নারীদের ‘সবচেয়ে বড় বাজারে’ কেন বিবাহিতরাই ব্যবসা করেন?
ভারতের উত্তর-পূর্বের সবচেয়ে সুন্দর রাজ্য মণিপুরে সব সময় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর পাশাপাশি সেখানকার মণিপুরি পোশাক ও হস্তশিল্পের ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে বিশ্বজুড়েই। সেখানে গেলেই দেখতে পাবেন নারীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এশিয়ার সবচেয়ে বড় বাজারের।
এই বাজারের নাম ইমা কেইথেল। মণিপুরের বিখ্যাত এই বাজারের আরেক নাম মায়েদের বাজার। সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে নারীরা এই বাজারে ব্যবসা করেন। প্রায় ৪ হাজার নারী ব্যবসায়ী এই বাজারে ব্যবসা করেন।
খাবার, হস্তশিল্পের পণ্য, গৃহস্থালীর জিনিস থেকে শুরু করে সবই মেলে এখানে। বহু বিদেশি পর্যটক শুধু এই বাজারের টানেই নাকি সেখানে বেড়াতে যানন।
সরকারিভাবে এই বাজার প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৩৯ সালে, ব্রিটিশ আমলে। তখনকার আমল থেকে এখনো চলছে বাজারটি। তবে স্থানীয়দের দাবি, এই বাজার চলছে সপ্তদশ শতক থেকেই। ইম্ফলের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থল। রাষ্ট্রের উন্নয়নে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
তবে বিবাহিতরাই কেন এই বাজারে শুধু ব্যবসা করেন? এই প্রথা নাকি চলছে বছরের পর বছর ধরে। এর কারণ হলো, বিবাহিত নারীরা তাদের ব্যবসার জন্য সংঘের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিতে পারেন সহজেই। যেহেতু এই টাকা পরে ফেরত দিতে হয়, তাই নিরাপত্তার খাতিরে বিবাহিতরাই এর সুযোগ পান।
সরকারিভাবে ১৯৩৯ সালে বাজার প্রতিষ্ঠিত হলেও বাজারের প্রকৃত বয়স ৫০০ পেরিয়েছে। প্রতিদিন হাজারো ক্রেতা এখানে ভিড় জমান। এই বাজারের একেক স্থানে একেক ধরনের সামগ্রী পাওয়া যায়। কোথাও ফল, শাক-সবজির মেলে কোথাও আবার মেলে হস্তশিল্পের নানা জিনিস।
আরও আছে কাঁচা মাছ, শুঁটকি মাছ বিক্রির ভিন্ন স্থান। এছাড়া কোথাও শুধু প্রসাধনী আবার কোথাও মেলে শুধুই জামাকাপড়। বিভিন্ন ভেষজ ওষুধও মেলে এই বাজারে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো এই বাজারের সব জিনিসপত্রের দামই হাতের নাগালে।
মণিপুরে গেলে এছাড়া আরও কয়েকটি বাজারেও ঢুঁ মারতে পারেন-
পাওনা বাজার
ইম্ফলের আরেকটি বাজার হলো পাওনা বাজার। পাওনা বাজারের অলিগলিতে পেয়ে যাবেন হাতে বোনা শাল, সিল্কের শাড়ি, বাঁশ ও হাতির দাঁতের জিনিসের মতো সুন্দর জিনিসপত্র।
নাগমপাল মার্কেট
এই বাজার জুতা, সবজি থেকে শুরু করে নানা ধরনের কাপড়ের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া বাজারে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁও আছে।
তেরা বাজার
মণিপুরের তেরা বাজার হ্যান্ডলুমের জন্য খুবই বিখ্যাত। এই পণ্যগুলো মণিপুরের ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র করে। রবিবার ও অন্যান্য ছুটির দিনে এখানে প্রচুর ভিড় থাকে।
সূত্র: ইন্ডিয়া ন্যারেটিভ/আউটলুক ইন্ডিয়া
জেএমএস/এএসএম