‘পৃথিবীর স্বর্গ’ বলা হলেও ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি

মামুনূর রহমান হৃদয়
মামুনূর রহমান হৃদয় মামুনূর রহমান হৃদয় , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৩

স্বচ্ছ আকাশ, সবুজে ঘেরা পাহাড় আর নীল জলের মিতালীতে ঘেরা এক দ্বীপ। যেখানে গেলেই মিলে প্রকৃতির সান্নিধ্য। এর ছোঁয়া পেয়ে মুগ্ধ হয়েছেন অনেক ভ্রমণপ্রেমী। তাইতো ভালোবেসে অনেকে ডাকেন পৃথিবীর স্বর্গ বলে।

হ্যাঁ এমনি একটি দ্বীপের নাম ‘বোরা বোরা’। প্রশান্ত মহাসাগরের দেশ ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার অংশ এই বোরা বোরা দ্বীপ। রাজধানী পপেইট থেকে প্রায় ২৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এর অবস্থান।

আরও পড়ুন: চীনের নিষিদ্ধ শহরে যা দেখে চোখ হবে ছানাবড়া

গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাঁটাতে এই দ্বীপের জুড়ি নেই। নবদম্পতির কাছে ঘুরতে যাওয়ার প্রথম পছন্দ এই বোরা বোরা দ্বীপ। পাখির চোখে দেখলেও দ্বীপটি মুক্তার মালার মতোই সুন্দর লাগে।

দ্বীপে থাকার জন্য গড়ে উঠেছে মনোরম রিসোর্ট। নবদম্পতির কাছে এই দ্বীপটি আকর্ষণের আরকেটি কারণ এর বিলাসবহুল রিসোর্ট। কারণ রিসোর্টগুলো পানির উপর গড়ে উঠা একেকটি আলাদা আলাদা বাংলোর মতো।

প্রত্যেকটি বাংলো এমনভাবে তৈরি যখন খুশি টইটুম্বুর জলে লাফ দিতে পারবেন আবার যখন খুশি উঠতে পারবেন। দ্বীপটি এতোটাই সুন্দর যে এখানে আসলে ভুলে যেতে বাধ্য বাড়তি চিন্তা। শুধু বিস্ময়ের অনুভূতি নিয়ে কেটে যাবে পুরো সময়।

আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশ কোনটি?

এ যেন পৃথিবীর বুকে সত্যিকারের একটি স্বর্গ। প্রশান্ত মহাসাগরের হাজারও রকমের নাম অজানা মাছ ঘুরে বেড়ায় দ্বীপের চারপাশ জুড়ে। রংবেরঙের এই মাছ দেখে অনেকে ক্যামেরাবন্দি করেন ছবি।

হাঙর মাছও ঘুরে বেড়ায়। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এই জাতের হাঙর ক্ষতি করে না। চাইলে তাদের খাবার খাওয়াতে পারবেন।

১২ বর্গমাইল আয়তনের এই দ্বীপকে অতীতে তাহিতিয়ান উপভাষায় ‘পোরা পোরা মেই তে পোরা’ বলা হতো। যার অর্থ ‘সৃষ্টিকর্তা দ্বারা সৃষ্ট’। পর্যটক জেকব রোগেনভেন যখন প্রথম এই দ্বীপে আসেন তখন একে তিনি ও তার সহযাত্রীরা বোরা বোরা দ্বীপ বলে ডাকেন। তারপর থেকে এই নাম এখনো বিদ্যমান।

আরও পড়ুন: কোন দেশে কয়টি ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ আছে?

২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র দ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিল। তবে ১৯৪৬ সালের ২ জুন ঘাঁটিটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে তখনো থেকে যায় সে সময় ব্যবহৃত অনেক যুদ্ধাস্ত্র। সেগুলো দেখতেও প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক দ্বীপটিতে ভিড় করেন।

এই দ্বীপে আছে পেহিয়া আর ওটেমানু নামক দুটি পর্বত। টলটলে নীল জলে সাঁতার কাটতে কাটতে দুটি পর্বতের দৃশ্য পর্যটকরা দারুণ উপভোগ করে। পর্বত দুটিকে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি বলেও ডাকেন অনেকে।

আরও আছে প্রচুর পরিমাণে নারকেল গাছ যা অর্থনৈতিক ভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এই দ্বীপের আছে দুরকমের সৌন্দর্য।

দিনের বেলায় স্বচ্ছ আকাশ, সাদা তুলোর মতো মেঘ আর নীল জলরাশিতে পাবেন এক অনুভূতি। আবার বিকেলে ডুবন্ত সূর্যের সোনালী আলোয় দ্বীপের চারপাশ ঘুরে পাবেন অন্যরকম অনুভূতি।

সূত্র: এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা ও উইকিপিডিয়া

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।