একদিনেই ঘুরে আসুন মিরসরাইয়ের বোয়ালিয়া ঝরনায়

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৪:০০ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পাহাড়ি ঝরনাগুলো মধ্যে অন্যতম বোয়ালিয়া ঝরনা। একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন এই অনিন্দ্য সুন্দর ঝরনা থেকে। ব্যস্ততম ঝান্ত্রিক জীবন থেকে একটু অবসর নিয়ে যে কোনো সময় ঘুরে আসতে পারবেন।

চারদিকে সবুজ পাহাড় আর পাহাড়। সবুজের নান্দনিকতা, বিস্তীর্ণ পাহাড় ও বনাঞ্চল পরিবেষ্টিত এই বুনো ঝরনা। এখানে আছে বিমোহিত হওয়া প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় সিক্ত এখানকার জনজীবন যেমন সৌহার্দ্যপূর্ণ তেমনই প্রকৃতির মমতায় ভরপুর।

আরও পড়ুন: অপরূপ সৌন্দর্যের আরেক নাম বাওয়াছড়া

জানা গেছে, মিরসরাইয়ের বোয়ালিয়া ঝরনায় আছে ছোট-বড় অন্তত ৫টি শাখা ঝরনা ও অনিন্দ্যসুন্দর উঠান ঢাল নামে একটি পাথুরে ঢাল। তাই বর্ষা মৌসুমে আর ঘরে বসে না থেকে একটু ঘা ভেজাতে বোয়ালিয়া ঝরনায় ছুটে যাচ্ছেন পর্যটকরা।

এ ট্রেইলের মূল ঝরনায় যাওয়া অপেক্ষাকৃত অন্য ঝরনা থেকে অনেকটা সহজ। বোয়ালিয়া ঝরনার বিশেষত্ব হলো আকৃতি অদ্ভুত ধরনের। এর আকৃতি অনেকটা ব্যাঙের ছাতার মতো এবং বোয়াল মাছের মাথার মতো বিধায় হয়তো এই ঝরনার নাম হয়েছে বোয়ালিয়া।

ভারী বর্ষায় খুব মারাত্বক রূপ ধারণ করে ও এ সময়টাতেই ঝরনাটি সবচেয়ে সুন্দর। মূল ঝরনার পানি যেখানে পড়ে সেটা অনেকটা গুহা কিংবা গভীর খাদের মতো।

আরও পড়ুন: ঘুরে আসুন দেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম ‘মুনলাই’ থেকে

ভরা বর্ষায়, সাঁতরে এই ঝরনায় যেতে হয়। ঝরনার উপরে আরও ছোট ছোট ঝরনা আছে। তবে বোয়ালিয়ার উপরে যাওয়াটা খুবই বিপজ্জনক ও ভরা বর্ষায় প্রায় অসম্ভব। বোয়ালিয়া ট্রেইলের মূলত দুটি পার্ট, উত্তর পূর্ব আর দক্ষিণ পূর্ব।

দক্ষিণ পূর্বে বোয়ালিয়া যেটি খুব বেশি দূরে না। তবে উত্তর পূর্বেও ট্রেইলে বিভিন্ন নামের আরও চার-ছয়টি ছোট বড় ঝরনা আছে। বর্ষাকালে ছরায় প্রচুর পানি থাকে। এমনকি কোথাও কোথাও একেবারে বুক সমান পানি।

এই ছরায় প্রচুর বালি আর অনেক পাথরের কারণে হাঁটা অনেক কষ্টসাধ্য। তার উপর ভয়ংকর বাঁশের কঞ্চি কিংবা গাছের ঢাল। আঁকাবাঁকা এই ঝিরিপথে প্রচুর বাঁশঝাড় চোখে পড়ে। পথে ছোট ছোট ঝরনার দেখা মেলে।

আরও পড়ুন: যে দেশের পুরুষরা ‘বউ বাজার’ থেকে টাকা দিয়ে কেনেন বউ

ঝিরিপথ হয়ে ঘণ্টাখানেক হাঁটার পর উঠান ঢালের দেখা মিলবে। এ ঢালটি অসম্ভব রকমের সুন্দর। পাহাড়ের বুকে পাথরের আস্তরণ আর পানি নিচের দিকে গড়িয়ে যাচ্ছে কলকল করে, এমন সুন্দর দৃশ্য দেখলে যে কারোই মন জুড়াবে।

কথা হয় বোয়ালিয়া ঝরনায় ঘুরতে যাওয়া একদল তরুণের সঙ্গে। যাদের নেশা মিরসরাইয়ের নতুন নতুন ঝরনায় বিচরণ। তাদের একজন আইনুল কবির।

তিনি বলেন, ‘বছরের দুই ঈদ কিংবা যে কোন ছুটিতে তারা বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়ায়। বিশেষ করে এখানকার ঝরনাগুলো অসাধারণ। একে একে খৈয়াছড়া, নাপিত্তাছড়া, বাওয়াছড়া, রূপসী ঝরনায় বেড়ানো হয়েছে। এই প্রথমবার এসেছি বোয়ালিয়া ঝরনায়। এই ঝরনাও এক কথা অসাধারণ।’

আরও পড়ুন: ১০ বছরে ৫০ দেশ ভ্রমণের ইচ্ছে পারভেজের

কীভাবে যাবেন?

দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই সদরে গাড়ি থেকে নামতে হবে। এরপর মিরসরাই বাজার হয়ে পূর্ব দিকে সিএনজি যোগে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় ব্র্যাক পোল্ট্রি ফার্ম অর্থাৎ পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে নামতে হবে।

সেখান থেকে ছরা ধরে কিংবা মানুষের তৈরি পাহাড়ি পথ ধরে কিছুটা হাঁটলেই বড় ছড়া পাওয়া যাবে। সেখান থেকে উত্তরে গেলে উঠান ঢাল ও দক্ষিণ পূর্বে গেলে বোয়ালিয়া ঝরনার দেখা মিলবে।

থাকা ও খাওয়া

মিরসরাই সদরে পার্কইন রেষ্টুরেন্ট, আলিফ রেস্টুরেন্ট, বারইয়ারহাটে কাশবন ও গ্রীণপার্ক রেষ্টুরেন্ট আছে। তবে থাকা ও খাওয়ার জন্য পর্যটন স্পট থেকে ঘণ্টাখানেকের পথ চট্টগ্রাম শহরের একেখাঁন ও অলংকার মোড়ে আছে কুটুম্ববাড়ি রেস্তোরা।

এম মাঈন উদ্দিন/জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।