‘বালি’ ভ্রমণে ঘুরে আসতে ভুলবেন না অসাধারণ ৮ স্পটে

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২২

সাইফুর রহমান তুহিন

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর বিশ্বের লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করেন এই দ্বীপে। সেখানে মানুষের এতো বেশি ভিড় হয় যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।

বালি ভ্রমণে যাওয়া অনেকের কাছেই হয়তো স্বপ্নের। যারা এরই মধ্যে বালি ভ্রমণে যাচ্ছেন কিংবা যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তারা সেখানকার ৮ স্পট ঘুরে আসতে ভুলবেন না।

নুসা লেম্বনগান

নজরকাড়া নুসা লেম্বনগান দ্বীপে পৌঁছানোর একমাত্র মাধ্যম হলো বোট। নুসা লেম্বনগান তেমন পরিচিতি নয়, আবার সেখানে তেমন ভিড়ও হয় না।

যারা নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চান তাদের জন্য উপযুক্ত স্থান এটি। এই দ্বীপে কোনো কারের দেখা পাবেন না। শুধু মোটর সাইকেল ও ছোট ট্রাকের দেখা মিলবে। হাঁটাহাঁটির জন্য দারুণ এক জায়গা নুসা লেম্বনগান।

কাওয়াহ ইজেন

বালি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত কাওয়াহ ইজেন অথবা মাউন্ট ইজেন মুগ্ধ করবে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের। চমৎকার হাইকিং ও ট্রেইল আছে কাওয়াহ ইজেনে, তবে এটিই সেখানকার সবচেয়ে উপভোগ্য জিনিস নয়।

সেখানকার যে সৌন্দর্য আপনাকে সবচেয়ে অভিভূত করবে তা হলো পর্বতের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নীল আগুন। রাতে এর সৌন্দর্য অভূতপূর্ব।

এর কাছেই আছে নীলাভ সবুজ পানির একটি দৃষ্টিনন্দন লেক। এপ্রিল থেকে অক্টোবরই হলো এই স্থানে বেড়ানোর সেরা সময়।

পুরা পালুয়াং, নুসা পেনিডা দ্বীপ

নুসা পেনিডা দারুণ এক স্থান। সেখানকার সাদা বালির সব সৈকতসমূহ বেশ বিখ্যাত। তবে শুধু সৈকতই দ্বীপটির একমাত্র আকর্ষণ নয়। সেখানে গেলে দেখা যাবে বালি দ্বীপের ব্যতিক্রমী কিছু মন্দিরও। পুরা পালুয়াং অর্থ হলো গাড়ি মন্দির, যার অবস্থান বনের ভেতরে।

এই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ হলো দুটি স্মৃতিস্তম্ভ যা দেখতে গাড়ির মতো। সেখানকার স্থানীয়দেরও জানা নেয় কবে ও কীভাবে এই মন্দিরের উৎপত্তি ঘটেছে। তবে অনেকেরই ধারণা, বালি দ্বীপে গাড়ি আসার আগ থেকেই মন্দিরের অস্তিত্ব আছে।

আন্ডারওয়াটার পেমুটেরান টেম্পল গার্ডেন

স্কুবা ডাইভিং পছন্দ করেন যারা তাদের জন্য সেরা এক স্থান হলো আন্ডারওয়াটার টেম্পল গার্ডেন। পানির নিচের নির্মিত এই টেম্পল গার্ডেনে আছে নজরকাড়া অনেক মূর্তি।

পানির নিচের সৌন্দর্য অবলোকন করতে বালি গিয়ে ঘুরে আসতে ভুলবেন না বিস্ময়কর এই স্থান থেকে। সেখানে দেখতে পাবেন, পানির নিচের মন্দির কীভাবে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণিকে সুরক্ষা দিচ্ছে।

মাংকি ফরেস্ট উবুদ

মাংকি ফরেস্ট উবুদ একটি সংযুক্ত ওয়াইল্ডলাইফ পার্ক। অনেকগুলো প্রাচীন মন্দিরের কাছে অবস্থিত মাংকি ফরেস্ট একটি পবিত্র বন। এই বনের নামকরণের পেছনের কারণ হলো লম্বা লেজবিশিষ্ট ম্যাকাক প্রজাতির বানর বিপুল পরিমাণে আছে এখানে।

এরা হয়তো আপনাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করবে, আপনি শান্ত থাকলে স্বাগতমও জানাবে। এই ফরেস্ট কমপ্লেক্সটি আলাদা আলাদা এলাকায় ভাগ করা। সেখানে যেতে হবে সঠিক পোশাক পরে, বানরকে কোনো খাবারও দেওয়া যাবে না।

টার্টল কনজারভেশন অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টার

টার্টল কনজারভেশন অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টার হলো একটি কচ্ছপ অভয়াশ্রম যেখানে আপনি কচ্ছপের অভিভাবক হতে পারবেন। আবার সেখান থেকে আপনি কচ্ছপ দত্তকও নিতে পারবেন অভয়াশ্রমের সার্বিক ব্যয় নির্বাহের জন্য কিছু অর্থ দান করে।

যখন আপনার কচ্ছপটি যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে যাবে ও নিজে নিজে সাগরে যেতে পারবে তখন এটিকে অবমুক্ত করতে হবে। আপনার বালি ভ্রমণ অর্থপূর্ণ ও স্মরণীয় করে রাখার একটি নিরব মাধ্যম হলো এটি।

পেংলিপুরান গ্রাম

বালির বাংলি রিজেন্সিতে অবস্থিত পেংলিপুরান গ্রাম হলো এমন একটি গন্তব্য যার নাম আপনার সফরসূচিতে অবশ্যই থাকা উচিত। এখানে সব ঘরবাড়িই বাঁশের তৈরি। আর এ কারণেই পরিবেশবান্ধব পেংলিপুরান গ্রাম বিশ্বের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রামগুলোর একটি।

এ গ্রামের অধিবাসীরা সঠিকভাবে গৃহস্থালির বর্জ্য অপসারণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিশ্বাস করে। গ্রামটিতে একরাত থাকতে পারলে তা আপনার জন্য বিশেষ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তামান ফেস্টিভ্যাল বালি

সানুর বালিতে অবস্থিত ‘তামান ফেস্টিভ্যাল বালি’ একটি পরিত্যক্ত থিম পার্ক। অনেকে এই স্থানকে ভয়ংকর বলেও জানেন এই বিনোদন পার্কের নির্মাতা তামানকে নিয়ে বিশাল পরিকল্পনা করেছিলেন।

তবে সেই পার্ক কখনো উদ্বোধন করা হয়নি। তামান ফেস্টিভ্যাল বালি একটি ভিন্ন ধাঁচের ভ্রমণ গন্তব্য যা নিরবে দাঁড়িয়ে আছে অসম্পূর্ণ অবস্থায়। তবে শুরু থেকেই এটি পর্যটকদেরকে চমক দিয়ে আসছে।

লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ভ্রমণ লেখক।

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।