালো পর্যটক আসছে। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।’

jagonews24

আরশিনগর ফিউচার পার্কের স্বত্ত্বাধিকারী নাসির উদ্দিন দিদার বলেন, ‘৯ বছর আগে ১২ একর জায়গায় মানুষের বিনোদনের কথা চিন্তা করে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য পার্কটি করেছি। আমার মেয়ে আরশির নামে নামকরণ করা হয়েছে পার্কটির।’

আরও পড়ুন: বিশ্বের যে ৮ দেশে গিয়ে স্থায়ী হতে পারবেন সহজেই 

‘গত কয়েকদিন ছুটির কারণে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক পর্যটক এসেছে। আশা করছি চলতি ডিসেম্বর মাসে ছুটি থাকায় ও নতুন বছরের প্রথম দুই মাস পর্যটক আরও বাড়বে।’

তিনি আও বলেন, ‘পার্কটি শিশুদের বিনোদনের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে করা হলেও সব বয়সী মানুষের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে শতভাগ নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। আরও আছে, থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা। ’

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।