সন্ধ্যা থেকে জমতে শুরু করে ব্যাংককের ‘নাইট মার্কেট’

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০১ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৩

এম মাঈন উদ্দিন, থাইল্যান্ড থেকে

ভোরের সূর্য যখন উদিত হয়, তখন তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। সারারাত ব্যবসা করে দিনের বেলায় ঘুমাতে যাওয়া তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে জমতে শুরু করে ব্যাংককের নাইট মার্কেটগুলো।

মূলত রাত ৯টার পর থেকে বেশি জমে ওঠে এই মার্কেট। সারারাত জমজমাট বিকিকিনি হয়। থাইল্যান্ডে আসা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণপ্রিয় মানুষগুলো এখান থেকে তাদের সাধ্য অনুযায়ী কেনাকাটা করেন।

আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ বিনোদনের শহরে একদিন

ব্যাংককের প্লাতুনাম এলাকার নাইট মার্কেটে ঘুরে দেখা গেছে, থাই ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এখানে ব্যবসা করছে বাংলাদেশী, ভারত ও নেপালের লোকজন। তবে সবচেয়ে বেশি ভারতীয়দের দেখা গেছে। বিশেষ করে এখানকার প্রায় সব খাবারের দোকান তাদের দখলে। এখানে সব‘ বয়সী মানুষের ভিড়। কি নেই? এই মার্কেটে।

নাইট মার্কেট যখন ব্যাংককে সূর্য অস্ত যায় তখন শহরটি কেনাকাটা ও খাবারের একটি প্রাণবন্ত কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়। রাতের বাজারগুলো দেখার মতো একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে ওঠে। এখানে আছে চাটুচক উইকেন্ড মার্কেট চাতুচাক উইকেন্ড মার্কেট, যা জেজে মার্কেট নামেও পরিচিত।

এটি বিশ্বের বৃহত্তম বাজারগুলোর মধ্যে একটি। চাতুচাক মার্কেটে ১৫ হাজারটিরও বেশি স্টলসহ, আপনি এখানে প্রায় সব কিছু খুঁজে পেতে পারেন ভিনটেজ পোশাক ও হস্তনির্মিত কারুকাজ থেকে শুরু করে বিদেশি পোষা প্রাণী ও সুস্বাদু রাস্তার খাবার।

আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড ভ্রমণ: আন্দামান সাগরের দ্বীপগুলো

বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য অনন্য স্যুভেনির ও উপহারগুলো খুঁজে পাওয়ার জন্যও বাজারটি একটি দুর্দান্ত জায়গা। অনেক বিক্রেতারা বিকাল ৫টা থেকে পসরা সাজিয়ে বসে পড়েন।

এ মার্কেটগুলোতে দরদাম করে সস্তায় কেনাকাটা করা যায়। কম খরচে শপিং করার সবচেয়ে ভালো স্থান এটি। জুতা থেকে শুরু করে নেইল কাঁটার, পেইন্টিং সব ছোটখাট জিনিসই পাবেন এখানে।

ব্যাংককের জাতুজাক বা চাতুচাক উইকেন্ড মার্কেট এশিয়ার অন্যতম বড় উইকেন্ড মার্কেট। ৩৫ একরজুড়ে অবস্থিত এ বাজারে হাজার হাজার বিক্রেতা পণ্য সাজিয়ে থাকে অপেক্ষায়। থাই হস্তশিল্প, শিল্পকর্ম, পোশাক, গৃহস্থালী সামগ্রী, এমনকি পোষা প্রাণীও মিলবে এখানে।

আরও পড়ুন: প্রিয়জনকে নিয়ে থাইল্যান্ড ভ্রমণে ঘুরে দেখবেন যেসব স্পট

কথা হয় চট্টগ্রামের রাউজান থেকে আসা জানে আলমের সাথে। তিনি বলেন, আমি প্রায় ব্যবসায়ীক কাজে থাইল্যান্ড আসি। যতবারই আসি কেনাকাটার জন্য আমার পছন্দ নাইট মার্কেট। কোনো ঝামেলা নেই, সারারাত ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করা যায়। এই মার্কেটে এত বেশি সমাগম থাকে দিন না রাত তা বোঝা মুশকিল।

চারদিন আগে সিলেট থেকে স্ব-পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মাহফুজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমি আগে কয়েকবার থাইল্যান্ড এসেছি, এবার প্রথম পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে আসছি। এখন আসলাম নাইট মার্কেটে কেনাকাটার জন্য। কিছু কিনেছি, আরো কিনতে হবে। এখানে দরদাম করে কেনা যায়।

নাইট মার্কেটে প্রায় ১৫ বছর ব্যবসা করছেন ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বারাসাত এলাকার আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে নাইট মার্কেটে আমার দোকান রয়েছে। এখন আর রাতে ঘুম হয় হয়না। ঘুমাতে হয় দিনে, এটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, ভালো ব্যবসা হয় দোকানে। পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস করছি।’

আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড ভ্রমণ: ব্যাংককের নানা রং

নাইট মার্কেট বা রাত্রিকালীন বাজার নিয়ে কথা বলতেই হয়। এই বাজারগুলো শুধু সামাজিক মিলনমেলাই নয়, থাই সংস্কৃতির অন্যতম অংশও বটে। রাত্রিকালীন এসব অনেক বাজারই বর্তমানে ব্যাংককের একেকটি মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।