কাতারে গিয়ে যে ৯ কাজ করলেই গুনতে হবে জরিমানা
এবারের ফুটবল বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার আয়োজক কাতার। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাতার ও ইকুয়েডরের ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
কাতারের মোট ৮টি স্টেডিয়ামে এবার হবে খেলা। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা জড়ো হচ্ছেন কাতারে। তবে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে যারাই কাতারে যাবেন, তাদের সবাইকে মানতে হবে সে দেশের বেশ কয়েকটি নিয়ম-কানুন। না হলে সেখানে গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন।
এমনই ৯টি কাজ আছে যা করলে আপনার গুনতে হবে মোটা অংকের জরিমানা। এমনকি আইনী জটিলতারও সম্মুখীন হতে পারেন। জেনে নিন কাতারে গিয়ে যে ৯ কাজ করা নিষিদ্ধ-
সমকামিতা
কাতারে সমকামিতা বেআইনি। কোনো পাবলিক প্লেসে সমকামী আচরণ অবৈধ ওই দেশে। এ বিষয়ে সে দেশে কঠোর আইন আছে। পাবলিক প্লেসে ঘনিষ্ঠতাকে আপত্তিকর বলে গণ্য করা হয় কাতারে।
এ কারণে কাতার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, একই ঘরে সমকামীসহ অ-বিবাহিত বন্ধু বা দম্পতিরা একসঙ্গে থাকতে পারবেন না।
মদ্যপান নিষিদ্ধ
মদ পান করা ও জনসমক্ষে মাতাল হওয়াকেও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় কাতারে। অতীতে কাতারে এর জন্য অসংখ্য পর্যটকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউকে সরকারের ভ্রমণ পরামর্শের ওয়েবসাইট অনুসারে, জনসমক্ষে মদ্যপান করলে ৬ মাসের জেল অথবা সর্বোচ্চ ৩০০০ কাতারি রিয়েল জরিমানা হতে পারে।
শুধু সেখানকার লাইসেন্সপ্রাপ্ত বার ও রেস্তোরাঁ থেকেই অনুমতিসাপেক্ষে একমাত্র জায়গা যেখানে লোকেরা আইনত অ্যালকোহল কিনতে পারে, তবে এক্ষেত্রে ফটো আইডির কপি প্রদান করেই তা কেনা যাবে। সেখানে আইনি মদ্যপানের বয়স ২১ বছর।
মাদকদ্রব্য সঙ্গে রাখা
কাতারে মাদকদ্রব্যের ব্যবহারের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়। কেউ যদি মাদক পাচার, চোরাচালান বা মাদকদ্রব্য সঙ্গে রাখার কারণে ধরা পড়েন তাহলে তাদেরকে গুনতে হবে মোটা অংকের জরিমানা। এমনকি গ্রেপ্তারের পর কারাবাসও হতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের ওষুধও মাদকের মধ্যে পড়ে। সেক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের সঙ্গে এ ধরনের ওষুধ থাকলে অবশ্যই
সরকারি প্রেসক্রিপশন ও হাসপাতালের নোট বা অফিসিয়াল চিঠি আনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আপত্তিকর আচরণ
কাতারে গিয়ে লোক সমাজে অশ্লীল কথা ও গালাগালি করা বেআইনি। এ ধরনের আপত্তিজনক আচরণের কারণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় ও তাদেরকে জেলে পাঠানোও হতে পারে।
নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ফটোগ্রাফি
ধর্মীয়, সামরিক বা নির্মাণ স্থানের মতো সংবেদনশীল এলাকার চিত্রগ্রহণ ও ছবি তোলার জন্যও কাতার পুলিশ অনেক ভ্রমণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
কাতারে গোপনীয়তা আইন খুবই কঠোর। তাই কাতারে গিয়ে ভেবেচিন্তে তবেই ফটো তুলবেন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেগুলো পোস্ট করবেন।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক
পুরুষ ও নারীর মধ্যে ববাহ বহির্ভূত সম্পর্কও কাতারে অবৈধ ও অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য। এ কারণে যেতে হতে পারে জেলখানাতেও। বিবাহের বাইরে যৌনতা, বিষমকামী বা সমকামী কাতারে ফৌজদারি অপরাধ, যার কারণে অপরাধীরা গ্রেপ্তার হতে পারে বা সম্ভাব্য আদালতে মামলাও হতে পারে।
অবিবাহিত অবস্থায় গর্ভবতী হওয়া
বিবাহের নিয়মের বাইরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে গর্ভবতী হওয়ার কারণেও দণ্ড পেতে হয় কাতারে। এক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীর কারাবাস হতে পারে। এ কারণে কাতারে প্রসবপূর্ব পরীক্ষার সময় ডাক্তাররা বিয়ের প্রমাণ চান।
নির্দিষ্ট পণ্য আমদানি
কাতারে মাদক, অ্যালকোহল, পর্নোগ্রাফি, শুকরের মাংস, ধর্মীয় বই ও উপাদান আমদানি করা অবৈধ। এয়ারপোর্ট থেকেই সবার লাগেজ স্ক্যান করা হয়।
এমনকি ইলেকট্রনিক সিগারেট, তরল আমদানি, বিক্রি ও কেনাও নিষিদ্ধ। কাস্টমস কর্মকর্তারা যে কোনো উপায়ে আইটেম জব্দ বা বাজেয়াপ্ত করতে পারেন।
অনুপযুক্ত পোশাক পরা
দর্শনার্থীদের প্রকাশ্যে ও গাড়ি চালানোর সময় পরিমিত পোশাক পরতে হবে। নারীদের কাঁধ ঢেকে রাখতে হবে ও ছোট স্কার্ট পরা থেকে বিরত থাকতে হবে, এমনই নিয়ম কাতারে।
সরকারি ভবন, স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা বা শপিং মলে যাওয়ার সময় নারী-পুরুষ শর্টস বা হাতাবিহীন শার্ট পরতে পারবেন না।
শালীন পোশাক না পরার কারণে বিভিন্ন স্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হয় না সেখানে। তাই কাতারে গিয়ে এসব আইন-কানুন ও নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সবারই লক্ষ্য রাখতে হবে।
সূত্র: পোর্টসমাউথ.কো.ইউকে
জেএমএস/জেআইএম